পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] তরুণী ভাৰ্য্যা 886: সম্মতি ছিল না । দেশের লোক কেহ আসিয়া দেখিলে কত কথা উঠিবে, ঝুলনীর হাতে হয়ত তাহারা জলও থাইতে চাহিবে না । কিন্তু ক্রমে ব্যাপারটার বিভীষিকা তাহাদের মন হইতে দূর হইয়া গেল। রূপলাল এবাড়ীর অতি পুরাতন ভৃত্য, ইহাদের জন্য ত্যাগস্বীকারে সে অভ্যস্ত। ঝুলনীও শেষে রাজী হইল, খানিকটা সকলের কথায়, খানিকট লোভে পড়িয়া । মুক্তামাল। তাহাকে বলিলেন, “তোকে দু-মাসের মাইনে আগাম দিয়ে আট গাছ ঝকৃঝকে রূপোর চুড়ি গড়িয়ে দেব এখন। কাসার চুড়ির চেয়ে সে দেখতে কত ভাল হবে।” সাজসজ্জা সম্বন্ধে ঝুলনীর একটা মারাত্মক রকম দুৰ্ব্বলতা ছিল। পাড়াগায়ের মেয়ে, গরীবের বউ, সোনার গহনা তাহার কোনোদিন চোখেও দেখে নাই । রূপাটাকেই তাহার যথেষ্ট দামী মনে করে । গ্রামে তাহারা গল্প শুনিত বটে যে, সহরে বড়মাহুষের মেয়ে বউরা সোনার স্থাস্থলি, সোনার নথ পরে। সে নথ আবার এতবড় যে, খাইবার সময় উন্টাইয়া গলায় পরিতে হয়। ঐ সব বৌঝিরা কখনও খাট হইতে নীচে নামিয়া বসে না। অলঙ্কার এবং দেহভারের বিপুলতায় তাহারা দর্শকমাত্রেরই বিস্ময় উৎপাদন করে। স্বতরাং আটগাছ। রূপার চুড়ি যখন সত্যই স্তাক্র বাড়ী হইতে প্রস্তুত হইয়া আসিল, তখন পুরাতন কাসার গহনাগুলিকে বিসর্জন দিতে ঝুলনী কিছুই আপত্তি করিল না। এই কিছুদিনের মধ্যেই তাহার মতামতের অনেক পরিবর্তন ঘটিতে আরম্ভ করিয়াছিল । সে হালফ্যাশানে চুল বাধে, কপালে এবং সীমন্তে সিন্ধুর ও টপের বাজার খুলিয়া আর বসে না। চিরকাল সাজিমাটি দিয়া অঙ্গ মার্জনা করিয়া আসিয়াছে, আজকাল সাবান ন হইলে তাহার চলে না। প্রথম প্রথম খোকাখুকীর কাপড়-কাচা সাবান যা দুএক টুক্‌রা বাচিত, তাহাই সে কাজে লাগাইত, অবশেষে সাহস করিয়া একদিন - মুক্তামালাকে বলিয়া ফেলিল, “ছোট বহুজী, আমায় একটা সাবান দেবেন ?” মুক্তামালাসিয়া বলিলেন, “কেন রে ?” SAMSMSAASAASAASAASAASAA হাতমুখ ধোবার জন্তে । আপনি সারাক্ষণ পরিষ্কার থাকৃতে বলেন কিনা।” মুক্তশমালা বিনা বাক্যব্যয়ে তাহাকে একখানা পামঅলিভ সাবান দান করিয়া ফেলিলেন। ঝুলনী একেবারে হাতে স্বর্গ পাইয়া চলিয়৷ গেল । রূপলাল বেচার স্ত্রীর এত দ্রুত পরিবর্তন বোধ হয় পছন্দ করিতেছিল না, কিন্তু শক্ত কথা বলিয়া বউয়ের বড় বড় চোখ জলে ভরাইয়া তুলিতে তাহার কষ্ট হইত। হাজার হউক ছেলেমানুষ, সাজসজ্জা করিতে ত তাহার ইচ্ছাই করিবে ! যেখানে যেমন দেখে তেমন শেখে । কাজেই যতক্ষণ নিতান্ত অন্যায় কিছু না দেখিবে, ততক্ষণ ঝুলনীকে কিছু বলিবেই না স্থির করিল। এমন কি দুখান মোটা শাড়ী, যাহ। মাত্র সে ছয় মাস আগে কিনিয়া দিয়াছে, যাহার মেটে গোলাপী রং এখনও মান হয় নাই, তাহাই যখন ঝুলনী ফিরিওয়ালাকে দান করিয়া ফুল-কাট আয়না এবং বাহারের চিরুণী কিনিল, তখন রাগে তাহার কণ্ঠরোধ হইয়া আসা সত্বেও রূপলাল কিছু বলিল না। কিন্তু ঝুলনী একদিন বড়ই বাড়াবাড়ি করিল। কানের বড় বড় কাসার “তড় কি” খুলিয়। ফেলিয়া আব্দার ধরিল যে,সোনার ইয়ারিং না হইলে সে কানে কিছুই পরিবে না রূপলালের ত টাকার অভাব নাই, কত টাকা সে স্বদে থাটায়, কাঠের বাক্সে তাহার গেজে-ভরা টাকা ঝুলনী কতদিন দেখিয়া ফেলিয়াছে। ঝুলনীকে কি পনেরো টাকা দিয়া একজোড়া ইয়ারিং সে দিতে পারে না ? মরিয়া গেলে টাকা কি সে পুটুলী বাধিয়া সঙ্গে লইয়াযাইবে ? রূপলাল আর থাকিতে পারিল না । গালি দিতে দিতে একগাছ লাঠি লইয়া ঝুলনীকে তাড়া করিয়া গেল। কিছু সে বলে না বলিয়া এমনি বাড়ই বাড়িয়াছে ? ঝুলনী উৰ্দ্ধশ্বাসে পলাইয়া গিয়া মুক্তামালার ঘরে আশ্রয় লইল । তাহাকে কাদিতে দেখিয়া অবাক হইয়। মুক্তমালা জিজ্ঞাসা করিলেন, “হঠাৎ কাদতে কাদতে ছুটে ७लि 6य ? कि छ्य्प्लएझ् ?”