পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سالان প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩৭ [ ৩৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড مهمپیمم ماه معمبی কলেজের ছাত্রেরা চায়, সে সব স্কুলকলেজে হইতে পারে না। স্বতরাং “সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে,” এইরূপ বিদ্যালাভ আমাদের স্কুলকলেজসকলে প্রধানতঃ বা বেশী করিয়া হয় না। ছাত্রদের কতকটা অজ্ঞতা ঘুচে, কেরানীগিরি, পণ্ডিতী, মাষ্টারী, ওকালতী প্রভৃতি দ্বারা কিছু রোজগারের উপায় হয়, কিন্তু দেশের পক্ষে সকলের চেয়ে বেশী ধনাগমের উপায় শিখান হয় না, চারিত্রিক উন্নতিও কাহারও কাহারও হয়, ইতিহাস পড়িয়া বাহিরের বন্ধন হইতে মুক্ত হইবার ইচ্ছাও কাহারও কাহারও হয়, কিন্তু প্রচলিত স্কুল কলেজপাঠ্য ভারতেতিহাসগুলিতে অনেক মিথ্যা কথা থাকায় অনেক ছাত্রের খুব অনিষ্টও श्ख्न । এই সব কথা বিবেচনা করিলে মনে হয়, আমাদের স্কুলকলেজগুলি ছাত্রছাত্রীদিগকে তাহাদের ভবিষ্যৎ মনুষোচিত জীবনের জন্য প্রস্তুত করে, ঠিক একথা বলা চলে না। স্বতরাং ইহাও ঠিক্‌ বলা চলে না, যে, যেহেতু তাহারা অল্পবয়স্কদিগকে মানুষ করিতেছে অতএব তাহাদের এই মানুষ-করা কাজে কোন বাধা ন-জন্মানই উচিত । তথাপি, আমরা বরাবর ইহা বিশ্বাস করিয়া আসিয়াছি এবং বলিয়া আসিতেছি, যে, কতকটা জ্ঞান দিবার কতকটা মানুষ করিবার যখন অন্ত শিক্ষালয় আমাদের নাই, তখন যাহা আছে তাহাতেই ছাত্রছাত্রীরা কিছু শিক্ষা পাক্ । কিন্তু তাহাতেও ঐতিহাসিক মিথ্যাশিক্ষা ও কুশিক্ষার প্রশ্রয় কোনক্রমেই দে ওয়া উচিত নহে। ইহা গেল সাধারণ সময়ের ও সাধারণ অবস্থার কথা । কিন্তু এখন দেশের অবস্থা সাধারণ নহে, সময়ও সাধারণ নহে । কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইসচ্যান্সেলার আর্কার্ট সাহেব স্বয়ং একজন শিক্ষক—তিনিও ইহা স্বীকার করিয়াছেন। ছাত্রদের প্রতি র্তাহার ব্যবহার এবং তাহার প্রতি ছাত্রদের ব্যবহার যথাযোগ্য হইয়াছে। তিনি সীণ্ডিকেটের পক্ষ হইতে ছাত্রদিগকে সম্বোধন করিয়া যাহা লিথিয়াছেন, তাহাতে বলিয়াছেন, ইহা করা সাধারণ রীতি নহে, কিন্তু অসাধারণ অবস্থা উপস্থিত হওয়ায় তাহাকে ইহা করিতে হইতেছে । ইহার উত্তরে ছাত্রেরাও বলিতে পারে, তাঁহারা যাহা করিতেছে তাহাও দেশের অসাধারণ অবস্থার জন্য করিতেছে । যাহা হউক, এরূপ কথা-কাট-কাটি করা বা করিতে প্ররোচনা দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নহে। ছাত্রেরা যাহা করিতেছে, সে সম্বন্ধেই কিছু বলিতে চাই। যাহারা পরিশ্রম করিয়া, বেতন দিয়া ও পরীক্ষার ফী