পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা বাঙ্গালীর অন্নসমস্যা । २२S কোটা টাকা রোজগার করে, অবশু সে ১৫ বৎসর পূৰ্ব্বেকার কথা। তখন সাধারণতঃ পাটের দাম ৫।৬ টাকা ছিল । তাহার পরে যুদ্ধের সময় পাটের দর হঠাৎ কমিয়া গিয়া মণ ২৩ পর্য্যস্ত নামিয়াছিল পরে ক্রমশঃ বৃদ্ধি হইয়া ৩ বৎসর পূর্বে অত্যন্ত বাড়িয়া ২০২৫২ টাকা পৰ্য্যস্ত উঠিয়াছিল। কিন্তু সে কেবল এক বৎসরের জন্য। গত ৩ বৎসরে আবার ৮২৷১০২ টাকা দাড়াইয়াছে, এখন #xf:-# normal price <=Tl q# ! c# RU3ĩ *fiữ বিক্রয় করিয়া ফরিদপুরের কৃষকেরা এখন বৎসরে প্রায় ১৮ কোটী টাকা পাইতেছে । বিদেশ হইতে বৎসরে এতগুলি টাকা পাওয়া কেবল এক পাটচাষের দ্বারাই সম্ভব হইয়াছে। সুতরাং পাটের চাষ তুলিয়া দেওয়ার জন্ত হাজার আন্দোলন করিলেও লোকে তাহাতে কর্ণপাত করিবে না, আর সেরকম আন্দোলন সমীচীনও নহে । কারণ কেবল এক ধান-চাষের উপর নির্ভর করিলে কৃষকের কিছুতেই চলিতে পারে না। কেবল কৃষক বলিয়া নহে, অন্যান্য শ্রেণীরও চলিতে পারে না । আর বৎসর বৎসর এতগুলি টাকা বিদেশ হইতে যখন আসিতেছে তাহ বন্ধ করিতে চেষ্টা করা নিৰ্বদ্ধিতার পরিচায়ক। আমর সৰ্ব্বদা বলিয়৷ থাকি বিদেশী বণিকের নানা প্রকার পণ্যদ্রব্য আমদানি করিয়া আমাদের টাকা লুটিয়া লইতেছে, কেবল একমাত্র পাটের দ্বারাই আমরা তাহার কথঞ্চিৎ ক্ষতিপূরণ করিতেছি। তবে এক কথা এই, বিদেশী পাট খরিদারদিগের ষড়যন্ত্রে কৃষকেরা তাহাদের উৎপন্ন পাটের সমুচিত মূল্য অনেক সময় পায় না । তাহার প্রতিবিধানের জন্য কৃষকদিগের পাট বিক্রয়ের সমবায় গঠন করা কৰ্ত্তব্য । জ্যাক্ সাহেবের সময়ে এক একর অর্থাৎ ৩ বিধা জমিতে ৭৫ টাকা মূল্যের পাট হইত এবং সেই জমিতে পাট না বুনিয়া ধান বুনিলে ৩৭০ টাকা মূল্যের ধান হইত। এক বিঘায় গড়ে ৫ মণ পাট হইলে তাহার বৰ্ত্তমান মূল্য ৫০২ টাকা, ও ৬ মণ ধান হইলে তাহার বৰ্ত্তমান মূল্য ২৫ টাকা । ধান ও পাটের চাষে এতটা अंडन । আর পাট চার পাচ মাসের ফসল, ধান ছয় সাত মাসের ফসল। ধান আবাদে অনাবৃষ্টি, অত্যন্ত বর্ষ, প্রভৃতি যে সকল বিপদ আছে, পাটের আবাদে তাহ নাই । স্বতরাং নানা কারণে পাটের চাষই কৃষকদিগের অধিকতর লাভজনক । একজন কৃষকের যদি ১০ বিঘা জমি থাকে, আর তাহার ৫ বিঘাতে ধান ও ৫ বিঘাতে পাট উৎপাদন করে, তবে ফসল নষ্ট না হইলে সে পাট বিক্রয় । করিয়া ২৫০ টাকা ও ধান বিক্রয় করিয়া ১৫০২ টাক, মোট ৪০০ টাকা উপার্জন করিতে পারে। কৃষক নিজহাতে চাষের সমস্ত কাজ করিলে এই আয় হইবে, কিন্তু একজন ভদ্রলোক যদি মজুরের দ্বারা সমস্ত কাজ করান, তবে তাহার কৃষাণ খরচ দিয়া বৎসরে ১৫০৷২০০২ টাক লাভ দাড়াইবে কিনা সন্দেহ । এইজন্য র্যাহারা লাঙ্গল খামার করিয়া শ্রমিকের সাহায্যে জমি চাষ করান তাহাদের মোটের উপর বেশী লাভ দেখা যায় না, বিশেষতঃ ফসলের মূল্য যখন কম হয়। আমরা এইরূপে কৃষক, মজুর, মধ্যবিত্ত লোক, ব্যবসাদার, চাকুরিজীবী প্রভৃতি সৰ্ব্বশ্রেণীর আয়ব্যয়ের to rapid survey of Il cofoto of বলিয়াছি ফরিদপুর জেলার যে অবস্থা, বঙ্গের সকল জেলায়ই প্রায় সেই অবস্থা। কারণ ধান্যাদির বাজার সৰ্ব্বত্রই একরূপ দাড়াইয়াছে এবং লোকের আয়ের পরিমাণও বাড়িতেছে না। বাঙ্গাল দেশের প্রায় অৰ্দ্ধেক পরিবারের বার্ষিক আয় গড়ে ৩৬৫২ টাকা, এবং তাহদের সচ্ছলভাবে চলে, বাকী অৰ্দ্ধেক পরিবারের মধ্যে কাহারও অসচ্ছলভাবে, কাহারও কষ্টে এবং কাহারও অতিকষ্টে দিন যাপন করিতে হয় । এখন ইহার প্রতিকারের উপায় কি ? কৃষকশ্রেণীর বিষয়ই আগে চিন্তা করা যাক। যে কৃষকের ১০ বিঘা চাষের জমি আছে, তাহার ধানে ও পাটে বৎসরে প্রায় ৪০০ টাকা আয় হয়। একটি ভদ্র পরিবার পল্লীগ্রামে বাস করিলে, এই আয়ে তাহার দেন না হইয়া সচ্ছলভাবেই চলিতে পারে। আজকালকার বাজারে একজন ভদ্রসন্তান বি-এ পাশ করিয়াও বৎসরে ৪০০ টাকা রোজগার করিতে পারে না। কিন্তু কৃষকদিগের ঋণ হয় কেন ? তাহার কারণ,