পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—প্রেস ও সংবাদপত্র উপ-আইন ৩১৭ না পাই, তাহা কৰ্ত্তাদের দয়া, অনবধানতা বা অজ্ঞতা বশতঃ, বুঝিতে হইবে । এরূপ অবস্থা সম্মানের অবস্থ৷ নহে। এ অবস্থায় আমাদের পক্ষে কৰ্ত্তব্য কাজ পূর্ণমাত্রায় করা অসম্ভব ; অল্প যাহা করিবার চেষ্টা করিব, তাহাতে ও আশঙ্কা অনেক, বিপদ বিস্তর। সাধারণ আইন অন্তসারেও বিপদ ছিল, কিন্তু হঠাৎ সত্বর লুপ্ত হইবার আশঙ্কা ছিল না । মুদ্রাঘন্থের ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, যে, শাসক ও সৰ্ব্বসাধারণ উভয়ের পক্ষেই আবশ্যক, তাহ খৃষ্টীয় এই বিংশ শতাব্দীতে খুলিয়া বল। অনাবশ্যক । এ কথাটার উল্লেপ করিতেছি এই জন্য, যে, প্রভু ইংরেজরা মনে করিতেছেন যেন সংবাদপত্র-সমূহকে অসঙ্কোচে সব কথা বলিতে দেওয়ায় তাহাদের কোনই লাভ নাই । উপ-অাইমটার জন্য ভিন্ন ভিন্ন রকম "অপরাধের" মধ্যে নৈতিক প্রভেদ লুপ্ত হইল। কোন কাগজ যদি কাহাকে ও খুন করিতে উত্তেজিত করে, তাহার সে শাস্তি, কোন কাগজ দি কাহাকে ও বিশেষ কোন একট। অন্যায় টাক্স না-দিতে বলে কিংবা অত্যাচারী কোন সরকারী লোককে জিনিষ বিক্ৰী না-করিতে বলে, তাহার ও সেই শাস্তি । অথচ শেষোক্ত “অপরাধ” দুটাতে নৈতিক কোন দোষ নাই । অপরাধের মাত্র ও শ্রেণীভেদে দণ্ডের তারতম্য হয় । উপ-আইনটিতে কিন্তু সেরূপ তারতম্য নাই। উপরে লিখিত তথাকথিত কোন “অপরাধের” জন্য কাহার ও লাখ টাকার প্রেস বাজেয়াপ্ত হইবে, আবার খুন করিতে উত্তেজিত করা-রূপ অতি-গহিত অপরাপের জন্য হয় ত অন্য যাহার প্রেস বাজেয়াপ্ত হইবে তাহার দাম কয়েক শত টকা মাত্র হইতে পারে। স্বয়ং বড়লাট বা অন্য কোন লাট যদি প্রত্যেক সংবাদপত্রের নথি বা প্রত্যেক প্রেসে মুদ্রিত জিনিষের স্তপ দেখিতে পারিতেন, তাহ হইলেও এরূপ উপ-আইনের অপব্যবহার হইত ; কারণ, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে, তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাইয়া, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিলে, কখনও স্ববিচার হইতে পারে না। কিন্তু উপ আইন অনুসারে শাস্তি যদিও প্রাদেশিক গবন্মেন্টের নামে দেওয়া হইবে, তথাপি বাস্তবিক শাস্তি দেওয়া হইবে কোন কোন অধস্তন কৰ্ম্মচারীদের মত অনুসারে । সেই সব কৰ্ম্মচারীরা স্থানভেদে ভিন্ন ভিন্ন এবং তাহণদের সকলের জ্ঞান বুদ্ধি বিবেচনা ন্যায়পরায়ণতা সমান নহে । এই কারণে এই উপ-আইনের প্রয়োগে বিস্তর অসাম্য দেখ। যাইবে । অবশু সাধাবণ আইনের প্রয়োগেও কতকটা এরূপ হয়। কিন্তু সাধারণ আইন অনুসারে প্রকাশু বিচার হয় বলিয়। লোকে অভিযোগের ও তদ্বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য জানিতে পরিয়! অবিচারের সমালোচনা করিতে পারে । তাহাতে খামপেয়ালি কিছু দমন হয়। উপ-আইনের প্রয়োগের কারণ প্রায় আপারে পাকিয়। যাইবে বলিয়া সম্যক্-জ্ঞানপ্রস্থত সমালোচনা হইবে না, এবং তাহার প্রভাব ও পূৰ্ব্বোত্ত অধস্তন কৰ্ম্মচারীর অনুভব করিবে না। spitsifqą zsfēzi zigotzi ( civil disobedience ) <| fäfafYI «ff«tof# ( passive resistance ) H<f# সভ্যদেশে জনসাধারণের দুঃখ দূরীকরণের এবং রাষ্ট্রীয় অধিকার বৃদ্ধির একটি বৈধ ( constitutional ) উপায় বলিয়া স্বীকৃত। ভারতীয়ের মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে দক্ষিণ-আফ্রিকায় যে নিস্ক্রিয় প্রতিরোপ প্রচেষ্টা চালাহয়|ছিল, বড়লাট থাকাকালে লর্ড হাডিং তাহা বৈধ ( constitutional ) বলিয়ছিলেন । আলোচ্য উপ-আইনে কোন কাগজ কাহাকে ও এরূপ প্রচেষ্টায় যোগ দিতে বলিলে তাহ। একটা অপরাপ হইবে । অবশ্য, ধিনি আইন অমান্য করিবেন, বা ট্যাক্স না দিবেন, তিনি এরূপ অবাধ্যতার ও ট্যাক্স ন-দেওয়ার ফল ভোগ করিবেন। কিন্তু কোন আইনের বা ট্যাক্সের বিরুদ্ধে অসামরিক নিরুপদ্রব বিদ্রোহ চালানর সমর্থন, বা তাহাতে লোকদিগকে উৎসাহিত করা সাধারণ আইনে দণ্ডনীয় ছিল না। এখন মুদ্রাযন্ত্র ও সংবাদপত্রের পক্ষে তাহা দণ্ডনীয় হইল। এই প্রকারে, অন্যান্য সভ্যদেশের লোকদের যে একটি মূল্যবান বৈধ অধিকার আছে, ভারতীয়েরা তাহ। হইতে বঞ্চিত হইল। তাহার আত্মকৰ্ত্তত্ব লাভের জন্য যাহাই করুক,