দিয়া পরীক্ষা দিতে আসিয়াছিল, পিকেটিং দ্বারা তাহাদের উদেশ্ব ব্যর্থ করা উচিত হয় নাই। মানুষের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়া হইয়াছিল বলিয়াই যে আমরা একথা বলিতেছি তাহা নহে ; কারণ, কখন কখন জোর করিয়াও মানুষকে কুকাজ হইতে নিবৃত্ত করা উচিত, যেমন বিষপান হইতে। কিন্তু ওকালতী পাশ করা বিষপানের তুল্য নহে। এবং সরকারী আদালতে এখন কেহ ওকালতী করিতে ন চাহিলেও স্বরাজের আমলে তাহার ওকালতী করার প্রয়োজন হইতে পারে। যাহার। পরীক্ষা দিতে আসিয়াছিল, তাহাদিগকে পরীক্ষা দিতে দিয়া পরে অন্ততঃ পরীক্ষার ফল বাহির না-হওয়া পৰ্য্যন্ত তাহাদিগকে কোন “দেশের কাজে' প্রবৃত্ত করিতে চেষ্টা করিলে চলিত না কি ? পরীক্ষার হলের সম্মুখে তাহাদিগকে যেমন এক জায়গায় পাওয়া গিয়াছিল, তেমন এক জায়গায় তাহাদিগকে পাওয়া না গেলেও তাহারা দুরধিগম্য নহে। পরীক্ষার পর যাহাদিগকে “দেশের কাজে পাওয়া যাইত না, পরীক্ষা দিতে না-দিয়া কি তাহাদিগকে পাওয়া গিয়াছে, বা পাওয়া যাইবে ? মানব প্রকৃতি সাধারণতঃ যেরূপ, তাহাতে যাহারা পরীক্ষা দিতে পাইল না তাহাদের বরং রাগ হইবারই কথা । তবে, এ কথা সত্য বটে, পরীক্ষাদানে বাধা পাইয়া যদি কেহ কেহ ওকালতীর ইচ্ছা ছাড়িয়া দিয়া দেশের ধনবৃদ্ধির কোন উপায়ে মন দেন, তাহাতে র্তাহাদের ও দেশের উপকার হইবার সম্ভাবনা আছে । - শিক্ষালয়সমূহে পিকেটিং করা সম্বন্ধে অনেক কথা ভাবিবার আছে। এই পিকিটিঙের উদ্দেশ্য কি স্কুলকলেজগুলি ভাঙিয়া দেওয়া ? এগুলি অবিমিশ্র অমঙ্গলের উৎপাদক নহে । স্বতরাং যদি ইহাদের জায়গায় উৎকৃষ্টতর কিছু প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত করা না যায়, তাহা হইলে এগুলি ভাঙিয়া দেওয়ার পক্ষপাতী আমরা নহি । কাগজে দেখিয়াছিলাম, আপাততঃ তিনমাসের জন্য শিক্ষা বন্ধ রাখিয়া ছাত্রদিগকে “দেশের কাজে লাগান পিকেটিঙেব উদেশ্য । সাধারণ ভাবে বলিতে গেলে ইহাতে আমাদের অমত না থাকিতে পারে। যুদ্ধের সময় বিলাতে ও ইয়োরোপের অন্ত অনেক দেশে বিস্তর ছাত্র শিক্ষালয়ের পরিবর্তে যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়াছিল। কিন্তু বঙ্গে যাহার। শিক্ষালয়ে যাইবে না তাহারা বাস্তবিকই কি “দেশের কাজ করিবে ? এই যে লম্বা গ্রীষ্মের ছুটি গিয়াছে, ইহার মধ্যে দেশের কতকগুলি ছাত্র তাহা করিয়াছে, অন্যেরা–বোধ হয় অধিকাংশ - করে নাই । সম্ভৱতঃ শিক্ষা বন্ধ করিলে অধিকাংশ ছাত্র আলস্তে কাল কাটাইবে, দেশের কাজ করিবে না। তথাপি, যদি কতক ছাত্রও করে, তাহ ভাল। কিন্তু তাহারা স্বাবলম্বী হইবেন। অভিভাবকের উপর নির্ভর করিবে ? তাহারা যাহা