পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা । কষ্টিপাথর পুরাণে রাঢ়ের ইতিহাস (૭૧ নিরঞ্জনের উন্ম হইয়াছিল। কপট ব্রাহ্মণের অত্যাচার হেতু “খৰ্ম্ম হৈল জবন রূপি, মাথাএত কাল টুপি, হাতে সোভে কিচি কামান । চাপিঅ' উত্তম হয় ত্রিভুবনে লাগে ভয়, খোদায় বলিয়া এক নাম । দেউল দেহীরা ভাঙ্গে কাড্যা কিড্যা থায় রঙ্গে, পাথড় পাখড় বোলে বোল । জতেক দেবতাগণ হয়্যা সম্ভে এক মন, প্রবেশ করিল জাজপুর।” প্রথমে মালদহ ধ্বংস হইয়াছিল। তারপর যাজপুর + কবি লিপিয়াছেন, “নিষ্কাম দুর্বল নারী বলবান দ্বারা গ্রস্ত হইলে ধমচুত হয় না ; প্রায়শ্চিত্ত দ্বারা শুদ্ধা হয়" (প্র । ৬১. ক্ল। ৪৭ )। এই ব্যবস্থা দুই স্থানে আছে । অনেক নারী দুবৃত্ত দ্বার। ধর্ষিতা ন হইলে প্রায়শ্চিত্তের কথা উঠিত না, ধর্ষিতার অতিনাদে সমাজও চমকিয়া উঠিত না। এই “বলবান", হিন্দু বোধ হয় না, হিন্দু হইলে নরককুণ্ডে স্থান হইত। ধর্ষিত নারী শূদ্র কিংবা অস্ত্যজ বোধ হয় না ; কারণ তাহীদের প্রায়শ্চিত্ত কি আছে । দেবীবর ঘটক সাক্ষী আছেন, কুলীন ব্রাহ্মণের বিবাহের মেল বন্ধনে দোষে দোষে জুখিয়াছেন। যবনদোষ অনেক ব্রাহ্মণকুল স্পর্শ করিয়াছিল। তথাপি পুরাণকারের চৈতন্য হয় নাই, কোন কোন জাতির নামে ক্ষিপ্ত হইয়া জাতিকে জাতি নরককুণ্ডে ফেলিয়াছেন । তিনি বিপ্ৰ, হরিভক্তি-পরায়ণ, বৈষ্ণবের প্রতি শ্রদ্ধালু । কিন্তু বৈষ্ণবোচিত দৈন্য, দাস্ত, কারুণ্য সর্বভূতে দয়। পুরাণের কুত্রাপি লিখিতে পারেন নাই । তিনিই লিগিয়াছেন, “আচারে ব্যবহারে চ জ্ঞায়তে হৃদয়ং মৃণামূ' ( প্র॥৬০ ) । প্রতি মঙ্গলবারে যোষিৎ দ্বারা শুভ মঙ্গলচণ্ডিকার পূজা করাইতেছেন, সামবেদের কৌখুন্ন শাখ। ধরিয়া ষষ্ঠ পূজা, মনসাপুঞ্জ, শারদীয় মহাপূজা করাইতেছেন, একবার নয়, দুই তিনবার ; অজ, মেষ, মহিষ, গণ্ডার বলিদান দেখিতেছেন, নিরবলি না বলিয় এক নুতন ‘মায়াতি’ নামে সংশুদ ক্রয় করাইতেছেন প্র । ৬৪ ) । নন্দরাজ ইন্দ্ৰযজ্ঞ করিবেন, আজ মেঘ মহিষ গণ্ডক বলির সহিত যেtলটি ‘মায়াঠি লইয়া গিয়াছেন ( কু । ২১ ) । এ সবে দোল নাই, নৃত্য-গীত-বাদ্যের সঙ্গে “কৃষ্ণকীৰ্ত্তন" থাকিলেই স্থান পবিত্র প্র॥