পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

C: 8 প্রবাসী—শ্রাবণ, )99Q কোৰ্বাও গাযে দেয় । বয়স্ক নারীর হাটে সওদা করিতে যাইবার কালে মাথায় পাগড়ী বাধিয়া থাকে ] অলঙ্কারের মধ্যে সৰ্ব্বাগ্রে দৃষ্টি আকর্ষণ করে, ইহাদের কর্ণভূষণ । হালাম নারীদের এক এক কানে দুইটা করিয়া ছিদ্র দেখিতে পাওয়া যায় । কানের উপরদিককার ছিদ্রটি ছোট, কিন্তু তেলোর ছিদ্রটি মস্ত বড়। রূপ দস্তা অথবা টিনের তৈয়ারী একটা অলঙ্কার কানের উপরিভাগে পরানো থাকে আর তেলোর ছিদ্রের ভিতর আন্দাজ দুই ইঞ্চি ব্যাসের একট। গোল রূপার চাকুতি পরানো থাকে। এই গহনাগুলির দরুণ হ’লাম নারীদের কানগুলি ভারী বিশী দেখায় । প্রত্যেক হালাম নারীই রূপার তৈরী একপ্রকার হার এবং কুঁচি, গিণ্টি,কুঁচ ইত্যাদির মালা গলায় পরে। অবস্থাপন্ন নারীরা টাকা আধুলি এবং সিকিতে পোড় বসাটা দ্বাররূপে গলায় পরিয়া থাকে । বাহুতে কোনো গহন পরিবার রেওয়াজ ইহাদের নাই। ইহার কেশে এবং কর্ণ ভূষণে বনফুল পরিতে বড়ই ভালবাসে। যুবতীর বনফুল দিয়া একে অপরের কেশবিন্যাস করিয়া দেয় । হালাম-পুরুষদের কানে পিতলের অঙ্গুরীয় এবং গলায় তুলসীর মালা । হালাম স্ত্রী-পুরুষ বালক-বালিকা সকলেই মদ্য এবং ধূমপানে আসক্ত । ইহাদের হকাগুলি অদ্ভূত ধরণের। মোট একটা বাশের চোঙের ফুটার মধ্যে সরু আর একটি চোঙ বসানো থাকে। ঐ ছোট চোঙটির উপর কলিকা বসাইয় তাহার। ধূম পান করে। ভাত পচাইয়া ইহারা মদ তৈয়ার করে । পালা করিয়া এক একদিন এক এক বাড়ীতে মদ প্রস্তুত হয় । বাড়ীর উঠানের মধ্যে মদ্যপূর্ণ বড় বড় মৃৎপাত্র বসানো থাকে এবং স্ত্রী-পুরুষ সকলে সেগুলার চারিদিকে মণ্ডলাকারে বসে ও একটা সরু বাশের.নল মুৎপাত্রের ভিতর ঢুকাইয়া মদ্যপান করে । মদ খাইবার সময় কথা বলা কিংবা বঁ। হাত দিয়া নল ছোয়৷ ইহারা মহা দূষণীয় বলিয়। মনে করে । কচি কচি ছেলে মেয়েদের পর্য্যন্ত মদ্যপান এবং ধূমপান করিতে দেখা যায়। শূকর এবং কুকুটমাংস ইহাদের অতি প্রিয় খাদ্য। কলাগাছ টুকরা টুকরা করিয়া কাটিয়া বেত ও মরিচচূর্ণ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড ংযোগে ইহার এক অপূৰ্ব্ব ব্যঞ্জন তৈয়ার করে। ইহারা কাচা মাংস মরিচচূর্ণের সহিত ছেচিয়া এবং আগুনে পোড়াইয়া থাইতে খুব ভালবাসে। খাওয়ার পর কাহারও পাতে কিছু উদ্ব ত্ত থাকিলে পরিবেশনকারিণী তাহা তুলিয়া লইয়া যায এবং অপরকে তাহা পরিবেশন করে । খাওয়া-দাওয়া চুকিলে একখানা কাপড় দিয়া উচ্ছিষ্ট ঝাড়িয়া মাচার নীচে ফেলিয়া দেয়। ইহাদের মধ্যে খাওয়ার পর ত্যাচাইবার রেওয়াজ নাই । হালাম যুবক-যুবতীদের মধ্যে অবাধ মেলামেশা প্রচলিত আছে। বিবাহের আগেই যুবক-যুবতীদের মধ্যে প্রণয় হইয়া থাকে । গভীর রজনীতে বাড়ীর সকলে নিদ্রিত হইলে পর প্রণয়ীর নিজ নিজ প্রণয়িনীর সহিত দেখা করে । আগেকার দিনে হালাম যুবকের মাথায় দীঘ কেশ রাথিত । তখন প্রণয়িনীরা বাশের কাকই দিয়া তাহাদের মাথার চুল আঁচড়াইয়া খোপা বধিয়া দিত । বিবাহের আগে বরকে কনের বীপের বাড়ীতে পাচ বছর জন থাটিতে হয়। এই পাচ বছর বর কনে স্বামী-স্ত্রীর মত একত্রে বাস করে। খাটুনির মিয়াদ ফুরাইলে বরের পিতা মদ্য সহ (কমপক্ষে বারে কলস ) কনের পিতার বাড়ীতে আসিয়া হাজির হয় । সেখানে সকলে মিলিয়। মদ্যপান করে । মদ্য-পাত্রসমূহের নিকটে একটা থালার উপর কিছু তুলা বিছানো থাকে। কনের জ্ঞাতি-সম্পৰ্কীয় ভাইরা ইচ্ছামত টাকা, আধুলি সিকি ইত্যাদি ঐ খালার উপর রাখে—এ সমস্ত কনের প্রাপ্য । কনের বাপের বাড়ী হইতে বরকনেকে একসঙ্গে কনের মামার বাড়ীতে যাইয়া কিছুক্ষণ থাকিতে হয় । তারপর বরের বাপ বরকনেকে লইয়া বাড়ীতে চলিয়া আসে। বিবাহের পর সাতদিন পৰ্য্যস্ত কনের পক্ষের বাপের বাড়ীর কাহারও মুখদর্শন করা না কি মহাপাপ । বর জন খাটিতে রাজি না হইলে কনের পিতাকে ষাট টাকা পণ দিতে হয় । মেয়ের অমত থাকিলে বাপ মা জোরজবরদস্তি করিয়া তাহার বিবাহ দিতে পারে না । ইহাদের মধ্যে সময় সময় বিবাহচ্ছেদ হইয়া থাকে। পরস্পরের মনোমালিন্তের দরুণ স্ত্রী যদি স্বামীর ঘর ছাড়িয়া