পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] SAASAASAASAASAAAS A SAS SSAS SSAS SSASAMAMMASAMASAMA AMAMAAAS শেষ করিয়া একবার জীবনের সত্যকার পরীক্ষার মধ্যে আত্মসমপণ করিবে—এই রকম ইচ্ছাই তাহার ছিল । ইতিমধ্যে মাধবচন্দ্র পুত্রের বিবাহ দিবার আয়োজন করিতেছিলেন । নীরদ এ সম্বন্ধে কিছু জানিত না । নীরদকে তাহার বাঞ্ছিত জ্ঞানচর্চার মধ্যে রাখার ব্যবস্থাই তিনি করিয়াছিলেন—ইহার মধ্যে অনেকবার সে গ্রামে আসিবার চেষ্টা করিয়াছিল। কিন্তু মাধবচন্দ্র তীব্রভাবে তাহার প্রতিবাদ করিয়া পুত্রকে চিঠি দিয়াছিলেন। বাহিরের পরীক্ষা প্রায় শেষ হইয়াছে, তাই সে বহুকাল পরে গ্রামে ফিরিবার অল্পমতি চাহিয়৷ পিতাকে পত্র দিল । পিতার অল্পমতি লইয়া আজ সে গ্রামে ফিরিতেছে। রাস্তায় আসিতে আসিতে সে দেখিল, ইহারই মধ্যে কত পরিবর্তন হইয়া গিয়াছে— যেখানে ফাক মাঠ ছিল, সেখানে জঙ্গল হইয়া মাঠকে ঢাকিয় ফেলিয়াছে । সে ভাবিল, হয়ত মানুষগুলির ও বিস্তর পরিবর্তন ঘটিয়াছে। এমনি আশা আকাঙ্ক্ষণআন্দোলিত চিত্তে সে ষ্টেশন হইতে সমস্ত পথ হাটিয়া আসিয়া বাড়ীতে প্রবেশ করিল । বাহির বাড়ীতে আসিয়া দেখিল, মাধবচন্দ্র অত্যস্ত গম্ভীর মুখে একখানি চৌকীতে বসিয়া আছেন । পিতাকে প্রণাম করিয়া উঠিয়৷ দাড়াইতেই মাধবচন্দ্র তাহাকে আশীৰ্ব্বাদ করিলেন । তাহার পর বলিলেন—যাও বাড়ীর মধ্যে গিয়ে বিশ্রাম কর। বাড়ীর মধ্যে গিয়া নীরদ কিছুক্ষণ তাহার ঘরে বিশ্রাম করিল। উত্তরের জানালাটি খুলিয়া দিয়া বাহিরের দিকে বহুক্ষণ শূন্তমনে চাহিয়া রহিল। তখন প্রায় রাত্রি হইয়া আসিয়াছে । নারিকেল পাতাগুলির মধ্যে ক্রমাগত একটা শির শির মির মির শব্দ উঠিতেছিল। সেই নিস্তব্ধ প্রশাস্তির মধ্যে পথের শ্রান্তিতে নীরদ একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন হইল । গভীর তন্দ্র আসিলে হয় ত নীরদ কিছুই শুনিতে পাইত না। কিন্তু সেই অনাহত বৃক্ষপত্রের মর্শ্বরধ্বনিকে আহত করিয়া বহুদূ হইতে একটি করুণ আৰ্ত্তনাদের ক্ষীণ ধ্বনি নীরদের কানে ভাসিয়া আসিল । কে যেন করুণ কণ্ঠে কাহার কাছে মিনতি জানাইতেছে—ধ্বনি ক্রমশঃ স্পষ্ট হইতে স্পষ্টতর হইতে মরুচারিণী R>> লাগিল। নীরদের তন্দ্র টুটিয়া গেল। সে সজাগ হইয়া জানালার কাছে উঠিয়া আসিল । ধ্বনি আরও স্পষ্ট—আরও করুণ সহসা 'রক্ষা করে, ‘রক্ষা করে—মলাম—মলাম P–চীৎকারের সঙ্গে সঙ্গে নারীকণ্ঠের মৰ্ম্মভেদী উচ্চক্ৰন্দনধ্বনি ঘনপল্লব বৃক্ষপ্রাচীর, ঘনবসতি গ্রাম—সকলই অতিক্রম করিয়া নীরদকে আকুল করিয়া তুলিল । নীরদ আর অপেক্ষা করিতে পারিল না—নীচে নামিয়া আসিয়া বাহির বাড়ীতে মাপবচন্দ্রের কাছে আসিয়া দাড়াইল— বাবা, খুব কাদছে কে, শুনতে পেয়েছেন ? মাধবচন্দ্র ধীরভাবে বলিলেন—হ্য শুনেছি—বহুদিন বহুকাল থেকে এ রকম শুনে আসছি ; শুনে শুনে কান প্রায় কাল হ’য়ে গেছে বাবা । আর শুনতে পাই নে ! নীরদ অত্যন্ত বিস্মিত হইয়। পিতার দিকে চাহিয়। রহিল। মাধব আবার বলিলেন—“কি আর দেখছ বাব ! বাড়ী যাও— ওখানে আর যেয়ে না ’ নীরদ মাধবচন্দ্রের চোখের কোণে অশ্রু দেখিতে পাইল। আবার সেই আকুল আৰ্ত্তনাদ । পিতার কথাবাৰ্ত্তার ভাবে ভঙ্গীতে এবং সেই আৰ্ত্তনাদের করুণ সুরে নীরদ বিচলিত হইয়৷ উঠিল । তাহার মাথার মধ্যে কি যেন সব অস্থিরতার বীজ ব্যাকুল হইয়৷ ছুটাছুটি করিতে লাগিল। সে তার স্থির থাকিতে পারিল না। পায়ের জুতা খুলিয়। ফেলিয়া ক্টোচাট কোমরে গু জিয় লইয়। সে ছুটিয়া পথে বাহির হইয় পড়িল । নীরদ বোধ হয় এই প্রথম পিতার কথার অবাধ্য হইল । - ছুটিতে ছুটিতে নীরদ যেখানে আসিল, সেখানে দেখিল, নিশ্চল আগাছার মতো একদল ছোট-বড় মানুষ ভিড় করিয়া দাড়াইয়া আছে । ভিতর হইতে পুরুষকণ্ঠের বিপুল তর্জন-গর্জন শুনা যাইতেছে। তারপরেই প্ৰহারের ধ্বনি ও সঙ্গে সঙ্গে সেই করুণ বিলাপ ! নীরদকে ছুটিয়া আসিতে দেখিয়াই আগাছার দল সরিয়া দাড়াইল । নীরদ নিঃশব্দে ভিতরে আসিয়া দাড়াইল ; নিদারুণ বজ্রপতনের শব্দে লোক যেমন করিয়া চমকিয় উঠে নীরদকে দেখিয়া কাছারীর কৰ্ম্মচারী হইতে পাইক পৰ্য্যস্ত