পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९०४ 'ബ് গুপীদাস গম্ভীরভাবে মাথ নাড়িয় নীড়িয় বলিল— তা হলে ব্যাপারটা অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছে দেখছি! মেয়েটার আস্পদ দেখেছিস্ ! আমরা কোন রকমে ওকে জাতে তুলে নিইছি—আর ও কিন৷ ঐ একঘরে পঞ্জী লোকটার সঙ্গে সঙ্গে ফিরছে ! দাড়াও ;–এর একটা কিছু হেস্ত-নেস্ত না করি ত—কোন বাপের ব্যাট - যতনচন্দ্র আপনমনে কি যেন সব ভাবিতেছিল—সহস। সে যেন কুল পাইয়া চীংকার করিয়া উঠিল, বলিল—হঁ্য দেখো, ও সব সিমী-ফিনী আর নয় - ওতে কিছুই হবে না। এবার এমন একটা কিছু করতে হ’বে—যা”তে এক ঢিলে দুই পার্থী মরে—বুঝলে হে ; তোমরা আস’ অীর না-ই আস’-—আমি একাই ও দু’টোকে জব্দ করতে পারি। *... নিধিরাম আপনার তালে ছিল, বলিল—আরও জানে না বুঝি ! মতে তা’র ছেলেটাকে নিয়ে ঐ হিরণের বাড়ী এসে দু’বেলাই থেয়ে যায় ! তারপর হিরণ গিয়ে ওর বাড়ীঘরদোর তরী-তদারক করে। আর ছেলেট। হিরণের কাছে থাকে বল্লেই হয়— যতনচন্দ্র লাফাইয়া উঠিল - ‘ব্যাস্-আবার কি চাই —একেবারে হাতে হাতে প্রমাণ ! এবার আর মন্ত্রণাটন্ত্রণা নয় গে—আসল কাজ কিছু করা দরকার! বুঝলে!’ শেষ কথাটির উপর সে এমন জোর দিল যে, গুপীদাস প্রভৃতি অবাক হইয় তাহার মুখের দিকে তাকাইয়া রহিল ! যতনচন্দ্র তাহ লক্ষ্য করিয়া বলিল—অবাক হয়ে দেখছ কি, এমন একটা কিছু করে— গুপীদাস লোকটি স্থূলকায়। অতি শীঘ্র তাহার শরীর ঘামিয়া উঠে—দেখিলে মনে হয় যেন সে এইমাত্র স্বান করিয়া উঠিল - ভ্ৰ কুঁচকাইয়া হাপাইতে হাপাইতে বলিল— সমাজের বুকের উপর বসে এই সব কীৰ্ত্তি—এ কিছুতেই হতে দেব না—দেব না-দেব না ! সন্ধ্যা হয় হর । তখনো তfহাদের মন্ত্রণ শেষ হইল না। অনেক ছিলিম তামাকের শ্রাদ্ধ করিয়া রাত্রি প্রায় এক প্রহরের সময় তাহারা সভা ভঙ্গ করিল। هیچیبا همیه ছোট গ্রামখানির উপর দিয়া নববর্ধার অবিরল জলধারার প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, >૭૭૧ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড আর বিরাম নাই। দীর্ঘদিনের অবদর-অলস চাষীর দল যেন হঠাৎ সজাগ সচকিত হইয়া আপন আপন চাষের কাঞ্জে মন দিয়াছে। মতিচরণ মাথালি মাথায় দিয়া জমি নিড়াইয়া দিতেছিল। ছোট ছেলেটিও মাথালি মাথায় দিয়া একখানি ছোট্ট নিড়ানি লইয়া পিতার অমুকরণ করার চেষ্টায় ছিল। পূবালি হাওয়া তীরবেগে মাঠের একপ্রাস্ত হইতে অপর প্রান্ত পৰ্য্যন্ত বহিয়। যাইতেছিল। সেই হাওয়ার ভরে নৌকার বড় বড় কালো পালের মতো এক একখণ্ড কালে মেঘ মন্থর গতিতে মাটির কাছাকাছি নামিয়া আসে-দমকা হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অবিশ্রাম বর্ষণে পিগদিগন্ত মুখরিত করিয়া নবোদগত ধানের অঙ্কুরগুলিকে যেন প্রাণ-দান করিয়া আবার উত্তরের দিকে ভাসিয়া যায়। মতিচরণ এত বৃষ্টিতেও নড়ে না—এ যেন তাহার কঠোর তপস্যা-এক একখানি জমির একপ্রাস্ত হইতে নিড়াইতে আরম্ভ করে, শেষ না হইলে উঠে না । জমির পিছন দিকে একটি ঘন-পল্লব নিমগাছের তলে হিরণ তাহাদের দুইজনের খাবার লইয়া আসিয় দাড়াইল । বৃষ্টিতে তাহার সর্বাঙ্গ ভিজিয়া গিয়াছে—আর্দ্র কালে চুল বহিয়া বৃষ্টিধার মাটিতে গড়াইয় পড়িতেছে । যে টোকাটি সে মাথার উপরে বৃষ্টি নিবারণের জন্য দিয়াছিল – প্রবল বৃষ্টিতে তাহাতে কিছুই হয় নাই। সেটি সে মাটিতে খাবার ঢাকিবার জন্ত রাখিয়া দিয়াছে। ছেলেটির নাম ধবিয়া বারকয়েক ডাকিতেই সে নিড়ানি ফেলিয়া ছুটিয়া আসিল । মতিচরণও কাজ ফেলিয়া আসিয়া থাইতে খাইতে বলিল—এত বৃষ্টিতে তোমার আধার কি দরকার ছিল ; কাজ শেষ করে খেতে যেতাম । হিরণ হাসিয়া বলিল—তোমার কাজ ত শেষ হ’বে সেই সন্ধ্যাবেলায় ! * মতিচরণ বলিল—আর সন্ধে হ'লেই বা কি করছি – তা বেশ করেছ-ভাতের থাল আগলে আর কেই বা বসে १८द् ॥ হিরণ যেন তাহার কথা শুনিতে পায় নাই - এমনিভাবে বলিল নাও নাও শীগগিরি খেয়ে নাও–আবার মেঘ করে আসছে—এখুনি বৃষ্টি নামূবে। —কত বৃষ্টি কোন দিকে গেল, এখনও অনেক কাজ