পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] চাপরাশি, সাহেবের প্রহারে তাহার কপালে যে জখম হইয়াছিল, তাহাই দেখাইল্প দিল । চ-কর সাহেৰ ইহ দেখিয়া মনে মনে হাসিয়া ভাবিল—“ড্যাম নেটিভগণ এইরূপ মিথ্যাবাদীই বটে।” দারোগ৷ লিখিয়া লইল—“বাদী কপালে জখম ও কাপড়ে রক্তের দাগ দেখাইল ।” এতেল গ্রহণ হইলে--পুলিস সাহেব হুকুম দিলেন--"আজ রাত্রেই যেমন করিয়া পার আসামী গ্রেপ্তার করিতে হুইবে । রাত্রে জামিন চাহিলে জামিন দিবে না।” হুকুম দিয়া চ-করকে শুভরাত্রি ইচ্ছা করিয়া পুলিস সাহেব প্রস্থান করিলেন। দারোগ। চা-কর সাহেবকে বলিল—“হুজুর আপনার এই চাপরাশিকে আসামী সেনাক্ত করিবার জন্ত একটু ছুটি দিতে হইবে।” "All right, চাপ রাশি যাও । দারোগী সাথ আসামী দেখলাও । চাপবশি বলিল-—“হজুর, অনেক ছেলে,তাহাতে রাত্রি হইয়াছিল । চিনিতে পারিব কি ?” সাহেব রাগিয়া বলিলেন—“শূয়ার নেহি পচানে সকো, হাম তুমকে ডিসমিস করেগ।" "বহুৎ খুব হুজুর”—বলিয়া চাপরাশি প্রস্থান করিল। দারোগ। তাহার সহিত আর কোন অনুসন্ধান মাত্র না করিয়া একবারে জাতীয় বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে গিয়া উপস্থিত হইল। শিক্ষকেরা তখন কেহ ছিলেন না। ছাত্রেরাও অনেকে অনুপস্থিত ছিল। একটি ঘরে চারি পাচটি ছেলে প্রদীপ জ্বালিয়া পাঠ মুখস্থ করিতেছিল, তাহীদেরই মধ্যে তিনজনকে চাপরাশি অমানবদনে সেনাক্ত করিয়া দিল। দারোগ হাহাদিগকে গ্রেপ্তার করিল। বলা বাহুল্য এই বালকগণের মধ্যে কেহ কিছুই জানিত না। বালকত্রয় বলিল—“দারোগ৷ সাহেব, আমাদের কেন গ্রেপ্তার করিতেছ ? আমরা কি করিয়াছি ?” দারোগ৷ বলিল—“কি করিয়াছ তাহা আদালতেই মালুম হইবে।” বলিয়া দারোগ তিনজন কনেষ্টবলের জিন্মায় তাহাদিগকে থানীয় পঠাইয়া দিল । তাহার পর দারোগা চাপরাশিকে সিপাতালে লইয়া গিয়1সরকারী ডাক্তারের দ্বারায় তাহার জথম পরীক্ষণ করাইয়া সার্টিফিকেট লেগাইয়। লইল । শেষে বলিল—“থানীয় চল ।" “কেন ?" “আসামী চিনিবার জগু ” “অসামী ত চিনিয়া দিলাম।” “আরে না না । ছেলেদের তাল করিয়া চিনির রাখিবে এস । কাল কোন ডেপুটীবাবু আসিলে অন্তান্ত ছেলেদের সঙ্গে তাহাদের মিশাইয়া দাড় করাইয়া দিবে। তথম তোমায় আসামী চিনিয়া বাহির করিতে হইবে । না পারিলে মোকৰ্দমা ফাসিয়া যাইবে, চালান হইবে না। থানায় এস, ভাল করিয়া সেই তিনজনকে চিনিয়া রাখ।’ “দেরী হইলে সাহেব গোসা হইবে যে ।” “যাও সাহেবের কাছে ছুটি লইয়া আইস ।” চাপরাশি গিয়া সাহেবের কাছে সকল কথা বলিয়া ছুটি চাহিল। সাহেব ছুটি দিলেন এবং মনে মনে বলিলেন—“ড্যাম নেটিভ পুলিস, এই *** dishonests to I" দারোগ। তখন, বাজার ও অন্তর হইতে আরও তিন চারিজন লোক এবং সওদাগরকে সাক্ষী-স্বরূপ ডাকাইয়া আনিল । পুলিসের শাসনে তাহারা যাহা দেখিয়াছে তাহ এবং বাহা দেখে নাই তাহাও সাক্ষী निष्ठ चैौकूठ हरैल । अtनक ब्रांख्रि श्रृंईjख थांबांइ बनिब्रां बांजक बब्राक চিলিয়াও লইল । খালাস &సెసి .