পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অজ্ঞাতবাস করিতেছি। কিন্তু তথাপি সেই ‘সরুৎ-বিভাত’ ব্রহ্মলোকের কথা সময়ে সময়ে স্মৃতির অতল হইতে উখিত হইয়া আমাদের উন্মনা করে ; তখন সেই প্রত্নওক: (Ancient Home-এ) ফিরিবার জন্য আমরা ব্যাকুল হইয়া উঠি । এই ভাব লক্ষ্য করিয়া একজন পাশ্চাত্য কবি বলিয়াছেন যে, জীবের সমস্ত জীবন-চেষ্টার মূলে 'Getting back to God'—onto go wers প্রযত্ন। জীবের মধ্যে যে অদম্য ব্রহ্মক্ষুধা ( যাহাকে off-siosal Hunger for the Absolute বলিয়াছেন)— বিত্তের দ্বারা, যশ: মান গৌরব পদ সম্পদ দ্বারা সে ক্ষুধার নিবৃত্তি হয় না। চাতক পক্ষী ফটিক জল ব্যতীত অন্ত জলে তৃপ্ত হয় কি ? - সেইজন্য বৈদিক ঋষি বলিয়াছেন ‘ন বিত্তেন তপণীয়ে মতুষ্যঃ । যাজ্ঞবল্ক্য স্বীয় পত্নী মৈত্রেয়ীকে বহু বিত্তের অধিকারিণী করিতে চাহিলে মৈত্রেয়ী প্রশ্ন করিয়াছিলেন, — ‘স্বামিন, যদি আমার পক্ষে সমস্ত পৃথিবী বিত্তপূর্ণ হয়, তদ্বারা আমি কি অমৃতত্ব লাভ করিতে পারিব ? উত্তরে যাজ্ঞবল্ক্য বলিয়াছিলেন—‘অমৃত স্বস্ত তু নাশাস্তি বিত্তেন ' তখন মৈত্রেয়ী বলিলেন, ‘যেনাহং নামৃতাস্যাং কিমহং তেন কুৰ্য্যাম্। ইহাই জীবের চিরন্তন উত্তর। যদ্বারা সে অমৃতত্ব লাভ না করিবে, তাহার ততঃ কিম ?—সে তুচ্ছ লাভ, লাভ নহে, ক্ষতি। কারণ, অমৃতের পুত্র সে চিরদিনই অমৃতপিপাসী। আর সেই অমৃত পুরুষ স্থদুর স্বর্গে নহে, তাহারই অস্তরে। তিনি ‘হৃদি অয়ং’—নিউম্যানের ভাষায় Closer than our hands and feet oft বোধ হয় মানুষ নিপট নাস্তিক হইতে পারে না। হয় আস্তিক হয়, না হয় বড় জোর মাস্তিক হয়,--Atheist হইতে পারে না, বড় জোর Agnostic হয়। যে হেতু সেই হৃদিস্থিত হৃষীকেশের সহিত তাহার আন্তরিক সংযোগ – ঋগ বেদের কথায়-স্ব স্বপর্ণ সয়ুজ সখায়া'-অর্থাৎ এই দেহপুরে জীব পুরঞ্জনরূপে অবস্থিত, কিন্তু সেই নিরঞ্জন তাহার সত্য সখা। এইভাবে উপনিষদ সংসারকে ‘ব্রহ্মচক্র বলিয়াছেন— তস্মিন হংসো ভ্ৰাম্যতে ব্ৰহ্মচক্রে—শ্বেত, ১৬ হংস অর্থে জীব। চক্রের আরম্ভ-অবসান নাই—এবং যে হেতু “Evolution is a complete circle, Giogo Huttoos ব্ৰহ্মচক্র বলা বেশ সঙ্গত। এই সংসার-চক্রে জীবরূপী হংস ভ্রমণ করিতেছে। তাহার সম্বন্ধে ধ্যানরসিক কবীর বলিয়াছেন শুন হংসা পুরাতন বাত ! কোন মুলুকসে আয়সি হংসাউৎরঙ্গে কোন ঘাট। অর্থাৎ জীব আজব মুলুক হইতে সংসারের ঘাটে অবতরণ করিয়াছে। যে ব্যোমবিহারী হংস-অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য পৃথিবীর মাটিতে নামিয়া আসিয়াছে । কিন্তু কিছুদিনে আবার স্বধামে ফিরিয়া যাইবে, এবং ব্ৰহ্মসাযুজ্য লাভ করিয়া ব্রহ্মে স্থিতি করিবে । ইহাই তাহার নিয়তি । যদুগত্বা ন নিবৰ্ত্তন্তে তৎধাম পরমং মম ॥— গীত৷ এই যে ব্রহ্মচক্র-জীব ব্রহ্ম হইতে নিঃস্থত হইয় যে বৃত্তে আবৰ্ত্তন করিয়া চরমে ব্রহ্মে নিবৃত্ত হইবে—সেই বৃত্তের প্রথমাৰ্দ্ধকে প্রবৃত্তি মার্গ ও শেষাৰ্দ্ধকে নিবৃত্তি মাগ বলে। উপনিষদের ভাষায় ইহাদের নাম প্রেয়ের পথ ও শ্ৰেয়ের পথ। গৌড়ীয় বৈষ্ণবেরা ইহাদিগকে ভবের পথ ও ব্রজের পথ বলেন । অন্যৎ শ্রেয়; অন্ত তৈব প্রেয়ঃ তে উডে নানার্থে পুরুষংসিনীথ —কন্তু এক কথায় বলিলে, প্রবৃত্তি মার্গের ধৰ্ম্ম আদান এবং নিবৃত্তি মার্গের ধৰ্ম্ম প্রদান। প্রেয়ের পথে গ্রহণের «TH ŝtą TTK z H (grows by grasping ) 4R শ্ৰেয়ের পথে বিসর্গ বা ত্যাগের দ্বারা জীব সমৃদ্ধ হয় (grows by giving)। ভবের পথে ( যাহাকে সেক্সão o Primrose path of dalliance of যাইতে পারে) জীবের ঈশ্বর-বুৈমুখ্য এবং ব্রজের পথে তাহার ঈশ্বর-সাম্মুখ্য। প্রবৃত্তি মার্গে চলিতে চলিতে একদিন সে মধ্যবিন্দু (turning-point ) অতিক্রম করে। এতদিন তাহার মুখ ঈশ্বরের প্রতি বিমুখ ছিল, এইবার ‘মোড় ফিরিয়া তাহার মুখ ঈশ্বরের সম্মুখ হয়। এই হইতে তাহার ধৰ্ম্ম-জীবনের আরম্ভ। কিন্তু এই শুভ মুহূর্তের পশ্চাতে প্রত্যেক জীবের সুদীর্ঘ ক্ৰমবিকাশের