পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8) ఇ প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড বলিদ্বীপের পদণ্ডের এখনও বিশেষ দক্ষ, ভারতবর্ষে এ বিষয়ে এদেশের সমকক্ষ তান্ত্রিক সাধক বোধ হয় খুব বেশী পাওয়া যাবে না। করমুদ্রা সহযোগে দেবাৰ্চনা বা মন্ত্রসাধন মহাযান বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে সঙ্গে চীন আর জাপানেও প্রবেশ লাভ করেছে, আর জাপানের বৌদ্ধ-সম্প্রদায়-বিশেষের অনুষ্ঠানে এই কর-মুদ্রা এখনও একট। বড়ো স্থান দখল ক’রে আছে। বলিদ্বীপের পদণ্ডদের হাতের মুদ্র দেখে ডচ, আর অন্য ইউরোপীয়েরাও তার আকৰ্ষণী শক্তিকে মানতে বাধ্য হ’য়েছে। এইরূপে খানিকক্ষণ মুদ্রা ক’রে ক’রে মন্ত্র আওড়াতে লাগলেন, “মাঝে আবার ডাইনে বায়ে তাকাতে লাগলেন, টগরজাতীয় এক রকম ফুল নিয়ে হাতের তালি বাজিয়ে সজোরে দক্ষিণ দিকে ফেলে দিলেন, এই ভাবে ভোজনারম্ভের অনুষ্ঠান শেষ ক’রে অন্নে হাত দিলেন। ইতিমধ্যে সন্ধুরা তৈরী, পাচটা বাজে, আমাদের এখনি যাত্রা করতে হবে, এক তে দেরী হ’য়েই গিয়েছে । ব্রাহ্মণের সেবায় বসলেন, আমরাও বিদায় নিলুম— আমাদের গুহকৰ্ত্ত আর রেসিডেণ্ট সাহেব আর অন্য ভদ্রলোকদের অভিবাদন ক’রে আমরা গাড়ীতে চড়িলুম। বাঙলিতে আমাদের সঙ্গে একজন আধা-ডচ, আধযুবদ্বীপীয় ডাক্তার আর র্তার যবদ্বীপীয় স্ত্রী কারাg আসামে চ’ললেন । আবার সেই নয়নাভিরায দেশের মধ্যে দিয়ে যাত্র । সৌন্দয্যের অফুরন্ত ভাণ্ডার যেন শেষ হ’তে চায় না । একে একে পাহাড়ের পর পাহাড় ক্ষেতের পর ক্ষেত পার . হ’য়ে আমরা যেতে লাগলুম। ক্রমাগত ধানের ক্ষেত, আর না রকল বাগান,বাশ-ঝাড়,আর কলা-বাগান । ছোটে। ছোটো পাহাড়ে নদী পেরুলুম অনেকগুলি - লোহার ঝোল সাকো দিয়ে এই নদীগুলির উপর দিয়ে পথ ক’রেছে। বিকাল বেলা, সন্ধ্যে হয় হয়, পাহাড়ে নদীর উপল-বিষম তীরে বহুস্থলে স্নানার্থিনী আর স্নাননিরতা বলিদ্বীপীয় জনপদ-বধূ আর গ্রামণী-কন্যাদের মেলা-হঠাৎ চোখে পড়ে, গ্রীক কবিদের বণিত তাদের আফ্রোদিতে আতে মিস্ প্রভৃতি দেবী আর দেবকন্যাদের নানা কাহিনী স্মরণ করিয়ে দিতে লাগল। পথে আমরা Kloeng koeng রঙ কুণ্ড আর Kosambe কোসাম্বে নামে দুটি বড়ো গণ্ডগ্রামের ভিতর দিয়ে গেলুম। সমুদ্রের ধার দিয়ে খানিকট পথ ;– এই অনিৰ্ব্বচনীয় সুন্দর পথকে সমুদ্রের সান্নিধ্য আর ও সুন্দর করে তুলেছে। কারাঙআসেম রাজ্যের এলাকা যেখান থেকে আরম্ভ হ’ল, সেখানে রাস্তার উপরে একটি উচু লোহার তোরণদ্বার বানিয়ে রেখেছে । আমরা দেহে শ্রান্তি অনুভব ক’রছি, তবু নয়নের আর তৃপ্তি যেন হয় না । এইভাবে পথ চ’লতে চ’লতে যখন তাধাব হয় হয়, এমন সময়ে, আমরা করিাঙ-অাসেম শহরে এসে পৌছুলুম। এখানে থালি কবি আর স্বরেনবাবু রাজার বাড়ীতে থাকবেন স্থির হয়েছিল, তার। সেখানেই উঠেছিলেন । বাকী আর সকলের জন্য করাঙ-আসেমের ‘পাসাঙ্গাহান’ বা ডাক-বাঙলা নিদিষ্ট হ’য়েছিল। মালপত্রের মোটর সমেত আমরা সেই ডাক-বাঙলায় গিয়েই উঠলুম, ডাক-বাঙলার ‘মান্দুর’ বা খানসাম। আমাদের অভিবাদন ক’রে স্বাগত করলে। মালপত্র নামিয়ে, যে ধার ঘর ঠিক ঠাক ক’রে নিয়ে, মোটরের সারা দিনের ভাড়া চুকিয়ে দিয়ে, মুখ হাত ধুয়ে ব’তে ব’ল্তে অন্ধকার ঘনিয়ে এল-বলিদ্বীপে আমাদের ঘটনা বহুল প্রথম দিবসটি এইরূপে সাঙ্গ হ’ল । ( ৭ ) বলিদ্বীপ-কারাঙ-আসেম পাসাঙ্গ,াহানে থাকবার ব্যবস্থা ক’রে আমরা বাঙলির 'পুরী’ বা রাজবাটীতে কবির কাছে গেলুম। পথে ডাকঘর, পুলিস আফিস প্রভূতি সরকারী আপিস পড়ে । কারাঙ-আসেমকে শহর না ব’লে বড়ো একটা গ্রাম বলা চলে। একটী বড়ো রাস্ত আছে, রাস্তার ধারে কতকগুলি দোকান - চীনেমান দোকানদার বেশী, নানা মণিহারী জিনিস বিক্রী করে, চীনা ফোটোগ্রাফরও একজন আছে ; আর দু চার জন বোম্বাইয়ে’ -পোজার দোকানও আছে, এরা বিলিতি কাপড় আমদানী ক’রে বেচে । আরব কাপড়ওয়ালা আছে, এরা বোম্বাইয়েদের কাছ থেকে কাপড়