يه مه চতুর্থ পরিচ্ছেদ এই মোকৰ্দমার বিচারভার পড়িল ডেপুটি নগেন্দ্রবাবুর উপর । সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়াছে। ডেপুটিবাবু কাছারী হইতে ফিরিয়া জলযোগাদি অন্তে, অস্তঃপুরের বারান্দায় বসির আরাম করিতেছেন। নগেশ্রবাবুয়ু গৃহিণী বিংশতিবর্ষীয় যুবতী। তাহার নাম চারশীল। চারুশীলা আসিয়া পতির পার্থে উপবেশন করিলেন ; বলিলেন—“আজি মনটা এমন ভার ডার দেখছি কেন ? ' নগেন্দ্রবাবু বলিলেন, “ন)—এমন কিছু নয়।” গৃহিণী কিন্তু শুনিলেন না। পীড়াপীড়ি করিতে লাগিলেন । শেষে ডেপুটীবাবু বলিলেন—“ছেলেদের মামলাটা, এত লোক থাকৃতে আমার ঘাড়েই চাপিয়েছে।” চারুশীলা বলিলেন—“তোমার কাছে হবে ? সে ত ভালই হ’ল । আমার বরং ভাবনা ছিল ।” “কি ভাবন?” : “যে কার কাছে বা মোকৰ্দমাট পড়ে, হয়ত সাহেবদের খুলী করবার জন্তে অবিচার করে ছেলে তিনটিকে জেলেই পাঠাবে। তোমার কাছে হ’ল, আমি নিশ্চিন্ত হলাম।” த 剑 তাহার স্বাধীনচিত্ততায় স্ত্রীর এই সরল বিশ্বাসে ডেপুটীবাবু মনে মনে হাসিলেন । বলিলেন,--“মুদি প্রমাণ হয়, তা হ’লে ত ছেলেদের সাজ দিতে হবে । আমি ত আর অবিচার করে তাদের খালাস দিতে পারব না।” চারুশীল। বলিলেন---“ছি ! অবিচার কেন করবে। যদি বাস্তবিক প্রমাণ হয়—ওরা আমার আপনার ছেলে হলেও আমি খালাস দিতে বস্তাম না। কিন্তু আমি যে রকম শুনলাম, ছেলেদের ত কিছু দেগধ নেই।” “কোথায় শুনলে ?” “এই সেদিন মুঙ্গেফবাবুর বাড়ীতে বউভাতে নিমন্ত্রণে গিয়েছিলাম। সেখানে অনেকে বলেন যে ছেলের চাপরাশিকে রাজি করে তার কাছ থেকে বিলিতি বিস্কুটের টন কিনে নিয়েচে ; নিয়ে ভেঙ্গেচে। কেড়েও নেয়নি, মারেও নি। তা ছাড়া যে তিনজন ছেলেকে পুলিশ ধরেছে তারা মোটে সেখানে ছিলও না, কিছুই জানে না।” ডেপুটীবাবু একটু দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন—“এ সকল প্রমাণ হয় তবে না।” ” “খুব প্রমাণ হবে। কত লোকে দেখেছে, কত লোকে জানে।” “আর যদি প্রমাণ না-ই হয়, তবে না হয় কিছু জরিমান করে ছেড়ে দিও । আহা ছেলেমানুষ, না বুঝে বদি একটা অন্যায় কাজ করেই থাকে, তবে কি তাদের জেলে দেবে, যেমন অন্ত কয়েক জায়গায় হ’য়েছে ?” কিন্তু ডেপুটীবাবুর মনের বিষ্ণতা দূর হইল না। এই সময় আৰ্দ্দালি আসিয়া একখানি পত্র দিল । ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব লিখিয়াছেন কল্য প্রাতে ৮টার সময় ডেপুটীবাবু যেন গিয়া সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করেন । পরদিন যথাসময়ে পোষাক পরিয়া নগেন্দ্রবাবু সাহেব ভবনে উপস্থিত হইলেন। অারও কয়েকজন ব্যক্তি দর্শনাধী হইয়। বাহিরে * বারান্দায় একখানি বেঞ্চির উপর বসিয়া অপেক্ষা করিতেছেন । নগেন্দ্রবাবু কার্ড পাঠাইয়া দিলেন। এক মিনিট পরে চাপরাশি আসিয়া উাহাকে অফিস কক্ষে লইয়া গিয়া বসাইল ও বলিল— “সাহেব ছোট হাজরী খাইতেছেন, এখনই আসিবেন।” সাহেব আসিয়া করমর্দন করির নগেন্দ্রবাবুকে বসাইলেন, বলিলেন—“এখন টাউনের অবস্থা কিরূপ ?”