পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] তাহার হাত ধরিল । কিছুক্ষণ কথাবাৰ্ত্ত হইল । কেহই কাগজে লেখা পদ্যটার কোনো উল্লেখ করিল না, যদিও দুজনেই বুঝিল যে, তাহাদের আলাপের মূলে কালকার সেই চিঠিখান। কিছুক্ষণ পরে ছেলেটি বলিল,—চলুন, কোথাও বেড়াতে ধাই, কলকাতার বাইরে কোথাও মাঠে—সহরের মধ্যে হাপ ধরে—কোথাও একটা ঘাস দেখবার জো নেই— কথাটা শুনিয়াই অপুর মনে হইল এ ছেলেটি তো সম্পূর্ণ অন্য প্রকৃতির। ঘাস না দেখিয়া কষ্ট হয় এমন কথা তো আজ প্রায় এক বৎসর কলিকাতার অভিজ্ঞতায় কলেজের কোন বন্ধুর মুখে শোনে নাই । সাউথ সেক্সনের ট্রেনে গোটাচারেক ষ্টেশন পরে তাহারা নামিল । অপু কখনো এদিকে আসে নাই । ফাক। মাঠ, কেয়া ঝোপ, মাঝে মাঝে হোগলা বন । সরু মেঠো পথ ধরিয়া দুজনে ঠাটিয়া চলিতেছিল—ট্রেনের অল্প আধঘণ্টার আলাপেই দুজনের মধ্যে একটা নিবিড় পরিচয় জমিয়া উঠিয়াছিল । মাঠের মধ্যে একট। গাছের তলায় ঘাসের উপরে দুজনে গিয়া বসিল । ছেলেটি নিজের ইতিহাস বলিতেছিল— হাজারিবাগ জেলায় তাহীদের এক অভ্রের খনি ছিল, ছেলেবেলায় সে সেখানেই মানুষ। জায়গাটার নাম বড়বনী, চারিধারে পাহাড় আর শাল-পলাশের বন, কিছুদূরে দারুকেশ্বর নদী । নিকটে পাহাড়ের গায়ে একটা ঝরণা।-- পড়ন্ত বেলায় শালবনের পিছনের আকাশটা কত কি রঙে রঞ্জিত হইত—প্রথম বৈশাখে শাল-কুসুমের ঘন সুগন্ধ দুপুরের রৌদ্রকে মাতাইত, পলাশ-বনে বসন্তের দিনে যেন ডালে ডালে আরতির পঞ্চপ্রদীপ জলিত—সন্ধ্যার পরই অন্ধকারে গা ঢাকিয়া বাঘেরা ঝরণায় জলপান করিতে আসিত—বাংলা হইতে একটু দূরে বালির উপর কতদিন সকালে বড় বড় বাঘের পায়ের থাবার দাগ দেখা গিয়াছে । সেখানকার জ্যোৎস্ব রাত্রি। সে রাত্রির বর্ণনা নাই, ভাষা জোগায় না। স্বৰ্গ যেন দূরের নৈশকুয়াসাচ্ছন্ন, অস্পষ্ট পাহাড়শ্রেণীর ওপারে-ছায়াহীন, সীমাহীন, অনস্তরসক্ষর জ্যোৎস্না যেন দিক্‌চক্রবালে তাহারই ইঙ্গিত দিত। 8 *-* অপরাজিত SAA AA ASASASAS SS SAAAAAMAMiAAMMMMSAMAAASAAAA AAAASAAAA هجومSEN\ AAAAAA AAAA MASAMAMMMMAMA MMMAMM MAMM MeA ee M AeMSMeMMAMAeS এক আধ দিন নয়, শৈশবের দশ দশটি বৎসর সেখানে কাটিয়াছে। সে অন্য জগং, পৃথিবীর মুক্ত প্রসারতার রূপ সেখানে চোখে কি মায়-অঞ্জন মাখাইয়া দিয়াছে,— কোথাও আর ভাল লাগে না । অভ্রের খনিতে লোকসান হইতে লাগিল, খনি অপরে কিনিয়া লইল, তাহার পর হইতেই কলিকাতায় । মন ইণপাইয় ওঠে — খাচার পার্থীর মত ছট্‌ফট্‌ করে । বাল্যের সে অপূৰ্ব্ব আনন্দ মন হইতে নিশ্চিহ্ন হইয়। মুছিয়া গিয়াছে। অপু এ ধরণের কথা কাহারও মুখে এ পর্য্যস্ত শোনে নাই—এ যে তাহারই অস্তরের কথার প্রতিধ্বনি ! গাছপালা, নদী, মাঠ ভালবাসে, নির্জনত ভালবাসে বলিয়৷ দেওয়ানপুরে তাহাকে বলিত পাগল। একবার মাঘ মাসের শেষে পথে কোন গাছের গায়ে আলোক-লতা দেখিয়া রমাপতিকে বলিয়াছিল,—কেমন সুন্দর । দেখুন দেখুন রমাপতি-দা— রমাপতি মুরুবিয়ানার স্বরে বলিয়াছিল মনে আছে,— ও সব যার মাথায় ঢুকেছে, তার পরকালটি একেবারে ঝরঝরে হয়ে গেছে— পরকালটা কি জন্যে যে ঝরঝরে হইয়া গিয়াছে, এ কথা সে বুঝিতে পারে নাই কিন্তু ভাবিয়াছিল রমাপতি-দা স্কুলের মধ্যে ভাল ছেলে, ফষ্টিক্লাশের ছাত্র, অবশ্যই তাহার অপেক্ষা ভাল জানে। এ পর্য্যস্ত কাহারও নিকট হইতে সে ইহার সায় পায় নাই, এই এতদিন পরে ইহাকে ছাড়া । তাহা হইলে তাহার মত লোকও আছে ! --সে একেবারে স্বষ্টিছাড়া নয় ! -- অনিল বলিল,—দেখুন, এই এত ছেলে কলেজে পড়ে, অনেকের সঙ্গে আলাপ করে দেখেচি—ভাল লাগে না— dull, unimaginative mind : *IWCw &q •ICŷ 8fCR5, বিশেষ কোন বিষয়ে কৌতূহলও নেই, জানবার একটা সত্যিকার আগ্রহও নেই ; তা ছাড়া, এত ছোট কথা নিয়ে থাকে যে, মন মোটে—মানে, কেমন যেন—যেন মাটির উপর hop করে করে বেড়ায়। প্রথম সেদিন আপনার কথা শুনে মনে হ’ল, এই একজন অন্য ধরণের, এদলের নয় । অপু মৃদু হাসিয়া চুপ করিয়া রহিল। এ সব সেও