পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&e 8 কোম্পানীর উত্তরাধিকারী ব্রিটিশ গবন্মেণ্টের মতে ভারতবর্গের অবস্থা তাহারই মত কিছু হওয়ায় পুরাতন উপায় অবলম্বিত হইতেছে । তাহ হইলে ইংরেজদের ১০৩ বংসরের অবিরাম অবিশ্রাম ভারত হিতৈষণা ও হিত চেষ্টা সত্ত্বেও ভারতবর্ষ ১৮২৭ সালে যেমনটি ছিল ১৯৩০ সালেও রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে মূলতঃ তেমনই আছে বলিতে হইবে । শতাব্দী পরেও যদি ভারতবর্ষ সন্তুষ্ট, শাস্ত, ঠাণ্ডা না হইয়া থাকে, তাহ হইলে তাহার চিকিৎসার জন্য ব্রিটিশ জাতি তাহাদের জ্ঞান বুদ্ধি অন্তসারে ঔষধ প্রয়োগ অবগুই করিবে। কিন্তু দেশটাকে ঠাণ্ড করিতে তাহার। পারে নাই, এই অকৃতকার্য্যত কি তাহাদিগকে স্বীকার করিতে হইবে না ? দেশটা ঠিক আছে, কেবল গান্ধী ও র্তাঙ্গার মত কতিপয় ব্যক্তি ক্ষেপিয়াছে বলিলে চলিবে না। তাহ হইলে সংবাদপত্র নিরোপের কড়া হুকুম জারী, এবং বঙ্গে বিনা বিচারে গ্রেপ্তার ও কয়েদ করিবার হুকুম জারী হইত না, প্রকাশু সভার অধিবেশন ৪ মিছিল বিস্তর স্থানে নিসিদ্ধ হইত না, অগণিত স্থানে পুলিশকে লাঠি ও বন্দুক ব্যবহার করিতে হঠত না। হইতে পারে, ভারতীয়েরা যে ঠাণ্ড হয় নাই, সেটা সম্পূর্ণ তাহদের মানসিক ব্যাধির ফল। কিন্তু তাহ হইলে ও ইহা স্বীকার করিতে হইবে, বিলাতী রাজনৈতিক চিকিৎসাশাস্ত্র এই ব্যাধির নিকট হার মানিয়াছে । মৃতরাং এখন ব্রিটিশ জাতির ভাবিয়া দেখা উচিত যে, এক শত বৎসর আগেকার নিদান ও ঔষধ এখন প্রযোজ্য কি না । ১৮২৭ সালের ২৫নং রেগুলেশনের হেতুবাদে আছে — Whereas reasons of State embracing the due maintenance of the alliances formed by the british Government with foreign Powers, the preservation of tranquillity in the territory of Indian Princes entitled to its protection and the security of the British Dominions from foreign hostility and internal commotion, occasionally rendered it necessary to place under personal restraint individuals against whom there may not be sufficient ground to institute any judicial proceedings or when such proceedings may not be adapted to the nature of the case or unay for some other reasons be unadvisable or improper.... পররাষ্ট্রের সহিত ব্রিটিশ গবন্মেন্টের মিত্রত রক্ষার প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড জন্য,ভারতীয় দেশী রাজ্যগুলির মধ্যে শাস্ত ভাব রক্ষার জন্য কিংবা ব্রিটিশ ভারতবর্ষকে বিদেশীর শত্রুত হইতে রক্ষা করিবার নিমিত্ত গান্ধীজীর বিরুদ্ধে উপ-আইনটি প্রযুক্ত হয় নাই । কথিত হইতে পারে, যে, ইণ্টানfাল অর্থাং আভ্যন্তরীণ কমোশ্বন হইতে দেশকে রক্ষা করিবার জন্য গান্ধীজীকে আটক করা হইয়াছে। সুতরাং কমোশুনের মানে বুঝিতে চেষ্টা করিতে হইবে । ইংরেজী অভিধানে #xta (so agitation, tumult, riot, violence, insurrection ইত্যাদি লিখিত আছে। সাধারণ আন্দোলন, জনসাধারণের চাঞ্চল্য ইত্যাদি দমনের জন্য এই রেগুলেশ্বন মজুত ছিল বিশ্বাস করিতে হইলে মানিয়া লইতে হয় যে, আমরা সাধারণ আইনের রাজ্যে বাস করিতেছি না । গান্ধীজীর অভিযান গত মার্চ মাসে আরম্ভ হয় । তাহার পর সে অল্পসংখ্যক দাঙ্গা হাঙ্গামা হইয়াছে, তাহ অপেক্ষা ংপ্যায় বেশী ও অধিক সাংঘাতিক দাঙ্গা হাঙ্গামা আগে আগে হইয়া গিয়াছে, এবং আধুনিক দাঙ্গা আদির সহিত গান্ধীর সাক্ষাং বা পরোক্ষ যোগ নাই। তখন এরূপ রেগুলেশ্বন থাটান হয় নাই । চট্টগ্রামে যাহা হইয়াছে, তাহার সহিত গান্ধীজীর কোন প্রকার যোগ পাগলে ভিন্ন কল্পনা করিতে পারে না, এবং চট্টগ্রামের ব্যাপারটা মোপলা বিদ্রোহের মত বিদ্রোহ ও নহে । মোপলা-বিদ্রোহের জন্য বিদ্রোহীদের বিচারানন্তর শাস্তি হইয়াছিল, কোন রেগুলেশ্বন অনুসারে নহে । অতএব গান্ধীজীর প্রতি রেগুলেশুনটার ঠিক প্রয়োগ হয় না। কিরূপ লোকদের বিরুদ্ধে রেগুলেশ্বনটা প্রযুক্ত হইবার কথা, তাহাও দেখা যাক। আদালতে যাহাদের বিচার চালাইবার জন্য যথেষ্ট প্রমাণাদি নাই, এরূপ লোককে এই বিধি অনুসারে আটক করা যায়। কিন্তু গান্ধীজী সেরূপ লোক নহেন ; তিনি প্রকাশ্ব ভাবে লবণআইন ভঙ্গ করিয়াছেন এবং যাহার জন্য অন্য অনেক বক্তা ও সম্পাদক জেল খাটিতেছেন এমন বিস্তর কথা বলিয়াছেন ও লিখিয়াছেন । প্রমাণেরও কোন অভাব হইত না, কারণ তিনি কিছুই অস্বীকার করিতেন না। হেতুবাদে তাহার পর যাহ। লিখিত হইয়াছে, তাহার মানে এই দাড়ায়, যে, ঈষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর আমলে ভারতীয়