পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q88 দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মনের সহিত শরীরের সম্বন্ধ কি ? মনের সহিত শরীরের যে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ বৰ্ত্তমান তাহ প্রত্যক্ষসিদ্ধ। শরীর খারাপ হইলে মন খারাপ হয়, মন খারাপ হইলে শরীর খারাপ হয়। জড়বস্তু বা জড়শক্তির সন্নিকর্ষে আসিলে শরীরের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তদনুযায়ী মানসিক বৃত্তির উদ্ভব হয়। কম্পমান বস্তু কেবল যে কৰ্ণপটহকে আন্দোলিত করে তাহী নহে ; ইহার সঙ্গে সঙ্গে শব্দানুভূতি হইয় থাকে । ত্বকে জড়বস্তুর স্পর্শে স্পশামুভূতির উদ্ভব হয়। পঞ্চেন্দ্রিয়লব্ধ সমস্ত মানসিক বৃত্তি জড়বস্তুজাত। স্বরা জড়পদার্থ, কিন্তু স্বরাপানে কেবল যে জড়শরীরেই বিকার ঘটে তাহা নহে, সঙ্গে সঙ্গে মনেরও পরিবর্তন দেখা দেয় । মনের উপর দেহের প্রভাব যে কত, তাহা এই সকল ব্যাপার হইতে সহজে অকুমান করা যাইতে পারে। একথাও বলা চলে যে, দেহে মস্তিষ্ক না থাকিলে মনই থাকিত না । অপরপক্ষে, তাপাদি মানসিক বিকার দ্বারা দেহ থিয় হয়, মনের আনন্দে দেহের তৃপ্তি হয়। এই সকল ব্যাপারে দেহের উপর মানসিক শক্তির প্রভাব প্রত্যক্ষ নহে। ইচ্ছা মানসিক বৃত্তি এবং ইচ্ছাতে কোনো সাধারণ জড়ধৰ্ম্ম নাই। তথাপি ইচ্ছামাত্রেই আমরা হস্তপদাদি সঞ্চালন করিতে পারি। এখানে শরীরের উপর মানসিক বৃত্তির প্রভাব প্রত্যক্ষ দেখা যাইতেছে । দেহমনের ঘাত-প্রতিঘাত শরীর ও মনের পরস্পর ঘাত-প্রতিঘাত সাধারণের নিকট অতি সহজ ও নিত্য ঘটনা, কিন্তু মনোবিদের নিকট পরম বিস্ময়কর। মাটিতে আপেল পড়ার ভিতর যে কি গুরুতর প্রাকৃতিক রহস্য ছিল, সাধারণে তাহা লক্ষ্য করে নাই। নিউটনের মত মনীষীর চক্ষেই প্রথমে তাহা ধরা পড়িল । শরীর ও মনের সম্বন্ধের মধ্যে যে রহস্য রহিয়াছে সাধারণে তাহ না দেখিলেও মনোবিৎ তাহ লক্ষ্য করিবেন। . স্পষ্ট দেখিতেছি, মন শরীরকে চালাইতেছে ও শরীর মনকে প্রভাবান্বিত করিতেছে, কিন্তু কি করিয়া তাহা ঘটিতেছে বুঝা সহজ নহে। মনের উপর শরীরের প্রভাব স্বীকার করিলেই মনকে প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৭ AASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAMMMMMMAAA AAAASAAASAAASAAA SASAASAAAS কেবল জড়কেই চালাইতে পারে। [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড সাধারণ জড়পদার্থের মধ্যে ফেলিতে হয়, কারণ জড়শক্তি মনের কোনো জড়গুণ দেখা যায় না। মন ও শরীর একেবারেই পৃথকবর্গের পদার্থ। আবার যদি বলি, শরীরের উপর মনের ক্রিয়া আছে, তাহা হইলেও বিপদ। কেন-না তাহা হইলে স্বীকার করিতে হয়, চিৎশক্তি জড়শক্তির মতই ও তাহা জড়বস্তুকেও চালাইতে সক্ষম। ইচ্ছার মত মানসিক ব্যাপার যদি শরীরকে চালাইতে পারে তবে স্বীকার করিতে হয় যে, ইচ্ছ, তাপ, বৈদ্যুতিক শক্তি ইত্যাদি জড়শক্তির রূপান্তর মাত্র। কিন্তু ইচ্ছা প্রভূতি মানসিক ব্যাপারকে জড়শক্তির বর্গে ফেলা যায় না । অতএব হয় ইচ্ছাশক্তিকে জড়শক্তি বলিয়া মানিতে হইবে, নতুবা স্বীকার করিতে হইবে যে, জড়শক্তি ব্যতীতও শরীরে পরিবর্তন ঘটিতে পারে। এই কথা মানিলে Law of Conservation of Energy Wi>II 57 Al I বিজ্ঞানের এই স্বত্র অনুসারে স্বীকার করা হয় যে, একশক্তি অপর শক্তিতে রূপান্তরিত হইতে পারে—যদি তাহার একই বর্গের হয়। কিন্তু শক্তি বিনা কোনো পরিবর্তন সম্ভব নহে। মনোদৈহিক সহচারবাদ উদাহরণের সাহায্যে সমস্যাটা পরিষ্কার করিয়া বলিতেছি । একটা ব্যাণ্ডের দলে নানা প্রকার যন্ত্রবাদক থাকে। তাহারা ব্যাণ্ডমাষ্টার বা নেতার ইঙ্গিতে নিজ নিজ বাদ্যযন্ত্র বাজায়। নেতা হাত নাড়িয়া সঙ্কেত করে এবং সকলে সেই অনুসারে চলে। ধরা যাক, কোনো অনভিজ্ঞ দর্শক বাজনা শুনিতেছে এবং সে এমন জায়গায় বসিয়াছে যেখান হইতে ব্যাণ্ডমাষ্টারকে বা বাদকদিগকে দেখা যায় না। বেহালা ও বঁাশী---এই দুই যন্ত্রের শব্দে শ্রোতার মনোযোগ নিবদ্ধ। এই দুই যন্ত্র একসঙ্গে বাজিতেছে এবং একসঙ্গেই থামিতেছে। বঁাশী যখন দ্রুত বাজে, বেহালার শব্দও তখন দ্রুত হয়। আবার বেহালার স্বর সপ্তমে উঠিলে বাশীর । স্বরও সপ্তমে চড়ে। কখনও মনে হয় বেহালা বঁাশীকে চালায়, আবার কখনও মনে হয় বঁাশীর বশে বেহালা আরও একটু