পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪২৬ eMMAAASAAAA প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড মায়ার জ্যাঠাইমা আসিয়া বলিলেন, “কি রে, আজ আর নাওয়া-খাওয়া নেই নাকি ? যাবি ত সেই পরশু, আজই সব কাজ শেষ না করলে চলবে না ?” মায় বলিল, “অন্ততঃ এই বড় বাক্স দুটে। শেষ করে নি জ্যাঠাইমা । সব কাজ কালকের আশায় ফেলে রাখলে শেষ অবধি হয়েই উঠবে না। বেশী দেরি না, আধ ঘণ্টার মধ্যেই হয়ে যাবে।” জ্যাঠাইমা বলিলেন, “জয়ন্তী তোর জন্যে আমসত্ত্ব পাঠিয়েছে, টিফিন-বাক্সের মধ্যে করে নিয়ে যাস ।" মায় হাসিয়া বলিল, “তোমার মেয়ে খুব পাক৷ গিন্নি হয়েছে এরি মধ্যে ।” জয়ন্তীর মা বলিলেন, ‘আর না হয়ে কি করবে বাছ ? ঘাড়ে পড়লে সবই করতে হয়। নইলে তোর চেয়ে কতই বা বড় ? অল্প বয়সে দায়ে পড়ে বিয়ে দিয়ে দিতে হল, নইলে তোরই মত হেসে খেলে বেড়াতে পারত ।” এমন সময় চাকর আসিয়া একখান। চিঠি অগ্রসর করিয়া ধরিল, বলিল, “একট। ছোকুর দিয়ে গেল, দিদিমণিকে দিতে বললে ।” মায়া চিঠি খুলিয়া দেখিল, শিবচরণবাবু লিখিয়াছেন, পরশু যাওয়ার সব ঠিক । আজ বেল তিনটার সময় পুত্রকে লইয়। তিনি মায়ার সঙ্গে দেখা করিতে যাইবেন । মায় একটু হাসিয়া চিঠিখান। রাথিয় দিল । চাকরটাকে বলিল, “ছোকরাকে যেতে বল, কোনো জবাব নেই।” শিবচরণবাবুর ছেলেকে লইয়। রেঙ্গুনে তাহার সঙ্গিনীরা কি রকম ঠাটা করিত, তাহাই মনে করিয়া মায়ার হাসি পাইতেছিল। দেবকুমার কি রকম মাতুষ কে জানে ? কাহার মুখে যেন মায়া শুনিয়াছিল, সে দেখিতে অতিশয় স্বপুরুষ । যাক, তাহাতে কিছু আসিয়া যায় না। মায়ার এখন ও সব ভাবন না ভাবিলেও চলিবে । তবু বাক্স গোছানতে আর তাহার মন লাগিল না । তাড়াতাড়ি করিয়া জিনিষপত্রগুল উঠাইয়া ফেলিয়া, সে স্নান করিবার জন্ত উঠিয়া পড়িল । স্নান খাওয়া সারিয়া আসিয়া অার একবার জিনিষ গোছানোতে মন দিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু কিছুতেই মন বসিল না। জ্যাঠাইমার সঙ্গে গল্পও বেশী ক্ষণ জমে না, ছেলের কেহ বাড়ীতে নাই, স্বতরাং মায়া অকারণে এ-ঘর ৪-ঘর ঘুরিয়া সময় কাটাইতে লাগিল। আচ্ছা, শিবচরণবাবু এবং দেবকুমার আসিয়৷ পড়িতে তার বেশী দেরি নাই । বড় জোর ঘণ্টাদেড়েক হইবে । সে তাহাদের বসাইবে কোথায় ? এ বাড়ীট নিতান্তই সাবেকী ধরণের। আলাদা বসিবার ঘর বলিয়া কোনো ঘর নাই । মেয়েরা বেড়াইতে আসিলে গৃহিণীর শুইবার ঘরে আডড করে, ছেলের অসিলে হয় বিজয়ের পড়িবার ঘরে, না-হয় সদর দরজার সামনে বা সিড়িতে দাড়াইয়াই কাজ চালাইয়া দেয়। মায়! স্থির করিল বিজয়ের পড়ার ঘরটাই কাজে লগাইতে হইবে । সে ঘরে অস্তুতঃ খাট পাতা নাই । একটুখানি গুছাইয়া লওয়া দরকার ; কোনোরকমে তাড়াতাড়ি সারিয়া লইতে হইবে । মায়ার জ্যাঠাইমা খাওয়া-দাওয়৷ মেঝেতে মাদুর পাতিয়। একটুখানি গড়াইয়া লইবার আয়োজন করিতেছিলেন । দেবরঝিকে ঢুকিতে দেখিয়৷ বলিলেন, “ষ্ঠ্য। রে দুপুরেও কি তোদের একটু ঘুম আসে না ? থালি টো টো করে ঘুরছিস । আমাদের ত পেটে দুটে পড়লেই ঘুমে চোখ টুলে আসে।” মায়া বলিল,“সারা দুপুর ত স্কুল আর কলেজ করে মরি, ঘূমব কখন ? অাজ ত এখনি আবার তারা সব দেখ। করতে আসবে। তাদের কোথায় বসাব তাই ভাবছি।” জ্যাঠাইম। বলিলেন, “বিজয়ের ঘরেক্ট বস। আর সব ঘরই ত জোড় হয়ে অাছে।” মায়া বলিল, “ও ঘরে মোটে দুটো চেয়ার রয়েছে । আরও থান-দুই অস্ততঃ দরকার হবে । আর র্তাদের একটু চ ট দিতে হবে ত ? ঠিক চ থাবার সময়েই আসছেন।” এতগুলা কাজের কথা শুনিয়া মায়ার জ্যাঠাইম অগত্য উঠিয়া বসিলেন । বলিলেন, “আমার ঘরের ইজি চেয়ারটা পাঠিয়ে দিই, আর একটা বেতের চেয়ার তোর ঘরেই আছে, সেটাও নিয়ে যা । মহেশটাকে ডাক না ? ঘরটা একটু বেড়ে মুছে দিক । চায়ের সরঞ্জাম সব আছে । সারিয়া ধরের