পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] প্রণয়ন করিবার স্বাধীনতা নহে। প্রথমতঃ, ভারতীয় “প্রতিনিধি”দের মধ্যে মিল চাই। দ্বিতীয়তঃ, ভারত-পক্ষ ও ইংরেজ-পক্ষের মিল চাই । তাহার পর, যাহা উভয় পক্ষের মতাচুৰ্যায়ী ঠিক তদনুসারে পালেমেণ্টের বিল প্রণীত হইবে, লর্ড আরুইন এমন কোন প্রতিশ্রুতি দেন নাই । তিনি কেবল বলিয়াছেন, উভয়পক্ষের মতানুযায়ী জিনিষটিকে বিলের ভিত্তি করা হইবে । র্যাহার বিল রচনা করিবেন, তাহারা উভয় পক্ষের নিদ্ধারিত জিনিষটি হইতে র্তাহীদের পক্ষে সুবিধাজনক কেবল বা বেশী পরিমাণে এমন অংশগুলি লইতে পারেন, যাহা আমাদের পক্ষে সুবিধাজনক নহে। ংগ্রেস ও লণ্ডনের কনফারেন্স বড়লাটের বক্তৃতার ভাবট এরূপ, যে, কংগ্রেস ইচ্ছা করিলে লণ্ডনের কনফারেন্সে যোগ দিতে পারেন। আবার, সরকার পক্ষ হইতে এমন কথাও বলা হইয়াছে, যে, নিরুপদ্রব আইনলঙ্ঘন প্রচেষ্ট বন্ধ না করিলে মহাত্মা গান্ধীকে কনফারেন্সে যোগ দিতে আহবান করা হইবে না —যেন মহাত্মা গান্ধী কনফারেন্সে যাইবার জন্য সরকারপক্ষের পায়ে ধরিয়া পর্ন দিতেছেন! বাহা হউক, সকলে স্বীকার করুন বা না-করুন, ইহ নিশ্চিত, এরূপ কোন ব্যবস্থা নিৰ্ব্বিবাদে ভারতবর্ষে চালান যাইবে না যাহাতে কংগ্রেসের মত নাই—অর্থাৎ মহাত্মা গান্ধীর মত নাই । ইহা ভারতবর্ষের কংগ্রেসবিরোধী উদারনৈতিক দল জানেন এবং দেশবাসীকে ও গবন্মের্ণটকে স্পষ্টভাষায় বলিয়াছেন। গবন্মেণ্ট ইহা জানেন কি না বলিতে পারি ন—ৰ্তাহারা সম্ভবতঃ কংগ্রেসকে বাদ দিয়াই একটা কিছু চালাইতে চাহিবেন । কিন্তু ইহ নিশ্চিত, যে, তাহ চলিবে না। মণ্টেগু-চেমসফোর্ড শাসনপ্রণালী কংগ্রেসের মনঃপূত ছিল না, সুতরাং গবন্মের্ণট এপর্য্যস্ত বিনাবাধায় তদনুসারে কাজ করিতে श्रोर्ब्रन नाङ्गे । - গবন্মেণ্ট মনে করিতে পারেন, দমননীতি প্রয়োগ দ্বারা কংগ্রেসকে জনবলহীন ও কাবু করিয়া নিজেদের বিবিধ প্রসঙ্গ—কংগ্রেস ও লণ্ডনের কনফারেন্স 心》> অভিপ্রেত ব্যবস্থা চালাইবেন । কিন্তু যদিই কংগ্রেস আপাততঃ কাবু হয়, তাহা হইলেও পূর্ণস্বরাজলাভের চেষ্টা অদূর ভবিষ্যতে পুনঃপুনঃ হইতে থাকিবে। তাহাতে ইংরেজদের পক্ষে শাস্তিতে রাজত্ব করা চলিবে না, এবং ভারতবর্ষে বিলাতী জিনিষ বেচিয়৷ লাভবান হওয়াও চলিবে না। অতএব, কংগ্রেসের প্রতিনিধিদিগকে কনফারেন্সে লইয়া যাইবার চেষ্টা করা গবন্মেন্টের পক্ষে মুবুদ্ধির পরিচায়ক হইবে। লর্ড আরুইনের বক্তৃতার আগে, মহাত্মা গান্ধী এবং পণ্ডিত মোতীলাল কিরূপ সৰ্ত্তে কনফারেন্সে যোগ দিতে রাজী হইতে পারেন, তাহ বলিয়াছিলেন । আমরা মনে করি না, যে, লর্ড আরইন এমন কিছু নূতন কথা বলিয়াছেন যাহাতে মহাত্মা গান্ধী ও পণ্ডিত মোতীলালের মত বদলাইতে পারে । তথাপি, যদি সরকারপক্ষ মনে করেন, যে, ধড়লাটের বক্তৃতায় রাজনৈতিক সিচুয়েশুন বা পরিস্থিতির কিছু পরিবর্তন হইয়াছে, তাহা হইলে তাহার কংগ্রেসের নেতাদিগকে ঐ বক্তৃতা পাঠাইয়া দিয়া তাহদের মত জিজ্ঞাসা করিতে পারেন। কাগজে এইরূপ গুজব বাহির হইয়াছে, যে, ম্যাকডোনাল্ড সাহেব গান্ধীজীর নিকট কোয়েকার সম্প্রদায়ের একজন ইংরেজ দূত পঠাইয়াছেন, তাহা সত্য কি ন জানি না । কিন্তু মহাত্মাজী ভারতবর্ষে সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রভাবশালী ব্যক্তি হইলেও, তিনি কংগ্রেসকে নিজের মত জানাইতে পারেন, কংগ্রেস কি করিবেন সহকৰ্ম্মীদের সহিত পরামর্শ না করিয়া তাহা নির্দেশ করিয়া দিতে র্তাহার অনিচ্ছুক হইবারই কথা। অতএব পণ্ডিত জবাহরলাল নেহরু, শ্ৰীযুক্ত যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, শ্ৰীযুক্ত স্বভাষচন্দ্র বস্তু, মিঃ আব্বাস তৈয়বজী, শ্ৰীমতী সরোজনী নাইডু, পণ্ডিত মোতীলাল নেহরু, বাবু রাজেন্দ্র প্রসাদ, ডাক্তার সৈয়দ মামুদ প্রভৃতি ংগ্রেসনেভাদিগকে অন্তত: এক পক্ষ কালের জন্য মুক্তি দিয়া তাহাদিগকে পরস্পরের সহিত পরামর্শ করিবার স্বযোগ দিলে কংগ্রেসের কৰ্ত্তব্যনির্ণয়ের পক্ষে সুবিধা হয়। তাহা না করিলে, ংগ্রেসের প্রধান অধিকাংশ নেতাকে কারারুদ্ধ করিয়া