পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q>や বড়-বেী একপাশে হাসিমুখে দাড়াইয়াছিল, সে অপুকে ছোট দেখিয়াছে, এখন আর তাহাকে দেখিয়া ঘোমটা দেয় না। সৰ্ব্বজয় বলিল, এবার ও এসেছে বেীমা, এবার কালই কিন্তু । অপু নিকটে গিয়া জিজ্ঞাসা করিল—কি খুড়ীম, কাল কি ? বড়-বেী হাসিম বলিল, দেখে কাল আজ বোলবো না তো ? খিচুড়ী খাটতে ভালবাসে বলিয়া সৰ্ব্বজয়া অপুকে রাত্রে খিচুড়ী রণধিয়া দিল, পেট ভরিয়া খাওয়া ঘটিল এই সাত আট দিন পরে আজ মায়ের কাছে । সৰ্ব্বজয় জিজ্ঞাসা করিল, হা রে সেখানে খিচুড়ী খেতে পাস্ ? অপুর শৈশবে তাহার মা শত প্রতারণার আবরণে নগ্ন দারিদ্র্যের নিষ্ঠুর রূপকে তাহদের শিশুচক্ষুর আড়াল করিয়া রাখিত, এখন আবার অপুর পালা। সে বলিল— হু, বাদল श्लई श्रिहुड़ी হয় । --কি ডালের করে ? — মুগেরই বেশী, মুহুরীরও করে, খাড়ি মূমুরী। —সকালে জলখাবার খেতে ছায় কি কি ? অপু প্রাতঃকালীন জলযোগের এক কাল্পনিক বিবরণ খুব উৎসাহের সহিত বিবুত করিয়৷ গেল । মোহনভোগ, চা, এক একদিন লুচিও দেয় । খাওয়ার বেশ সুবিধা । প্রতির টুইশানি কোন কালে চলিয়া গিয়াছে, কিন্তু অপু সেকথা মাকে জানায় নাই, সৰ্ব্বজয়া বলিল—ইারে তুই যে সে মেয়েটি পড়াসূ-তাকে কি বলে ডাকিস্ ? খুব বড়লোকের মেয়ে না ?. – তার নাম ধরেই ডাকি— - —দেখতে শুনতে বেশ ভাল ? — বেশ দেখতে— —ই রে তা তোর সঙ্গে বিয়ে দেয় না ? বেশ হয় তী হ’লে— অপু লজ্জারত্ত মুখে বলিল, ই-তা তারা বড়লোক আমার সঙ্গে—তা কি কখনও—তোমার যেমন কথা ! সৰ্ব্বজয়ার কিন্তু মনে মনে বিশ্বাস অপুর মত ছেলে পাইলে লোকে এখনি লুফিয়া লইবে । অপু ভাবে, তবুও প্রবাসী - শ্রাবণ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড তো মা আসল কথা কিছুই জানে না! প্রীতির টুইশানি থাকিলে কি আর না খাইয়া দিন যায় কলিকাতায় ? অপু দেখিল সে যে টাকা পাঠায় নাই, মা একটিবারও সে কথা উত্থাপন করিল না, শুধুই তাহার কলিকাতার অবস্থানের সুবিধা অসুবিধ সংক্রান্ত নানা আগ্ৰহ-ভরা প্রশ্ন । নিজেকে এমনভাবে সৰ্ব্বপ্রকারে মুছিয়া বিলোপ করিতে তাহার মায়ের মত সে আর কাহাকেও এপর্য্যন্ত দেখে নাই । সে জানিত এ লইয়া বাড়ী গেলে ম। কোনো কথা তুলিবে না । সৰ্ব্বজয় একটা এনামেলের বাট ও গ্রাস ঘরের ভতর হইতে আনিয়া হাসিমুখে বলিল—এই দ্যাথ এই দুপান। ছেড়া কাপড় বদলে তোর জন্যে নিইচি–বেশ ভাল, না ?..কত বড় বাটটি দ্যাগ । অপু ভাবিল-—ম যা দ্যাথে তাই বলে ভালো, এ আর কি ভালো, যদি আমার সেই পুরনো দোকানে কেনা প্লেটগুলো ম। দেথ তো ! কলিকাতার সে দুরূহ জীবন-সংগ্রামের পরে এখানে বেশ আনন্দে ও নির্ভাবনায় দিন কাটে রাত্রে। মায়ের কাছে । শুইয়া সে আবার নিজেকে ছেলেমানুষের মত মনে করে, ব’লে সেই গানটা কি মা, ছেলেবেলায় তুমি আর আমি শুয়ে শুয়ে রাত্রে গাইতাম—এক একদিন দিদিও—সেই চিরদিন কখনও সমান না যায়—কছু বনে বনে রাখালেরি সনে কন্তু বা রাজত্ব পায়— পরে আবদারের স্বরে ব’লে—গাও না মা গানটা ? সৰ্ব্বজয়া হাসিয়া বলে –ইঁ্য, এখন কি আর গলা আছে—দৃর— —এস দুজনে গাই—এস না ম—খুব হবে, এস— খুব নীচু স্বরে দুজনে গানটা গায় । সৰ্ব্বজয়ার মনে আছে অপু যখন ছোট ছিল, তখন কোনো মেয়েমজলিসে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের গান সেখানে হয়ত হইত, অপুর গল ছিল খুব মিষ্ট, কিন্তু তাহাকে প্রথমে কিছুতেই গান-গাওয়ানে। যাইত না – অথচ যেদিন তাহার গান গাহিবার ইচ্ছা হইত, সেদিন মায়ের কাছে চুপি চুপি বার বার বলিত আমি কিন্তু আজ গান গাইবো ন বলে৷ মা। অর্থাং সেদিন লোকে এক-আধবার বলিলেই সে