পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গালীর অন্নসমস্য; শ্ৰযতীন্দ্রমোহন সিংহ এখন বাঙ্গালী জাতির অন্নসমস্তাই প্রধান সমস্ত। কি মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক, কি কৃষক, কি শ্রমজীবী সকলেরই এখন অন্নসঙ্কট উপস্থিত। বাঙ্গালীকে বাচিয়া থাকিতে হইলে এই অন্নসমস্যার মীমাংসা করিতে হইবে। বঙ্গ দেশের প্রায় শতকরা আশী জন লোক কৃষিজীবী ; তাহারা পল্লীগ্রামে বাস করে । বাকী বিশ জনের মধ্যে প্রায় অৰ্দ্ধাংশ জমির উপস্বত্ব ভোগ অথবা চাকুরী করিয়া জীবিকা নির্বাহ করে । অবশিষ্ট সকলে ব্যবসায় বাণিজ্যাদি দ্বারা প্রতিপালিত হয়। এই বিশ জনেরও অৰ্দ্ধেক পল্লীগ্রামে বাস করে। প্রথমতঃ, কৃষকশ্রেণীর অবস্থা আলোচনা করা যাইতেছে। প্রায় বিশ বৎসর পূৰ্ব্বে ফরিদপুর জেলায় sfạo (cadastral survey) șēgtfg7 i Giữ*[RÈঅফিসার জ্যাক সাহেব জরিপ শেষ হইলে এই জেলার লোকের আর্থিক অবস্থা (economic condi tion) সম্বন্ধে একখানা পুস্তক লিথিয়াছিলেন। তাহাতে এই জেলার সর্বশ্রেণীর লোকের অবস্থা সম্বন্ধে অনেক তথ্য জানা যায় । আমার বোধ হয় কৃষিপ্রধান ফরিদপুর জেলার যেরূপ অবস্থা, বাঙ্গলার অধিকাংশ জেলারই সেইরূপ অবস্থা, সামান্য কিছু ইতর বিশেষ থাকিতে পারে। জ্যাক্ সাহেবের রিপোট বিশ বৎসর পূৰ্ব্বে লেখা হইয়াছিল, তাহার পর কোন কোন বিষয়ে পরিবর্তন ঘটিয়াছে, আমরা যথাস্থানে তাহার উল্লেখ করিব । কৃষকের আয়ব্যয় জ্যাক সাহেব বলেন, ফরিদপুর জেলার একশটি কৃষক পরিবারের মধ্যে মাত্র পয়ত্রিশটি পরিবার কেবল জমির উৎপন্ন হইতে বাচিতে পারে, পচিশটি পরিবারকে জমির আয়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্য উপায়ে অর্থ উপার্জন করিতে وېAســـــــــbyچ হয়, বাকী চল্লিশটি পরিবারকে সারাবছর ধান কিনিয়া খাইতে হয় । ভদ্র পরিবারের মধ্যে অৰ্দ্ধেক লোকের জমিজম আছে, সিকি লোক চাকরী দ্বারা, অবশিষ্ট সিকি লোক ব্যবসা বাণিজ্য, ওকালতি, মোক্তারি, ডাক্তারি তেজারতি প্রভৃতি উপায়ে জীবিকানিৰ্ব্বাহ করে। শতকরা আটজন লোক শিল্পকাৰ্য্য ( তাত বোন ইত্যাদি ) দ্বারা অর্থ উপার্জন করে । - - যাহার কৃষিকাৰ্য্য করে তাহদের একটি পরিবারের গড়পড়তা বাৰ্ষিক আয় ২৮০ টাকা, যাহার কৃষিকাৰ্য্য করে না তাহাদের একটি পরিবারের গড়পড়তা বার্ষিক আয় ২৯৩২ টাকা এবং এই উভয় শ্রেণীর গড়পড়তা বার্ষিক আয় ২৮২ টাকা । প্রতি পরিবারের গড়ে পাচজন লোক সচরাচর ধরা হইয়া থাকে—একটি বয়স্ক পুরুষ দুইটি স্ত্রীলোক, দুইটি বালকবালিকা ; তাহা হইলে প্রতিজনের গড়ে বাংসরিক আয় ৫৬২ টাকা, প্রতি মাসে ৪ly৮ পাই । এই পাচটি লোকের প্রত্যেকে গড়ে মাসে ২৭০ সের চাউল খায়, স্বতরাং এই পাচ জনের মাসে ৩৭॥০ সের চাউলের প্রয়োজন। যে সময়ে এই রিপোর্ট লেখা হইয়াছিল, তখন চাউলের দাম পল্লীগ্রামে ৫২ টাকা মণ ছিল, এখন ৭০ টাকা হইয়াছে। সেই সময়ের দর ধরিলে, উক্ত পরিবারের তখন বৎসরে ২০৬০ আনার চাউল কিনিতে হইত। কিন্তু কেবল চাউল খাইয়া কেহ বাচিতে পারে না, তাহার সঙ্গে ডাল, তরকারি, মাছ, তেল, কুন, মশলা ইত্যাদিও চাই। এতদ্ভিন্ন এই পাচটি পরিধেয় বস্ত্র ও শীতবস্ত্র কিনিতে হয়। আবার জমির খাজনা ট্যাক্স ইত্যাদিও আছে। স্বতরাং একটি লোকের পরিবারের বাৎসরিক আয় গড়ে ২৮২ টাকা হইলে তখনকার দিনেও ইহাতে কোন রকমে সংসার চলিতে