পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] অপরাজিত ৩৭৩ AMMSAS A SAS SSASAS SSAS SSAMAJAeSAMMAMAMAAASAASAASAASAASAASAASAASAASAAMMMMMMAAAA রং উজ্জল শু্যামবর্ণ, কোকৃড়া কোকৃড়া চুল, বেশ মুখখান, সে কলেজ হইতে আসিবার সময় হইলেই প্রায়ই মেয়েটিকে দাড়াইয়া থাকিতে দেখিত— ক্রমে শুধু দাড়ানো নয়, মেয়েটি তাহাকে দেখিলেই হঠাং হাসিয়া জানালার আড়ালে মুখ লুকায়, কখনো বা জানালাটার গড়খড়ি বারকতক খুলিয়া বন্ধ করিয়া মনোযোগ আকর্ষণ করিতে চেষ্টা করে, দিনের মধ্যে দু’বার, তিন বার, চার বার কাপড় বদলাইয়। ঘরটার মধ্যে অকারণ ঘোরাফের করে এবং ছুতানাতায় জানালার কাছে আসিয়া দাড়ায় । কতদিন এরকম হয়, অপু মনে মনে ভাবে—মেয়েটা আচ্ছ। বেহায়। কিন্তু আজকের এ ব্যাপার একেবারে অপ্রত্যাশিত । তে । আজ ও-বেল উড়ে ঠাকুরের হোটেলে গাইতে গিয় সে দেখিয়াছিল, সুন্দর ঠাকুর মুগ ভার করিয়া বসিয়া আছে । দুই তিন মাসের টাকা বাকী, সামান্ত পুজির হোটেল, অপূৰ্ব্ববাবু ইহার কি ব্যবস্থা করিতেছেন ?••• আর কতদিন এ ভাবে সে বাকী টানিয়া যাইবে ? সুন্দর ঠাকুরের কথায় তাহার মনে যে দুভাবনার মেধ জমিয়াছিল, সেটা কৌতুকের হাওয়ায় এক মূঃ ক্টে কাটিয়া গেল । –আচ্ছা তো মেয়েট ? দ্যাথো কি লিখে রেখেচে— ওদের—হো হো—আচ্ছ।—হিষ্টি--- সেদিন আর মেয়েটিকে দেগা গেল না, যদিও সন্ধার সময় একবার ঘরে ফিরিয়। সে দেখিল জানালার সে খড়ির লেখা মুছিয়া ফেলা হইয়াছে। পরদিন সকালে ধরের মধ্যে মাদুর বিছাইয়। পড়িতে পড়িতে মুগ তুলিতেই অপু দেখিতে পাইল মেয়েটি জানালার ধারে দাড়াইয়া আছে। কলেজে যাইবার কিছু আগে মেয়েটি আর একবার আসিয় দাড়াইল । সবে স্নান সারিয়া আসিয়াছে, লালপাড় শাড়ী পরণে, ভিজে চুল পিঠের উপর ফেল, সোনার বাল পরা নিটোল ডান হাতটি দিয়া জানালার গরাদে ধরিয়া আছে । অল্পক্ষণের জন্য. কথাটা ভাবিতে ভাবিতে সে কলেজে গেল। সেখানে অনেকের কাছে ব্যাপারট। গল্প করিল। প্রণব তে। শুনিয়া হাসিয়া খুন, জানকীও তাই। সবাই আসিয়া দেখিতে চায়-এ যে একেবারে সত্যিকার জানালা কাব্য ! সত্যেন বলিল, নভেলে ও মাসিকের পাতায় পড়া যায় বটে, কিন্তু বাস্তব জগতে এরকম যে ঘটে তাহ তো জানা ছিল না !..নানা হাসি তামাসা চলিল, সকলেই যে ভদ্রতাসঙ্গত কথা বলিয়াই ক্ষাস্ত রহিল তাহা বলিলে সত্যের অপলাপ করা হইবে। তারপর দিনচারেক বেশ কাটিল, হঠাৎ একদিন আবার জানালায় লেখা—“হেমলতা আপনাকে বিবাহ করিবে ? জানালার খড়খড়ির গায়ে এমনভাবে লেখা যে, জানালা খুলিয়া লম্ব কক্তাটা মুড়িয়া ফেলিলে লেখাটা শুধু তাহার ঘর হইতেই দেখা যায়, অন্য কারুর চোখে পড়িবার কথা নহে। প্রণবটা যদি এসময় এখানে থাকিত । তারপর আবার দিন-দুই সব ঠাণ্ড । সেদিন একটু মেঘলা ছিল—সকালে কয়েক পশলা বৃষ্টি হইয়া গিয়াছে। দুপুরের পরই আবার খুব মেঘ করিয়া আসিল । কারখানার উঠানে মাল বোঝাই মোটর লরি গুলার শব্দ একটু থামিলেও দুপুরের শিফট’-এ মস্ত্রিদের প্যাক্‌বাক্সের গায়ে লোহার বেড় পরাইবার দুমদাম্ আওয়াজ বেজায়। এই বিকট আওয়াজের জন্য দুপুরবেলা এখানে তিষ্ঠানে দায় । অপু ঘুমাইবার বৃথা চেষ্টা করিয়া উঠিয়া বসিতেই দেখিল মেয়েটি জানালার কাছে আসিয়া দাড়াইয়াছে । অল্পক্ষণের জন্য দুজনের চোখোচোথি হইল । মেয়েটির চোখে কেমন একটা অদ্ভুত ধরণের দৃষ্টি । অপুর মনটা কেমন করিয়া উঠিল—মেয়েটি পাগল না তো ? ঠিক – এতদিন সে বুঝিতে পারে নাই—মেয়েটি পাগল ! কথাটা মনে হইবার সঙ্গে সঙ্গে একটি গভীর করুণা ও অতুকম্পায় তাহার সারা মন ভরিয়া গেল । মেয়ের বাপকে সে মাঝে মাঝে প্রায়ই দেখে—প্রৌঢ়, খোচা খোচ দাড়ি, কোনো আপিসের কেরাণী বোধ হয় । সে কলেজে যাইবার সময় রোজ ভদ্রলোক ট্রামের অপেক্ষায় ফুটপাথের ধারে দাড়াইয়া থাকেন। হয় ত মেয়েটির বাবাই, নয় ত কাক বা জেঠামশায়, কি মামা— মোটের উপর তিনিই একমাত্র অভিভাবক। খুব বেশী অবস্থাপন্ন বলিয়া মনে হয় না । হয় ত তাহাকে দেখিয়া মেয়েটা ভালবাসিয়া ফেলিয়াছে—এরকম ত হয় ।