পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] আমি ইতিহাসের দিক্ দিয়াই বিষয়টির আলোচনা করিয়াছি—শিল্পসৌন্দর্ঘ্যের দিক্ দিয়া সকল বিষয়ের আলোচনা করিবার অধিকার লাভ করি নাই । ইতিহাসের দিক্ দিয়া আলোচনা করিতে গিয়াই আমি বুঝিয়াছি-শিল্পবিধি প্রথমে কারিকারূপে প্রচলিত ছিল, পরে ক্রমে ক্রমে তাহা সঙ্কলিত হইয়া, বাস্তুশাস্ত্রে, পুরাণে, তন্ত্রে বিবিধ ভাবে বিবিধ গ্রন্থে স্থান লাভ করিয়াছে । যেমন আগে ভাষা, তাহার পর ব্যাকরণ ;– সেইরূপ আগে শিল্প, তাহার অনেক পরে শিল্পশাস্ত্র । সুতরাং শিল্পশাস্ত্রে ‘ব্যাকার”, বিবরণ, লাভ করিয়৷ তাহার সাহায্যে শিল্পরীতি অধ্যয়ন করা চলিতে পারে । সকল যুগের সকল শিল্পই শাস্ত্র মানিয়া চলে নাই, স্বাধীন উদ্ভাবনা অনেক সময়ে গণ্ডী ছাড়াইয়া চলিয়৷ গিয়াছে। এই কথাটি না ধরিয়াই স্তর জজ বার্ডউড়, ভ্ৰমে পতিত হইয়া রহিয়াছেন । ভাষা বুঝিবার জন্য ব্যাকরণের প্রয়োজনের মত শিল্প বুঝিবার জন্ত শিল্পশাস্ত্রের প্রয়োজন,--তাহার অধিক ইহার নিকট কিছু প্রত্যাশা করা যায় না, ইহাই আমার মত। গৌড়শিল্প কোন শিল্পশাস্ত্র ধরিয়া বুঝিবার চেষ্টা করিব, তখন তাহারই অনুসন্ধানে ব্যাপৃত হইয়। বুঝিয়াছিলাম— মগধ, উড়িষ্যা, এবং দ্বীপপুঞ্জের শিল্প গৌড়শিল্প । ভাস্কৰ্য্য ও স্থাপত্য একসঙ্গে চলিয়াছে বলিয়া একসঙ্গে বুঝিতে হইলে, সমস্ত উত্তরাপথের (আযাবৰ্ত্তের ) শিল্পে বিশ্বকৰ্ম্মার প্রভাব দেখা যায়—একথ। ঢাকা রিভিউ পত্রে লিখিয়াছিলাম। আমাদিগের দেশের নব্য স্মৃতিতে দেখা যায়—হয়শীর্ষপঞ্চরাত্রের প্রভাব এদেশেও বর্তমান ছিল। সেই হইতেই উহার সন্ধান করিতেছি, এবং গ্রন্থ না পাওয়ায় উদ্ধৃত শ্লোকাবলী হইতে হয়শীর্ষ মতের পরিচয়লাভের চেষ্টা করিতেছি, এমন সময়ে উড়িষ্যায় গ্রন্থ দেখিলাম। উহার নকল আনিতে পারি নাই। উড়িয়া অক্ষর হইতে বঙ্গক্ষেরে নকল করাইতে ব্যয়বাহুল্য আছে। আমি উড়িষ্যায় ফটোগ্রাফ তুলিতেই ব্যয়বাহুল্য করিয়৷ ফেলিয়াছিলাম। আমার সাংসারিক অবস্থায় অধিক ব্যয়বাহুল্য সম্ভবে না। আপনি যখন বঙ্গাক্ষরে পুথি পাইয়াছেন তখন আমাকে একবার আদ্যন্ত দেখিতে স্বৰ্গীয় অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মহাশয়ের কয়েকখানি পত্র ബാ ന്യും. --സാ මෙ) দিবেন। যে Bibliography প্রস্তুত করিতেছেন তাহা অবশুই উপাদেয় হইবে, তাহাও দেখিবার আশায় রহিলাম। বরেন্দ্র-অঙ্গুসন্ধান সমিতি অনেক পুরাণ তন্ত্রের পুথি সংগ্ৰহ করিয়া ও দক্ষিণাপথ হইতে শিল্পশাস্ত্রের পুথিগুলির নকল ক্রমশঃ আনাইয়। দিবার ব্যবস্থা করিয়! আমার সাহায্য করিতেছেন, আপনার নিকটেও সেইরূপ সাহায্য পাইলে আমার পরিশ্রমের লাঘব হইবার আশা আছে । শিল্পকারগণ অনেক অধ্যাপক অপেক্ষা শিল্পশাস্ত্রের মৰ্ম্ম ভালরূপ জ্ঞাত আছে । অধ্যাপকবর্গ শিল্পশাস্ত্রে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ বলিলেও অত্যুক্তি হয় ন—কারণ প্রয়োজনের অভাবে তাহারা এই শাস্ত্রের চর্চা ত্যাগ করিয়াই অনভিজ্ঞ হইয়াছেন। আপনি যে পুস্তক রচনা করিতেছেন, তাহ সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর হউক, ইহাই প্রার্থন । আমি তাহার কোন কাজে লাগিলে ধন্য বোধ কবিব, সুতরাং আমাকে অসস্কোচে লিখিবেন । গৌড়শিল্পের ইতিহাসের আভাসটি এইরূপ,—খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর পূৰ্ব্বে আমাদিগের দেশে স্বতন্ত্র শিল্প ছিল না, নিদর্শনও অল্প ছিল, যাহা ছিল তাহাও উৎকৃষ্ট বলিয়া কথিত হইতে পারে না। কিছু কিছু নিদর্শন এখানে সংগৃহীত হইয়াছে। অষ্টম হইতে একাদশ শতাব্দী পৰ্য্যন্ত সমগ্র উত্তরাপথে, [ মগধে ও উড়িষ্যায় ত বটেই ] গৌড়ীয় পালসাম্রাজ্যের প্রভাব বৰ্ত্তমান থাকায়, সমগ্র উত্তরাপথের ভাযায়, রচনায়, শিল্পে ও লোকাচারে গৌড়ীয় প্রভাব প্রাধান্ত লাভ করে ;–ইহা ইতিহাসের কথা, তাম্রশাসন শিলালিপি ও পুরাতন গ্রন্থ হইতে ইহা দেখাইয়৷ যাহা লিখিয়াছি তাহ বরেন্দ্র-অনুসন্ধান সমিতির প্রথম গ্রন্থে জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রকাশিত হইবে। দ্বীপপুঞ্জের উপনিবেশ যে বাঙ্গালীর উপনিবেশ তাহার প্রমাণ দেখাইয়া গ্রন্থ লিখিতেছি, এবং যবদ্বীপের শিল্প-প্রতিভাশীর্ষক একটি প্রবন্ধ সাহিত্যে পাঠাইয়াছি, তাহাও জ্যৈষ্ঠ মাসেই বাহির হইবে । লামা তারানাথের গ্রন্থের পরে তিব্বতীয় ভাষায় প্যাগ-সাম-জন-জঙ্গ নামে আর একখানি গ্রন্থ রচিত হয় । উহাতেও ধীমানের পরিচয় আছে। যে অংশে তাহ আছে তাহার অনুবাদভীর রায় বাহাদুর শরচ্চন্দ্র দাসের উপর অপিত হইয়াছে । ইহা ছাড়া