পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8సిe দিলে তার রক্ষা নেই। পরিধেয় বস্ত্র নেই, শত তালি, শত গ্রস্থিবিশিষ্ট বস্ত্রে আর লজ্জানিবারণ হয় না । এমনি কত কি । দেবার আর কিছুই নেই, অথচ দিতে যে হবেই। এই এক ভাবনায় মমতার মাথাটা এমন ঘুরে উঠল যে, সে ঝুপ করে দালানে বসে পড়ে, থামের খুটিতে মাথা রেখে চোখ বুজল । শ্বশুরের রেখে যাওয়া এই দু'হাজার টাকার ঋণ ছাড়া আর কিছু ছিল না । ভরসা স্বামীর ত্রিশ টাকা বেতনের একটি চাকরী। তা ও আজ ছয়মাস তিনি চাকরীশূন্ত — বেকার । নিজের গায়ে একখানি গয়না নেই—দেনার স্বদে স্বদে সব নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। তবুও বাচতে হবেই—আর রাধতে খেতেও ঠিক তারি জন্যেই হবে । দোকানে ধার মেলে না। তবুও চাই যেমন করে হোক। নিজের না হোক, স্বামীর জন্য—শিশু পুত্র কন্যাদের জন্যও অন্তত: চাই । মুনভাত—ফ্যান-ভাত যা হোক এক্ষণি চাই । ছেলে মেয়ে দুটি সেই সকালে দুটি বাসি ভাত খেয়ে খেলা করতে গিয়েছে। এবার এসে ক্ষুধায় আর দাড়াতে পারবে না। যে করে হোক, ধার করে ভিক্ষা করে তাদের দুটি না খেতে দিলে ত চলবে না। মমতাকে উঠতেই হ’ল । প্রথমটা মাথা তুলে সোজা হয়ে বসে সে একবার চারিদিকে চাইল । তারপর একটা দীঘনিঃশ্বাস মোচন করে ধীরে ধীরে উঠে দাড়াল । ঘরের ঘটিবাটি তৈজসপত্র সব বিক্রী হয়ে গিয়েছিল । এমন কিছুই ছিল না, যা দিয়ে তাদের জননী আজ দুটি বুভূক্ষিত শিশুর মুখে আহাৰ্য্য জোগান। রৌদ্রে উঠানটা ভরে উঠেছে । চৌবাচ্ছায় জলের কল দিয়ে জল পড়ার শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছিল না । মমতা কলতলায় গিয়ে, প্রথমে খুব খানিকট। আঁজলা পুরে জল খেয়ে নিল। তারপর ছেড়া কাপড়থানাই ভাল রকম গুছিয়ে নিয়ে সদর দ্বারটা খটু করে খুলে বের হয়ে গেল । প্রবাসী—শ্রোবণ, ১৩৩৭ ASA SSASAMMAMSAASAASAAASAAA SAS A SAS SSAS SSAS SSASAAA AAAA AAAMMMMAMMMMMAMMAMAAA AAASA SAAAAS AAAAAMAMAMMMMAAASAAAS [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড ર - মমতাদের বাড়ীর পাশেই জমিদারের মস্ত বাড়ী । সেখানে তখন তক্তপোষের উপর ফরাসপাতা বিছানায় ডজনখানেক তাকিয়া ঠেস দিয়ে ডজনখানেক লোক তবলা, বায়, ডুগি, এসরাজ, হারমোনিয়ম, এই-সব নিয়ে গান-বাজনায় রত ছিল । শীঘ্রই জমিদার-পুত্রের উৎসাহে তাদের থিয়েটার পাটীৰ্ণ খোলা হবে, তারই রিহাসর্ণল চলছিল ! মমতা সেইখানে গিয়েই সোজা হয়ে দাড়াল । জমিদারপুত্র হতে সকলেই চমকে উঠল । প্রথম মমতাই কথা বলল। তার চোখে পলক ছিল গলার স্বরও বেশ স্পষ্ট স্থির । “বাৰু আমরা বড় গরীব। দয়া করে চারটি টাকা দিন না।” - ঘরের সবাই নিস্তব্ধ হয়ে তার দিকে চেয়ে রইল। সকলেই মমতাকে চিনত, ভদ্র গৃহস্থ বধু সে । সে যে কতখানি অভাব-অসুবিধায় পড়ে আজ ভিক্ষার্থ নিজে এসে দাড়াতে পেরেছে, তা সবাই বুঝল । জমিদার-পুত্র একটু তোতলার মত বলে উঠলেন, “তুমি-আপনি–নিজে এসেছেন কেন ? যান যান আমি চাকরের হাতে আপনার যা’ যা দরকার পাঠিয়ে দিচ্ছি।” মমতা বেশ অবিচলিতভাবেঙ্গ বলল, “না আমায় চারটি টাকা দিন তাহলেই হবে ।” জমিদার-পুত্র পকেট হতে তাকে চারটি টাকা বের করে দিলেন। প্রসারিত দক্ষিণ হস্তথানায় অকুষ্ঠিত ভাবে নিয়ে মমতা চলে এল । জমিদার-পুত্রের চোখের চাহনির তলায় যে একটা গুপ্ত দৃষ্টি উকি মারছিল, টাকা দেবার সময় অলক্ষ্যে তার হাত যে তার হাতখানা স্পর্শ করেছিল, তা দেখে ও সে গ্রাহা । করল না । তারপর চাল এলো --ডাল এলো—সামান্য তরি-তরকারি ও মাছ এলেী । রান্না হ’ল । কিন্তু মমতার সেই স্তব্ধ শুষ্ক মুখ আর মৌন প্রখর দৃষ্টি কিছুতেই বদলাল না। সন্তানদের খাইয়ে শুইয়ে রেখে স্বামীর অন্নব্যঞ্জন न |