পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] Nరి:Rసె থাকা সম্ভব নয়। এবিষয়ে কেহ পরীক্ষা করিয়াছেন কিছু খাইয়া ভাবিতে চাই ঘি খাইতেছি। এজন্য বিদেশী কিনা জানি না। মোট কথা, বাড়ির রান্নায় যে ঘি দেওয়া হয় তাহাতে অল্পাধিক ভাইটামিন থাকাই সম্ভব, “কিন্তু বাজারের স্মৃতপক খাবারে না থাকাই সম্ভব । ইহাও বিবেচ্য—দেশের অধিকাংশ লোক ঘি খাইতে পায় না, রান্নায় তেলই বেশী . চলে, এবং তেলে ভাইটামিন নাই । কিন্তু অন্য যুক্তি অনাবগুক, ঘনীকত তৈলের বিরুদ্ধে অখণ্ডনীয় যুক্তি—ইহাতে ধৰ্ম্মহানি হয়। এই ধৰ্ম্ম গতান্তগতিক অন্ধসংস্কার নয়, ভাইটামিনের ধৰ্ম্মও নয়,—দেশের স্বার্থরক্ষার ধৰ্ম্ম, আত্মনির্ভরতার ধৰ্ম্ম । এই ধৰ্ম্মবুদ্ধি উন্মেষের ফলে ভারতবাসী বুঝিয়াছে যে, বিদেশীবক্সে লজানিবারণ হয় না। ঘি খাইবার পয়সা নাই, কিন্তু কোন দুঃখে বিদেশী তৈল খাইব ? এদেশের তৈল কি দোষ করিল ? সর্ষপতৈলের ঝাজ সব সময় ভাল না লাগে ত অন্য তৈল আছে। প্রাচীন ভারত তৈল শব্দে তিলতৈলই বুঝিত, তাহাতেই রাধিত, বোম্বাই মাদ্রাজ মধ্যপ্রদেশের লোক এখনও তাহাতে রণপে । ইহা স্নিগ্ধ, নির্দোষ, স্বপচ । বাঙালীর নাক সিটকাইবার কারণ নাই । সর্ষপতৈলের উগ্ৰ গন্ধ আমরা সহিতে পারি, বাজারের কচুরি গজ খাইবার সময় ঘিয়ের বিকত গন্ধ মনে মনে মার্জনা করি, নিৰ্গন্ধ ভেজিটেবল প্রডক্ট, উত্তপ্ত হইলে দুর্গন্ধ হয় তাহাও জানি, তবে তিল চীনাবাদাম তৈলে অভ্যস্ত হইব না কেন ? অশ্বখাম| পিটুলিগোলা থাইয়া ভাবিয়াছিলেন দুধ, আমরাও একটা নুতন 33-3 “উদভিজ্জ পদার্থ” অনাবশ্বক, লুচি কচুরি ভাজার উপযুক্ত স্বদেশী উদভিজ্জ তৈল যথেষ্ট আছে। নিমন্ত্রিত কুটুম্বকে ঠকানো হয়ত শক্ত হইবে, কিন্তু দেশবাসীর আত্মসম্মান রক্ষা পাইবে । যদি কলিকাতা ও অন্যান্য নগরের মিউনিসিপালিটি চেষ্টা করেন তবে তিলাদি তৈলের প্রচার সহজেই হইতে পারে। শ্ৰীযুক্ত চুণীলাল বহু বিমলচন্দ্র ঘোষ রমেশচন্দ্র রায় প্রভৃতি ভিষকৃমহোদয়গণ এবিষয়ে প্রবন্ধাদি দ্বারা সাধারণকে জ্ঞানদান করিতে পারেন। ময়রা যাহাতে প্রকাশ্যভাবে বিশুদ্ধ তৈল অথবা মৃতমিশ্রিত তৈলের খাবার বেচিতে পারে তাহার ব্যবস্থা অবাক । এই রকম খাবার ঘনীকৃত তৈলের খাবার অথবা খারাপ ঘিয়ের খাবার অপেক্ষ কোনো ংশে নিরুষ্ট নয়। ঘি খাইব, অভাবে অজ্ঞাত-উপাদান ভেজাল দ্রব্য খাইব লোকের এই মনোবৃত্তির পরিবর্তন আবশ্যক। ঘি পাইব, ন জুটিলে সজ্ঞানে বিশুদ্ধ তৈল খাইব বা স্থতমিশ্রিত তৈল খাইব—ইহাই সদবুদ্ধি। কয়েকজন বাঙালী বৈজ্ঞানিক ঘনীকৃত তৈল উৎপাদনে অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছেন। যদি তাহাদের চেষ্টায় এদেশে ইহার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে ধৰ্ম্মহানির আপত্তি থাকিবে না। এখন—ক্ষমতায় কুলাইলে খাটি খি খাইব, নতুবা সর্ষপ ভিল চীনাবাদাম নারিকেল তৈল খাইব, অথবা স্কৃত ও তৈল মিশাইয়া খাইব, রুচিতে না বধিলে চৰ্ব্বিও থাইব, কিন্তু বিদেশী ঘনীকৃত তৈল পূতনার স্তন্যবং পরিহার করিব ।