পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] ভরণী ভাৰ্য্যা 8.5% fন্তু এ যে বিষম বাড় বাড়ান ! সোনারূপার জিনিষ চুরি রু হইল, ইহার পর গলায় ছুরি দিলেই হয় । পুলিশ কিবেন বলিয়াও ভয় দেখাইলেন। বড়বউ মনে নে কি ভাবিতেছিলেন বলা যায় না, তবে মুখে তিনিও ছাটবৌএর সঙ্গে যোগ দিলেন। রূপলাল সব চাকরবাকরের প্রতিনিধি হইয়া বলিল, ছোট বহুম আমি এই বাড়ী কাজ করে করে চুল iাকিয়েছি, অন্যরাও আপনাদের নিমক খেয়ে, এমন কাজ কখনও করবে না । কিন্তু আপনাদের যখন সন্দেহ ংচ্ছে, তখন পুলিশ ডেকে আগে আমাদের বেইজং ন৷ করে, নিজেবা খুজে দেখুন। আমরা সব এখানে দাড়াচ্ছি, গবি দিয়ে দিচ্ছি, বড় খোকাবাবুকে নিয়ে আপনার লব তল্লাস করে দেখুন। যদি কারও কাছে কিছু পাওয়া মায়, তখন পুলিশ ড়েকে ধরিয়ে দেবেন।” মুক্তণমালা এতই চটয়াছিলেন যে, সত্যসত্যই তিনি চাবি লইয়া চাকরদের ঘর তল্লাস করিতে গেলেন । বল বাহুল্য কোথাও কিছু পাওয়া গেল না। লাভের মধ্যে একজন চাকর সেই রাত্রেই পলায়ন করিল, এবং বাকি সকলেও চলিয়া যাইবার ইচ্ছা থাকিয়া থাকিয়া প্রবলভাবে প্রকাশ করিতে লাগিল । চার পাচ দিন এইভাবেই কাটিয়া গেল। বাড়ীর খাইবার ঘর নীচের তলায়। ছোটবাবু আগে খাইয়া কলেজ চলিয়া যান, বড়বাবুর একটু দেরি হয়। মুক্তামালা স্বামীকে খাওয়াইবার জন্য নীচে নামিয়াছিলেন। হঠাৎ তিনি একলাফে চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া পড়িয়া বলিলেন, “ঐ ঘা ভুলে হতবাক্সট খুলে ফেলে রেখে এসেছি।” ছোটবাবু বলিলেন, “এততেও তোমাদের শিক্ষা হয় না । এই রকম অসাবধান বলেই ত চাকরবাকর আস্কার পায় ।” মুক্তামালা তাড়াতাড়ি উপরে উঠিয়া গেলেন । ঝুলনী টেবিল চেয়ার আলমারী প্রভৃতি ঝাড়িয়া, মুছিয়া - পরিষ্কার করিতেছিল। মুক্তামালাকে দেখিবামাত্র সে তাড়াতাড়ি কি একটা জিনিষ আলমারীর নীচে গু জিয়া দিল। মুক্তামালা যেন কিছু দেখিতে পান নাই, এমন ভাৰে হাত বাক্সের কাছে গিয়া ডালা খুলিয়া ফেলিলেন । কোনো জিনিষ নড়াচড় হইয়াছে বলিয়া বোধ হইল না। তখন বাক্স বন্ধ করিয়া ঝুলনীকে বলিলেন, “ধা ড রে নীচে খেকে বেহারীকে ডেকে নিয়ে আয়, আমাদের একটা জিনিষ কিনতে হবে।” ঝুলনী নীচে চলিয়া যাইতেই তিনি আলমারীর তলা হইতে কাগজে-মোড় জিনিষটা বাহির করিয়া ফেলিলেন । তাহারই মাথায় পরিবার ছোট একট। ব্লোচ, ব্লাউঞ্জের গায়ে কয়েক দিন আগে তিনি সেট গুঙ্গির রাধিয়াছিলেন, তাহার পর আর সেটার খোজ করেন নাই । মুক্তামাল রাগে দুঃখে প্রায় কালিয়া কেলিবার জোগাড় করিলেন। তিনি মরেন ইহার হইয়া ঝগড়া কমিয়া, আর তলে তলে কিন৷ মুখপুড়ীর এই কাণ্ড । ঝুলনী এই সময় ফিরিয়া আসিয়া বলিল, “আসছে ম৷ বেহারী।” কিন্তু মুক্তামালার হাতে কাগজে মোড়া ব্রোচ দেখিয়াই সে একেবারে থতমত খাইয়া গেল । মুক্তামালা ধমক দিয়া বলিলেন, “এসব কি কাণ্ড রে শয়তানী ? পেটে পেটে তোর এত বিদ্যে ।” ঝুলনী কোণে দাড়াইয়া হাউ হাউ করিয়া কাদিতে আরম্ভ করিল। মুক্তামাল জানূল দিয়া ঝুকিয়া পড়িয়া ডাকিলেন, “রূপলাল, রূপলাল!” রূপলাল তাড়াতাড়ি উপরে উঠিয়া আসিল । হাপাইতে স্থাপাইতে জিজ্ঞাসা করিল, “কি হয়েছে ছোট বঙ্কমা ?” মুক্তামালা ব্রোচটা বাড়াইয়া ধরিয়া বলিলেন, “এইট তোমার বউ কাগজে জড়িয়ে আলমারীর তলায় লুকিয়ে রেখেছিল, আমি টেনে বার করেছি।” রূপলাল কপালে এক চড় মারিয়া মাটিতে বসিয়া পড়িল। মুক্তামাল। ঝুলনীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন এমন কাজ করলি বল ত ? তুই কি খেতে পাস না, না পরতে পাস না ? ঝুলনী কাদিতে কাদিতে যাহা বলিল তাহার অর্থ এই যে, সে চুরি করিবার জন্য ব্রোচটা অালমারীর নীচে রাখে নাই। ব্রোচট। মেজের ওপর পড়িয়াছিল, পাছে ঝাট দিবার সময় চলিয়া যায়, এই ভয়ে সে সেটাকে কাগজে