পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] অপুর পড়াশুনার কোনো বাধাবাধি রীতি নাই। যখন যাহা ভাল লাগে, কখনো ইতিহাস, কখনো নাটক, কখনো কবিতা, কখনও প্রবন্ধ, কখনও বিজ্ঞান। প্রণব নিজে অত্যস্ত সংযমী ও শৃঙ্খলাপ্রিয়—সে বলিল-ওতে কিছু হবে না, ওরকম পড় কেন ? অপু চেষ্টা করিয়াও পড়াশুনায় শৃঙ্খল আনিতে পারিল না । 醇 লাইব্রেরী-ঘরের ছাদ পর্য্যন্ত উচু বড় বড় বইয়ে ভরা আলমারির দৃশ্য তাহাকে দিশাহারা করিয়া দেয়। সকল *** foll cofoo #4 off, Gases of the At mospher সার উইলিয়ম র্যামজের ? সে পড়িয়া দেখিবে fis for sistä Extinct Animals—o Co ল্যানকাষ্টার, gifoof; Roiz sizzo wio 1 Worlds Around Us, প্রক্টর ? উঃ, বইখান না পড়িলে রাত্রে ঘুম হইবে না । প্রণব হাসিয়া বলে—দূর! ও কি পড়া ? তোমার তো পড় নয়, পড়া-পড়া খেলা—হৌক খেলা, অধীর উৎসুক মনের পিপাস অপু কিছুতেই দমন করিতে পারে না প্ৰণবের তিরস্কারেও নহে । প্ৰণবের কাছেই সে সন্ধান পাইল শ্যামবাজারে এক বড়লোকের বাড়ী দরিদ্র ছাত্রদের থাইতে দেওয়া হয় । প্ৰণবের পরামর্শে সে ঠিকানা খুজিয়া সেখানে গেল । এ পর্য্যস্ত কখনও কিছু সে চায় নাই, কাহারও কাছে, চাহিতে পারে না। আত্মমৰ্য্যাদাবোধের জন্য নহে, লাজুকতা ও আনাড়ি-পণার জন্য। এতদিন সে সবের দরকারও হয় নাই কিন্তু আর যে চলে না । খুব বড়লোকের বাড়ী। দারোয়ান বলিল –কি চাই ? অপু বলিল—এই এখানে গরীব ছেলেদের খেতে স্থায়, তাই জানতে-কাকে বলবো জানো ? দারোয়ান বলিল বাবু এখনও ঘুম হইতে উঠেন নাই,ওবেলা আসিও । অপু আশ্চৰ্য্য হইল-দশটা বাজে, এখনও ঘুম হইতে উঠেন নাই বাৰু? জিজ্ঞাসা করিল, কখন আসবে ওবেলা ? দারোয়ানের কথামত সে পুনরায় বৈকালে গেল । লালরংএর বাড়ীটা, সামনে অনেক বিলাতী ফুল গাছ ও গোলাপের টব । ফটকের কাছে একট। ছোট ক্টোকড় অপরাজিত ।

  • ్చరి)

চুল শিশুর হাত ধরিয়া একজন মধ্যবয়সী লোক দাড়াইয়৷ আছে । দারোয়ান তাহাকে পাশের দিকে একটা ছোট ঘরে লইয়া গেল। ইলেক্‌টিক পাথার তলায় একজন মোটাসোটা ভদ্রলোক বসিয়া কি লিখিতেছিলেন। মুখ তুলিয়া বলিলেন—কি আপনার ? অপু সাহস সঞ্চয় করিয়া বলিল—এখানে পুওর ষ্টুডেন্টদের খেতে দেওয়ার— আপনি দরখাস্ত করেছিলেন ? কিসের দরখাস্ত অপু জানে না। ’ -জুন মাসে দরথস্তে কৰ্ত্তে হয়, আমাদের নাম্বর লিমিটেড, কিনা, এখন আর খালি নেই। আবার আসচে বছর—তা ছাড়া আমরা ভাব চি ওঠা উঠিয়ে দোব, এষ্টেট রিসিভারদের হাতে যাচ্ছে, ও সব আর স্ববিধে হবে না । ফিরিবার সময় গেটের বাহিরে আসিয়া অপুর মনে বড় কষ্ট হইল। কখনও সে কাহারও নিকট কিছু চায় নাই, চাহিয়া বিমুখ হইবার দুঃখ কখনও ভোগ করে, নাই, চোগে তাহার প্রায় জল আসিল। কোকড় চুল শিশুটি তখনও দাড়াইয়া আছে, কি সুন্দর দেপিতে ।... পকেটে আনা দুই পয়সা মাত্র অবশিষ্ট আছে – এই বিশাল কলিকাতা সহরে তাহাই শেয অবলম্বন । কাহাকেই বা সে এখানে চেনে, কাহার কাছে যাইবে ? অখিল বাবুর মেসে দুই মাস যে প্রথম আসিয়া খাইয়াছে, সেখানে যাইতে লজ্জ করে। সুরেশ্বরের নিজেরই চলে না, তাহার উপর সে কথনে জুলুম করিতে পরিবে না । আরও কয়েক দিন কাটিয়া গেল। কোনদিন সুরেশ্বরের মেসে একবেল পাইয়া, কোনোদিন বা জানকীর কাছে কাটাইয়া চলিতেছিল। একদিন সারাদিন না খাওয়ার পরে সে নিরুপায় হইয়া অখিল বাবুর মেসে সন্ধ্যার পরে গেল। অখিল বাবু অনেক দিন পরে তাহাকে পাইয়া খুব খুসি হইলেন। রাত্রে খাওয়া দাওয়ার পর অনেকক্ষণ গল্পগুজব করিলেন। বলি বলি করিয়াও অপু নিজের দুর্দশার কথা অখিল বাবুকে বলিতে পারিল না। তাহ হইলে হয়ত তিনি তাহাকে ছাড়িবেন না, সেখানে থাকিতে বাধ্য করিবেন। সে জুলুম করা হয় অনর্থক।