পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

©Ꮼb~ প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড AMMeA SAMA AMAMMAMAMMAMAMAMAMAMMAMS MAMAeMMMAAAA আলস্তকে তিনি প্রাণের সহিত ঘৃণা করিতেন। বিশৃঙ্খলতা তাহার ছিল না। নিজের কাজ নিজে গুছাইয়া করিতেন । অলস ব্যক্তি কখনও সময়মত কাজ করিতে পারে না। কিন্তু মামার দৈনন্দিন কাৰ্য্য দেখিয়৷ অন্যের ঘড়ি মিলাইতে পারিত, একথা বলিলে অত্যুক্তি হইবে না। র্তাহাকে কোনো পুস্তকের বিষয় জিজ্ঞাসা করিলে শায়িত থাকিলে ও তৎক্ষণাং উঠিয়া যাইয় বই লইয়া আসিতেন । শত সহস্রবার ইহা প্রত্যক্ষ করিয়াছি। মামাকে দেখিয়া বুঝিয়াছি মাতুষের শক্তি তার দেহে নয়— মাথায় । মাথাটা শরীরের ক্ষীণতার অনুপাতে এমনই বড় ছিল যে, পাগড়ী পরিয়া দাড়াইলে তাহাকে পাঞ্জাবী, শিখ বলিয়া মনে হওয়া অস্বাভাবিক ছিল না । ঠাণ্ডা লাগ্নিবার ভয়ে শীতে তিনি পাগড়ী পরিতে বাধ্য হইতেন । মামা মনের জোরে বাচিয়া থাকিতেন ইহাই বিশ্বাস করিতে হয় । আহার-বিষয়ে এমন সংযম ও লোভদমন দেখা যায় না । ভ্রাণ ও স্বাদ গ্রহণ শক্তি ছিল অত্যধিক। সন্দেশ চাখিতে দিলে চুষিয়া ফেলিয়৷ দিতেন । বলিতেন, ‘জিনিষটা কি তা ত জানাই হ’ল, থাইয়া পেট ভারী করিবার প্রয়োজন কি ? এই আহারংঘমই তাহাকে বামটি বংসর বঁাচাইয়। রাগিয়াছিল এবং এই অনাহারজনিত শীর্ণতার জন্যই কোন ওষুধপথ্য পরিণামে কাৰ্য্যকরী হইল না, ইহাই অভিজ্ঞদের অভিমত । র্যাহার। তাহার খাদ্যের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন র্তাহার। সকলেই বিস্ময় প্রকাশ করিতেন, কি করিয়া তিনি এত বৎসর ধরিয়া এমন গুরুতর মানসিক শ্রম করিতে সমর্থ হইয়াছেন । হস্তপদাদির পরিচালন শক্তি যখন চলিয়া গেল, তখনও মস্তিষ্কের ক্রিয়ার বিরাম হয় নাই । বসিবারও শক্তি নাই, শুইয়া শুইয়া বাড়ীর প্রত্যেক মানুষটির স্বানাহারের খবর লইতেছেন, মনোমত না হইলে ব্যবস্থা করিতেছেন। মৃত্যুর পূর্বদিনও যে-বন্ধু তাহাকে সকালে টাটুকা গরুর দুধ খাওয়াইতেছিলেন, মাখনওয়ালাকে ডাকিয়া উক্ত বন্ধুকে ঘি করিয়া দিবার জন্য মাখনের ফরমাস দিলেন এবং আদেশ দিলেন যে, একটা নূতন বয়েল কিনিয়া তাহাকে ঘি উপহার দিতে হইবে। যখন সামর্থ্য ছিল, নিজে যাইয়া দেখিতেন কে কি খাইতেছে। এখন শুইয়। শুইয়াই বলিয়া পাঠাইতেন যে—যাহ আছে তাহা যেন সকলেই সমানভাবে ভাগ করিয়া খায় । পুরুষেরা খাইয় গেলে যা থাকে তাই নারীরা খাইবেন, এই ব্যবস্থা তিনি একেবারেই পছন্দ করিতেন না। এজন্য কত সময়ে না র্তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে থাইতে হইয়াছে। কোনো কাজই নিজে হাতে না করিলে তাহার তৃপ্তি হইত না ! অন্যের সাহায্য লইতে তিনি নারাজ ছিলেন। মাম: আমার কেবল দার্শনিক পণ্ডিত ছিলেন না, সাংসারিক সকল কাজেই পটু ছিলেন । জামা কাপড় মোজা নিজে হাতে রিপু করিতেন। আমরা যদি করিতে চাহিতাম, বলিতেন, তোমরা পরিবে না । তার নিজের হাতে তৈয়ারী মশারি আজও ঘরে রহিয়াছে। উঠিবার ক্ষমতা নাই, “মেজদি বতের ব্যথায় কষ্ট পাইতেছেন”—আমনি উঠিয়া নিজ হস্তে ওষুধ প্রস্তুত করিয়া দিলেন । ওষুধ প্রস্তুত করিয়াই ক্ষান্ত নন, ওষুধ নিয়ম-মত ব্যবহার করা হইতেছে কি না তাহার খোজও লইতেন। তিনি যখন একেবারে অসমর্থ হইলেন তখন আমি বলিলাম—ইজিচেয়ারে মাথার কাছে শুইয়৷ থাকি । মাম তখন অশ্রনয়নে বলিলেন—“ম, আমার অকুতাপের মাত্র আর বাড়িও না।” দুদিন আগে বলিলেন— “আমার জন্য তোমরা বড়ই কষ্ট পাইতেছ। আর বেশী দিন নাই—দু একদিন মাত্র।” কথা অক্ষরে অক্ষরে ফলিল, তৃতীয় দিন আসিতে দিলেন না। অন্তের কষ্ট দেখিতে পারিতেন না, কিন্তু নিজের কষ্টসহিষ্ণুতা ছিল অসাধারণ। এই যে এতদিন ভূগিলেন, একদিনের তরে একট। উঃ আঃ কাতরোক্তি সজ্ঞানে অজ্ঞানে মুখ দিয়া বাহির হয় নাই । শুশ্ৰুষাকারীদের পক্ষে বিপদ হইত। একদিন গভীর নিঝুম রাত্রে আমরা আস্তেই বলিয়াছিলাম – মামার ত কোনো সাড়া নাই। বিছানা হইতে উত্তর আসিল—“আ-মি ম-রি নাই।” মৃত্যুর দিন প্রথম রাত্রিতে র্তাকে জানাইলাম, কাল ডাক্তার আনিয়া পরামর্শ করা যাইবে । তিনি বলিলেন—আর কি হবে ? তাহার কথা তখনও বুঝি নাই । শেযরাত্রে মাসিমাকে ডাকিয়া বলিলেন—মেজদি, বিনো ধীরেনবাবুর