পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిరివ مR ھمیہ কড়া। কড়া চাপলে । তারপর, বল্পে না পেত্যয় যাবে দিদিঠাকরুণ,—সেই এক পয়সার ঘি সবখানি হড় হড় ক’রে দিলাম ঢেলে কড়ায়। ঘি যখন কল কল ক’রে উঠলে, তখন মুজি ঢেলে খুস্তি দিয়ে নাড়তে লাগলাম। বেশ লাল লাল ভাজা ভাজা হ’য়ে এলো যখন, পাশে ছিল বড় ঘটির এক ঘটি জল, দিলাম ঢেলে সবট। তারপর খুস্তি দিয়ে কেবল নাড়তে লাগলাম। বলবো কি দিদিঠাকরুন, নাড়তে, নাড়তে, নাড়তে হাতের নড়া ছিড়ে যাবার জো । এমন সময় মা দিলে চিনি ঢেলে । আবার নাড়তে লাগলাম । নাড়তে নাড়তে যেই ঘন ফুট ধরেছে, অমনি কড়াখানা উকুন থেকে নামিয়ে নিলাম। মস্ত একট পাথরের খোরা ছিল ঘরে,—সেই মোহনভোগ,—আহা দিদি ঠাকরুণ কি যে তার রূপ,—ঢাল লাম সেই থোরায় । হ’ল এক খোরা। তারপর ? মুখে দিই আর নেই, মুখে দিই আর নেই। নাম মোহনভোগ, থেতে রাজভোগ, অল্প পয়সায় বড়মানুষী খোরাক । মাথা থাও দিদিঠাকুরুণ—আরদণ্ডমীতে ক’রে খেয়ো । সকলে হাসিতে হাসিতে গড়াইয়া পড়িল । বড়দিদি উঠিয়া বলিলেন,—আর নয়। চ—জামাই দেখিগে, নৈলে বড়বউ আবার কি মনে ক’রবে ? কলরব করিতে করিতে মেয়ের উঠিলেন । কথায় বলে, লোকবল—বড় বল । কিন্তু জামাই-বরণের বিশৃঙ্খলা হইতে আরম্ভ করিয়া প্রত্যেক কাৰ্য্যের খুটিনাটি ধরিয়া বড়বন্ধু ভাবিলেন,— এমন বল যেন অতি বড় শত্রুরও না থাকে। কথায়-কথায় ক্রোধ দেখাইয়৷ মানের বোঝাট অতিরিক্ত রকমে ভারী করিয়া প্রত্যেকে প্রতি পদক্ষেপটি হিসাব করিয়া করিতেছে। স্বামী নিমন্ত্রণ করিয়াছেন, স্ত্রী করজোড়ে গলবস্ত্রে ক্রটি সারিতে সারিতে প্রাণান্ত হইতেছেন । তথাপি কি মন উঠে ! ওই সিড়ির কাছে প্রথম ঘরখানিতে নাতিনীতিনী লইয়া বড়দিদি আশ্রয় লইয়াছেন। তিনি সকলের জ্যেষ্ঠ —মাতৃস্থানীয়া । পুত্র নাই, কন্যাও সবেমাত্র একটি ছিল ; কয়েক বৎসর হইল মায়ের খর রসনা সঞ্চালনের ফলে প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড আত্মঘাতিনী হইয়। জালা জুড়াইয়াছে। নাতিনাতিনী লইয়া তাহার সংসার। বিধবা মাতুষ, মাঝে মাঝে কাশী, বৃন্দাবন বাসের হুমকি দিয়া ইহাদের সন্ত্রস্ত করিয়া তুলেন, কিন্তু সে ঝড়ের পূৰ্ব্বক্ষণে মাত্র। তুফান থামিলে হাসিয়া খেলিয়া গল্প করিয়া, ছেলেমেয়ে ঠেঙাইয়া দিনগুলি বেশ স্বচ্ছন্দে কাটাইয়া দেন। একটা স্বতন্ত্র রান্নাঘর, র্তাহার জন্য নির্দিষ্ট হইয়াছে, বিধবার আয়োজন স্লেচ্ছপনার মধ্যে তো চলিতে পারে না । পাশের ঘরখানিতে থাকেন ন’বউ—উমা তারা । স্বামী কাবুল-সীমান্তে কমিসরিয়েটে মোট মাহিনীর চাকুরী করেন। স্ত্রীর অলঙ্কার-পারিপাট্য দেখিলে সে সচ্ছলতার অনেকখানি অনুমান করিতে বিলম্ব হয় না। দুই পুত্র-কন্যা নাই। সুতরাং, নিরুদ্বিগ্নচিত্তে সংসার তরণীতে দোলা খাইতেছেন ! সেজবউ যদিও তার পাশের ঘরখানি পাইয়াছে তথাপি সে যেন আর একটু দূরে থাকিলেই ভাল দেখাইত। স্বামীর চাকুরী সামান্য —কোন আপিসের ৮০ টাকা মাহিনার কেরাণী সে। স্ত্রীর কোলভৰ্ত্তি পুত্রকন্যা-প্রবল বন্যার মত না হইলেও সংখ্যায় নিতান্ত মন্দ নহে। হাতে শাখা ও রুলি, পরণে বঙ্গলক্ষ্মী শাড়ী। বিবাহ উপলক্ষে বহুকালের পুরাণে ভাজ-করা শান্তিপুরী শাড়ীখানি বাহির হইয়াছে, আর বাহির হইয়াছে শাশুড়ীর দেওয়া পুরাণে অনন্ত গাছি । অবগু এ সবের চলন এখন আর নাই। উপর হাতের গহন আড়াইপেচ তাগায় আসিয়া ঠেকিয়াছে—অতি আধুনিক ফ্যাসানে তাহারও স্থান নাই। সেজবউ কেরাণীর স্ত্রী, তার এসব আধুনিকত্বের খোঁজখবর লইতে যাওয়া ধৃষ্টতামাত্র। তাই কৰ্ম্মবাড়ীতে ঘষিয়া-মাজিয়া পুরাতন জিনিষগুলিকে সজ্জার উপযোগী করিয়া তুলিয়াছে। _ পাশেই সেজঠাকুরঝির বিবিয়ান ফ্যাসানের সাজসজ্জ+ তাহার দারিদ্র্যকে যেন শতকণ্ঠে উপহাস করিতেছে । সেজবোনের স্বামী ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট। কোথাও অন্নজলের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নাই। দু’মাস ছ'মাস করিয়া বাংলা দেশের সমস্ত স্থানের জলবায়ু চাথিয়া চাখিয়া বেড়াইতে হয় । তিনি সাহেব-ঘেঁষা বলিয়া স্ত্রীরও