৪৪ )। বৈষ্ণব পুরাণে এ কি ব্যাপার, বুঝিতে পারি না। বোধ হয় কবি মনে মনে বৈষ্ণব হইয়াও তৎকালের শক্তি-পুজা উপেক্ষা করিতে পারেন নাই । তাহীর রাজা শাক্ত ছিলেন । ক্ষত্রিয়ের চিরদিন শাক্ত কিংবা শৈব । পরমাশ্চর্য, এই অরাজককালে দলে দলে কবি জন্মিয়৷ রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলার গান বঁাধিতে বসিয়াছিলেন। সেই এক তাল, এক হর, এক ভাব । সে সহস্ৰ পিষ্টপেষণ-শব্দ শুনিবার শ্রোতাও ছিল । রসিক জনে রসাস্বাদন করুন, রাষ্ট্রীয় ইতিহাসে এই রস অতিনিদ্রা, অপার নৈরাষ্ঠের প্রতিক্রিয়া, “দুদিন বই ত নয়” । কবি তৎকালের চিত্র গোপন করেন নাই । লিখিয়াছেন, ( ব্র॥১০ ), “যাহার সহিত বন্ধুত হয়, তিনি মিত্র। মিত্র সম্বন্ধ ত্রিবিধ-বিদ্যাজ, উৎপত্তিজ, ঐতিজ। ঐতিজ-সম্বন্ধ সুদুলভ। আর এক সম্বন্ধ আছে, সেটি নামসম্বন্ধ । জারোপপতি বন্ধু, স্বামী তুল্য । ( বৈষ্ণবপদের “বঁধু" ) উপপত্নী ‘নবজ্ঞা' (নয়ানী ) গৃহিণীসমা । এই সম্বন্ধ সর্বদেশে বিগর্হিত বটে, কিন্তু দেশভেদে মহৎ দ্বারাও দুস্ত্যজ হইয়াছে। তবে কি না, যুগে যুগে বিদ্যমান আছে, ‘তেজীয়সাং ন দোষায়', তেজস্বীর পক্ষে দোষ নাই ।” বোধ হয়, এই দোষের প্রতিকারে “মহানির্বাণ তন্ত্রে"র শৈব

  • কেহ কেহ এই যাজপুর রাঢ়ে খুজিয়া পায় নাই। সে যাজপুর এখন দাদপুর নামে খ্যাত । (জ স্থানে দ হয়, যেমন বীরভূমের যুবরাজপুর’ এখন দুবরাজপুর হইয়াছে। ) উত্তর রাঢ়ে দাদপুর নামে অনেক গ্রাম আছে দুই একটা "দাউদপুর” হইতে পারে। এই যাজপুর ত্ৰিবেণীর কিম্ব কালনার নিকটবৰ্ত্তীর্ণ দাদপুর। পাওয়ার নিকটেও এক দাদপুর অাছে ।

حين حسينيس عيساوثة MMMAM MeAM SMAMAMAAA AAAAA বিবাহের উৎপত্তি। সে বিবাহে বন্ধু’ ও ‘নবজ্ঞা থাকিত না, বিবাহিত পতিপত্নী হইত। পুরাণে অবস্য বহু ধর্মোপদেশ আছে। কবি বহুবার নরককুও বর্ণনা করিয়াছেন, চৌরাশি কুণ্ডের দুই অধিক ছিয়াশি কুণ্ডে কত ছিয়াশি পাপকৰ্মাকে কতবার ফেলিয়াছেন তাহীর সংখ্যা নাই । ইহাদের অধিকাংশ চোর ; পুংশ্চলীও অল্প নয়। দারুণ দুঃসময়ে অন্নাভাবে ব্রাহ্মণ ম্লেচ্ছসেবী, যবনসেবী, মীজীবী, যবনভাষাপাঠী, হরিমন্ত্রবিক্রয়ী, বৈদ্যোপজীবী চিকিৎসক, গণক দৈবজ্ঞ, শূত্রের পাকোপজীবী স্বপকার, ধাবক, শূদ্রযাঙ্গী, শূদ্রের শবদাই, বৃষবাহ ও নিষিদ্ধ দ্রব্য ব্যাপারী, ইত্যাদি হইয়। বিপ্রের অনুচিত কর্ম করিতেন। কবি অর্থকষ্ট নিবারণের উপায় করিলেন না, নরককুণ্ডে ফেলিতেছেন । শূত্রের দীনগ্রহণ ব্রাহ্মণের নিষিদ্ধ। ব্রাহ্মণকে দান করিতে ক্ষত্রিয় ও বৈষ্ঠের জন্য নানাবিধ দানের পুণ্য বীর বীর অজস্র কীর্তন করিয়াছেন। কিন্তু তাহাদেরও অবস্থা ভাল ছিল না, ধর্মভাবও দুর্বল হইয়াছিল।