পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] পুনশ্চ ©¢ፃ SAASAASAASAASAASAAAS বনলতা আশ্চৰ্য্য হ’য়ে গেল। বোধ করি ও ভেবেছিল, ম্যালেরিয়া, কলেরার অত্যাচারের মধ্যে ও যেমন বেঁচে আছে, মাও তেমনি থাকবেন! ওর দু’ চোথ দিয়ে জল নেমে এল । অসঙ্কোচে কাধের উপর হাত রেখে বললে,—বলো । আমি দাড়াতে পারচি না । সমুদ্রের জল আছাড় খাচ্চে পায়ের কাছে ; বসলাম দু’জনে । কিন্তু কথা বলতে পারলাম না অনেকক্ষণ ! বনলতাই বললে,—কি করচ এখন ? —কিছু না, একটা বিপ্লবী-দলে আছি । —সে আবার কি ! একটু হেসে বললাম,—বিশেষ কিছু নয়, বোমা-টোমা তৈরী করতে হয়, ধরা পড়লে জেলে যেতে হয়, দল ভেঙে গেলে এমনি কোনো জায়গায় এসে হাওয়া খেতে হয় । বনলতা তবু ঠিক বুঝল না, বললে,—কত মাইনে দেয় ? বিজ্ঞতার হাসি আসেনি, কারণ বনলতাকে আমি চিনি । দুঃখের হাসি হেসেই আমি বললাম,—জেলে যাওয়াটাকেই মাইনে বলতে পারো । ওর বেশী আমরা পাই না, চাই-ও না । —কট। পাশ দিলে ? তিনটে ? তোমাকে বলিনি, আমাদের বিশু-দা মারা গেছে । —ত যাক, সে বেচারি তিনটে পাশ করেও মারা গেল, আমি একটা নিয়েই বেচে আছি । তার বেশী এগোতে পারিনি । এত কথার পরেও বনলতা জিজ্ঞাসা করলে,—কোথায় বিয়ে করা হ’ল শুনি ? — কোথা ও না | বনলত হেসে উঠলে,—তাতে আজও পুরানে। দিনের স্বর পুরোমাত্রায় বজায় আছে। —সব মিছে কথা । আমাকে বোকা পেয়ে খালি যা’ত বলা হচ্চে । —সত্যি, একটাও মিছে কথা নয়। আমার চালচুলো কোনো কিছুরই ঠিক নেই। SAASASAAAAASA SAASAASSAAAAAAMMAMMS বনলতা আবার হঠাৎ হেসে উঠলো ! কোলের উপর হাত রেখে বললে,—কাল কি মজা হয়েছিল, শোনে । দাদাকে ওষুধ খাইয়ে বসে আছি, পিদিমের তেল ফুরিয়ে এসেছে। ঘুম আসছিল, চোখ বুজতেই মনে হ’ল দিদি আমার চোখ মুছিয়ে দিয়ে বলচেন,-“ভয় কি বউ, পঙ্কজ মানুষ হ’লে আবার দেখা হবে ? বনলতা কথাট। আরম্ভ করেছিল হাসি দিয়ে, শেষ হ’ল অশ্রুজলে । ওকে এ অবস্থায় আর কেউ হয়ত পাগল বলে মনে করত । জেলেরা তখন অথে জলে নেীক ভাসিয়েছে, তরঙ্গের মাখায় মাথায় নৌকার নাচ —অনেকে স্নানও স্বরু করেচে। " বনলত উঠে দাড়াল । —বেলা হ’ল, দাদ বোধ হয় ঘুম থেকে উঠেচেন । এখুনি আমায় খুজতে লোক পাঠাবেন! ছিঃ–র্তার অমৃখের কথা মনেই ছিল না। চল আমার সঙ্গে, বাড়ীটা দেখে আসবে। বনলতাকে বাড়ী পয্যন্ত এগিয়ে দিয়ে এলাম । ভিতরে ঢুকিনি, কিন্তু বিকালে যাব ব’লে এসেচি। বুঝলাম, বনলতার অন্তরের অস্তঃপুরের গোপাল বোসের লেনের সেই অতিজীর্ণ, অন্ধকার দোতালা বাড়ীটি আজও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নি । কিন্তু সে তার অবশিষ্ট প্রকাণ্ড জীবনের কতটুকু ? জীবনের চলার পথে অনেক নারীর পরিচয় পেলাম, কিন্তু বনলতার মত কেউ নয় । ও একা, অনন্তসাধারণ, অদ্ভূত। বুদ্ধি তার নিতান্ত মোট নয়, কিন্তু তার ব্যবহার সে শেখে নি। জীবনের যে ছবি একদিন দেখেচে, ও আশা করে চিরকাল সেটি সেই মত থাকবে । বৈকালে আবার দেখা হয় । ওর ভাইয়ের জীবনের অবস্থা সত্যিই খারাপ হয়ে এসেচে। চোখ দুটে যেন মুখের অনেকখানি নীচে নেমে গেছে, নাকট খাড়ার মত উচু। গ্রামেই একটা গোলাদারি দোকান খুলে বেচারি কোনো মতে নিজের ব্যয়নিৰ্ব্বাহ করছিল । ছেলেমেয়ে নেই, ভাই-বোন শুধু । কিন্তু শিবের