পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] গেছেনও শেষ পর্যন্ত। পরে একদিন অনেকেই ব্যাকুল হয়েছিল ঘনিষ্ঠত করার জন্যে । কিন্তু তিনি আর ফিরেও চাইলেন না। তার কাছে জানা, অজানা, দূর, নিকট, সবই যেন এক হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় পাশের বাড়ীর একটি মেয়ে আসত পড়তে, শেলাই শিখতে, বিমল্লার কাছে। পায়ে গল ঝুম্ ঝুম্ করছে, কানে মাকুড়ি । তার নাম ছিল একটা মস্ত বড় ভজকট, সাধি। কি বাঙ্গালীর জিবে তার উচ্চারণ হয় । তাই বিমলা তার নাম দিয়েছিলেন— রঙ্গিণী । রঙ্গিণী পাচ বছর বয়সে বিধবা হয় । সমাজে বিধবা বিয়ে মান ছিল ন । রঙ্গিণীরও মা ছিল না, ছিল তারও এক বহু দূর সম্পর্কের মাসী। তার বাপ যে কোথায়, বেঁচে, কি মরে, —তই কেউ জানত না । বিমলার স্নেহে রঙ্গিণী ক্রমেই যেন এ বাড়ীর মেয়ে হয়ে গেল, সে খাস। বাংলা বলতে কিন্তু ওদের লাগল ; কানের মাকৃড়ি খুলে বাঙ্গালীর কাপড় পরে, সে ঠিক বাঙ্গালী সবের নন্দিনীট হয়ে পড়ল । বিমলা শেষ পর্য্যস্ত রঙ্গিণীকে স্কুলে দিয়ে তাকে মানুষ ক’রে তোলার পথে নিয়ে চলেছিলেন । লোকে যেন ভুলেই গেল যে, রঙ্গিণী অঙ্গু ডাক্তারের বাড়ীর মেয়ে নয়। ডাক্তারবাবুর ক্রমে এমন প্রতিপত্তি হ’য়ে গেল যে, তাকে খুসী করার জন্যে রঙ্গিণীর মাসী রঙ্গিণীকে ফিরে চাইতেও সাহস করলে না। এমনি ক’রেই দিন কেটে যেতে লাগল। দুই ভাই ললিত আর মোহিতের পার্থক্যটা প্রায় আকাশ-পাতাল দাড়াল। ললিত শাস্তশিষ্ট একেবারে পুরোপুরি সাধুসজ্জন। দেখতে দেখতে টপাটপ, পাশ করে ব্যারিষ্টার হ’তে বিলেত চলে গেল। সে রঙ্গিণীকে ভালবাসত। যাবার সময় অনেক আদর করে বলে গেল, রঙ্গিণী ভাই, তুই ভাল করে থাকিস, লেখাপড়া করিস্। আমার যখন টাকা হবে তখন তোকে সঙ্গে করে বিলেত দেখিয়ে আনব । রঙ্গিণী কেঁদে ফেলে বললে, কিন্তু ললিত দাদা, তুমি রঙ্গিণী ്.ംു.ു.ു.-ാം് കാണു (t®oፃ eeeAAMAAMAeAMAMAMAMAMMAMAMAMAMAAAA যদি আসতে দেরী কর ত ভারি রাগ করব আমি, অন্য কোথাও চলে যাব । ললিত তার গালে আদর করে চড় মেরে বললে, ছি: রঙ্গু, অমন কথা কি বলতে আছে, পাগলী ? পাগলী সেদিন কেঁদেই ফেলেছিল। তার বুকের যে কত বড় ব্যথা, সে ললিত বুঝতে পারেনি। ললিত জানত যে রঙ্গিণী তাকে ভালবেসেছিল । তাকে সে সম্পূর্ণ নিজের মনে কবত । তার কারণও ছিল । বিমল মাঝে মাঝে যদি মনে করিয়ে দিতেন যে, রঙ্গিণী পরের ঘরেব মেয়ে ত সে পী ছড়িয়ে ব’সে প্লাদত,—বিনিয়ে বিনিয়ে বলত, আমি অন্য কোনো ঘরে সাব না । তখন অস্থ ডাক্তার বলতেন, আড়া : ষ্ট এসে তাকে আদ্রর করে সাসনি কোথাও, ললিড়ের সঙ্গে তোর বিয়ে দেব । বিমল বলতেন, তা কি হয় ? ও যে...। সে কথা চাপ দিয়ে অস্ব ডাক্তার বলতেন, খুব হয়, সব হয়, মাহুষ মনে করলে কি না হয় ? এসব কথার গভীর অর্থ ছিল । তলায় তলায় ললিত আর রঞ্জিণীর প্রাণে প্রেমের র্যাস জডিয়ে দিত। কিন্তু মোহিত হল একটা জানোয়ার । এ রকম বদরাগী মানুষ পুথিবীতে কম এসেছে। লেখাপড়ায় ফোর্থ ক্লাসেই গোফ উঠলো। আর ইস্কুলে যেতে লজ্জা হ’ত । তাই সে তারপর জীবনের পাঠ নেবার জন্যে পুথিবীর এমন কোনো জায়গা বাদ রাখলে না যে, পরে কোনদিন আক্ষেপ করতে হয় । কিন্তু এসব কাপতেনি করতে হ’লে টাকার দরকার ত ? সেই বা আসছে কোথেকে ? অবশেষে সে বিমলাকে ধরলে, বাবাকে বলে আমাকে একটা ওষুধের দোকান ক’রে দাও, মাসী ! বিমলা বললে, এ সব কথার মধ্যে, আমি বাইরের মানুষ, আমার থাকা উচিত নয়, মোহিত । মোহিত রাগে জ্ঞানহারা হয়ে বললে, জানি, জানি তোমার সব বাইরের মানুষী, লোকে কি বলে শুনে