--• ব্রাহ্মণ-কন্যা কখনও সুলভ ছিল না, কন্য। ক্রয়-বিক্রয় ইদানী নুতন নয়। কন্যাপণের কারণ.এখন আছে, তখনও ছিল । তদুপরি, কুলীন ও মৌলিক, ভাগ দ্বারা বরকন্ত। নুনাধিক হইয়া পড়িল, কুলীন বর বহু স্ত্রী পাইত, লষ্টত, মৌলিক একটিও পাটুত না , পুরাণকার দরিদ্রের অভাব দেখিলেন না লিখিলেন, যে জ্ঞান-দুর্বল ব্রাহ্মণ শুদ্ৰপত্নী গ্রহণ করে, সে কুন্তীপাকে পচিতে থাকে (ব্র । ২০ ) । কবি তেজীয়ানের ‘নবজ্ঞা সহিতে পারিতেন, শুদ্ৰাকস্থা বিবাহে অধীর হইয়াউঠিয়াছেন। কোন কোন ব্রাহ্মণ কম্বার শূদ্রপতি হইত, যদিও কদাচিৎ।-- আদি ব্রহ্মবৈবত পুরাণের দেশ ও কাল –এই পুরাণ এত রূপান্তরিত হইয়াছে যে ইহার নুতন ও পুরাতন অংশ পৃথক করিবার উপায় নাই। রাঢ়ীয়,একাধিক কবি পুরাতন পরিবতন ও নুতন শ্লোক যোজন করিয়াছেন । এই কারণে বতর্মান সংস্করণে এত পুনরুক্তি ঘটিয়াছে। কোনও কবি একই বিষয় দুইবার লেখেন না। এই পুরাণে দ্বিরুক্তি দশ বারটা পাওয়া যাইবে, কোণ পাপে কোন নরকভোগ, গণিলে চারি পাচটা হইবে। আদি পুরাণে অষ্টাদশ সহস্ৰ শ্লোক ছিল, তাহ। এই পুরাণেই লিখিত আছে, অন্য পুরাণেও আছে । কিন্তু বতর্মান সংস্করণের সম্পাদক ! তর্করত্ব মহাশয় ] ইহাতে একবিংশতি সহস্ৰ শ্লোক গণিয়াছেন । কিন্তু সহস্ৰ শ্লোক প্রক্ষিপ্তের পরিমাণ নয় । পুরাতন অষ্টাদশ সহস্ৰ শ্লোকের অনেক শ্লোক গিয়াছে , তাহদের স্থানে নুতন শ্লোক বসিয়াছে। “পুরাণ নিরীক্ষণ" লেখক শ্ৰীযুত গুঞ্চনখ কালে মহাশয় নারদ পুরাণ প্রদত্ত অনুক্ৰমণিকার সহিত বতর্মান মিলাইয়৷ দেপাইয়াছেন, গণেশ-খণ্ড ও কৃষ্ণজন্ম খণ্ড, মাত্র এই দুই খণ্ড অনুক্ৰমণিকা অনুযায়ী আছে । আমারও মনে হইয়াছে, গণেশখণ্ডে হস্তক্ষেপ অল্প হইয়াছে : কৃষ্ণজন্মখণ্ডে তদপেক্ষণ অধিক, অন্ত দুই খণ্ডে মূল রূপ অল্পই আছে। অনুক্ৰমণিকা দ্বারা প্রক্ষিপ্তের পরিমাণ সম্যক বুঝিতে পারা যায় না।-- (১) গীতগোবিদের মঙ্গলাচরণ 'মেধৈর্মের্ভুরমম্বরং ইত্যাদি শ্লোকের বিষয়টি এই পুরাণেই পাওয়া যায় (কৃ। ১৫) অন্য পুরাণে নাই। গীতগোবিন্দ দ্বাদশ খৃষ্ট শতাব্দে রচিত। অতএব পুরাণের উক্ত অধ্যায় এই শতাদের পূর্বে ছিল। (২) এই পুরাণে যতমান প্রচলিত পুঙ্গর পঞ্চদেবতার অতিরিক্ত বহ্নি দেবতা আছেন। বহুস্থানে ঘটদেবতার পূজা করিতে বলা হইয়াছে (প্র। ৪, প্র। ২৩)। মাত্র একটি স্থানে সৌর গাণপত্য শৈব শাক্ত বৈষ্ণব, এই পঞ্চদেবতার পঞ্চ উপাসক সম্প্রদায়ের