পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

68२ জানিস্ এ দৃষ্টি আমি উত্তরাধিকারস্থত্রে কৃষ্ণ-সখার কাছ থেকে পেয়েছি। খুব সম্ভব সেদিন পাঠশেষে তুমি উদ্দেশে কবিগুরুর পায়ে শত শত প্রণাম নিবেদন করেছিলে । মনে পড়ে সব ? তোমায় বিরক্ত করছি না ত ? দীর্ঘকাল পরে তোমায় পেয়ে আমার কত কথা মনে পড়ছে। অনেকদিন প্রাণ খুলে কথা কইতে পারি নি। এখানকার এ একঘেয়ে জীবন আর ভাল লাগে না। সারাটা দিন সেই রোগী দেখl, তাদের ওষুধ-পথ্যের ব্যবস্থা করা—নীতি-কথার মতই তেতো মনে হয়। রাস্তায় লোক-চলাচল বেশী নেই—মাঝে মাঝে দূরাগত দু’চার জন পথিক তাদের পদচিহ্ন একে দিয়ে কোন স্থদুরে মিলিয়ে যায়—কে জানে ! مهره یح -ه ওই দেখ অদূরে পাহাড়টা কেমন ঝুকে পড়েছে, যে-কোনো মুহূৰ্ত্তে ও যেন আমাদের উপর ধসে পড়বে—তাই দিনরাত্তির শাসাচ্ছে, যেন আমাদের গুড়িয়ে মারাই তার মতলব ! হাসপাতালে রোগীর ভিড় তেমন নেই, যে কয়জন আছে, তাদের সে বিচিত্র অভিযোগের অদ্ভুত বিবরণ শুনে শুনে কান ঝালাপালা হয়ে যায়- তাদের মেজাজই যেন পাওয়া ভার ! তাদের চিকিৎসা করবার সুযোগ দিয়ে যেন তারা আমায় কৃতাৰ্থ করেছে, পান থেকে চূণ থসলেই অনর্থ, শাপমল্লিরও সীমা নেই। যেন তারা সব আমার মেয়ের বিয়েতে বরযাত্রী এসেছে। রবিবারে হাসপাতালে কাজের ভিড় একটু কম থাকে । তাই সেদিন আমার শান্তির যেখানে শেয বিছানা বিছিয়ে দিয়েছি, সেই পাহাড়ের গায়ের সেই থানটায় গিয়ে একটু বসি । শাস্তি কে ? জিজ্ঞাসা করছ ?-- শান্তি আমার একমাত্র কন্যা, চার বছর হ’ল এক মেঘেভর বৃষ্টিঝর অপরাহ্লে তাকে চিরদিনের মত হারিয়েছি । সে দিনটির কথা আজও স্পষ্ট মনে আছে । কিছুদিন থেকেই তার ক্ষয়রোগ হয়েছিল। নিজে চিকিৎসক, চিকিৎসার যে তেমন কোনো ক্রটি হয়েছে তা বলতে পারি নে, তবে সেবাশুশ্ৰুষার যে প্রতিপদে ক্রটি হয়েছিল সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এক প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩৭ ASMMMSMMMMMMMMMMMMMAMMAMMAAA SAAAAA AAAA AAAAMMAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAAMMMMAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAA AAAAS AAAAAS AAAAAMiASAMMMM MMMMMMMMAMMMAMAMMMMAMMMASAMMMAMAAAS ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড মানুষ, সব সময় নিয়মিত ওষুধপথ্য দিতে পারতাম না। ঘরে স্ত্রী আছেন বটে, কিন্তু তিনি সপত্নী-কন্তীর সেবা করতে গিয়ে দুরারোগ্য ব্যাধি অর্জন করতে প্রস্তুত ছিলেন না । বিশেষত রোগীর সেবা করা তাকে মোটেই পোষীত না । - সেদিন সকাল থেকেই থেকে থেকে জল ঝরছিল, সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎও চমকাচ্ছিল। এক একবার এক একটা বজ কড়, কড় শব্দে কানে তালা লাগিয়ে দিছিল। শাস্তি সজল চক্ষে গলা জড়িয়ে আমায় অঁাকড়ে ধরল। আমি নীরবে অশ্রশূন্ত চোথে তার সামনে বসে ছিলাম। আমি তখন কোনো একটা বিশেষ কিছু ভাবছিলাম না—মনট। নেহাতই যেন ফণব । ক্রমে চারদিক নীরব নিস্তব্ধ হয়ে এল, কেবল মাঝে মাঝে বৃষ্টির ঝটকা বদ্ধ-জানলার শাসিতে এসে পড়ে প্রকৃতির নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করছিল। সেদিন স্ত্রী তার মাসতুত ভায়ের মেয়ের পুতুলের বিয়েতে যোগদান করবার জন্যে তার দাদার বাড়ীতে গিয়েছিলেন। একটু পরেই জল থেমে গেল, আমার একটু অমনোযোগিতার ফঁাকে শান্তি যে কথন । আমায় অশাস্তির পাথারে ফেলে রেখে চলে গেল, তা জানতেও পারলাম না। তখনও সে কিন্তু আমায় জড়িয়ে ধরেই ছিল, চোখের শেয অশ্রুবিন্দু তখনও তার গাল থেকে নিঃশেষে শুখিয়ে যায় নি । তাকে ওখানে ঐ শিউলি ফুলগাছটর তলায় পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছি, তারপর ঐ যে দেখছ সমাধিফলকখানা, ও তারই স্মৃতির জন্য বানিয়েছি। প্রতি রবিবার সকালে ঐ শিলাখণ্ডের সামনে বসে অনেকটা সময় কাটাই, নিজের মনে ফুল দিয়ে প্রস্তর ফলকখানাকে সাজাই । আমার বিশ্বাস—বিশ্বাস কেন, আমি ঠিক অনুভব করি যে, শান্তি অদৃশুলোক থেকে সেই সময় আমার পাশে এসে উপস্থিত হয় । সে যেন আস্তে আস্তে অামার গলা জড়িয়ে ধরে বলে, ‘বাবা, কেঁদ না, আমি ভাল আছি, আর কোনো অস্থথই আমার নেই।’ অদূরে খ্ৰীষ্টানদের কবরখানায় একটি আধা-বয়সী স্ত্রীলোক কালে পোষাক পরে প্রতি রবিবারই প্রাতে এসে উপস্থিত হয়। কবরের উপরকার প্রস্তরফলক শাদা