পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭ર૦ [ ৩eশ ভাগ, ১ম খণ্ড জন্যই তাহারা উদ্বিগ্ন, ন নিজ নিজ অর্থাগমের পথ বন্ধ হওয়ার চিন্তাটাও তাহার মধ্যে আছে। ছাত্রের তিনমাস শিক্ষণ বন্ধ রাখিতে বলিতেছে। এমন কোন ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে হইতে পারে কি, যে, যাহারা সমস্ত সেগুনের বেতন দিবে, কিন্তু তিন মাস বা ছয় মাস পরে ক্লাসে উপস্থিত হইবে, তাহারাও পড়াশুনায় র্কাচ না থাকিলে যুথাসময়ে পরীক্ষা দিতে পারিবে ? কোন ছাত্রের সহিত আমাদের কথা হয় নাই, কিন্তু অনুমান হয়, যেসব ছাত্র নিজের দেশের কাজ কিছুদিন করিতে চায় তাহারা অন্য ছাত্রদিগকেও শিক্ষালয় হইতে দূরে রাখিতে চাহিতেছে এইজন্য, যে, সকলেরই সমান অবস্থা হইলে ভবিষ্যতে সকলের শিক্ষা ও পরীক্ষার একটা ব্যবস্থা হইতে পারিবে ; কিন্তু এখন যদি কতক ছাত্র ক্লাসে যায় তাহা হইলে অনুপস্থিত অম্ভদের ভবিষ্যতে কোন গতি হইবে না। ছাত্রছাত্রীদের কর্তব্য আমরা নিজে যেরূপ বিপদের সম্মুখীন হই নাই, অন্য কাহাকেও সেরূপ বিপদাশঙ্কার মধ্যে যাইতে বলা অকুচিত মনে করি। কিন্তু দেশের কাজ–বর্তমান অবস্থার উপযোগী অনেক কাজ-নিশ্চিত বিপদের মধ্যে ন। যাইয়াও করা যায়। তাহার একটি বলিতেছি । বোম্বাই হইতে কিছু দিন আগে খবর অtসিয়াছিল, যে, কৰ্ম্মীরা ঐ শহরের তিন লক্ষ লোকের নিকট হইতে কেবল স্বদেশী বস্ত্র ব্যবহার করিবার প্রতিজ্ঞা সংগ্ৰহ করিয়াছেন। ঐ শহরের লোকসংখ্যা মোটামুটি দশ লক্ষ। যে তিন লক্ষ প্রতিজ্ঞ সংগৃহীত হইয়াছে, তাহার মধ্যে অনেকগুলি যদি বাড়ীর কৰ্ত্তাদের নিকট পাওয়া গিয়া থাকে, তাহা হইলে বোম্বাইয়ের অধিকাংশ লোক স্বদেশী বস্ত্র ব্যবহার করিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াছে, বলিতে হইবে । বাংলা দেশেরও ছোট বড় সব শহরে ও গ্রামে বাড়ী বাড়ী গিয়া কৰ্ম্মীরা গৃহস্থদিগকে স্বদেশী বস্ত্র ব্যবহার করিতে অনুরোধ করিতে পারেন । যাহারা এই কাজ করিবেন, তাহীদের সঙ্গে বিক্রয়ার্থ দেশী কাপড় থাকিলে আরও ভাল হয় ; কেহ দেশী কাপড় কিনিতে চাহিলে তাহাকে তৎক্ষণাৎ দেওয়া চলে। অবগু সব রকমের কাপড় বা বেশী কাপড় কৰ্ম্মীর সঙ্গে রাখিতে পারিবেন ন-যাহ পারেন, তাহাই ভাল। যাহাদের কাপড় বিক্রী করিবার স্ববিধ বা ইচ্ছা হইবে না, তাহারা কেবল স্বদেশী বস্ত্র ব্যবহার করিতে সকলকে অনুরোধ করিয়া বেড়াইবেন । এই কাজ ছাত্রছাত্রীদের দ্বারাও র্তাহাদের অবসরসময়ে হইতে পারে। বঙ্গের অঙ্গচ্ছেদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় অনেক ছাত্র ‘স্বদেশী’ প্রচার এবং দেশী কাপড় বিক্ৰী করিতেন। মহেশচন্দ্র ঘোষ স্বপণ্ডিত ও সাধু শ্ৰীযুক্ত মহেশচন্দ্র ঘোষ বেদান্তরত্ব মহাশয় ৬২ বৎসর বয়সে হাজারীবাগে দেহত্যাগ করিয়াছেন । র্তাহার সম্বন্ধে অন্যত্র যে একটি কবিতা ও দুটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হইল, তাহা হইতে পাঠকের র্তাহার নিৰ্ম্মল চরিত্রের ও পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাইবেন। তিনি অকপট মানবপ্রেমিক ও ভক্তসাধক ছিলেন । সত্যের - সন্ধানে তাহার জীবন ব্যতীত হইয়াছে। প্রাচ্য ও প্রতীচ্য দর্শন ও ধৰ্ম্মতত্ত্ব বিষয়ে তাহার গভীর জ্ঞান ছিল ; তাহার লাইব্রেরী তাহার পরিচায়ক । অনেক ধনী লোক ঘর সাজাইবার আসবাব হিসাবে বহি কিনেন। তিনি ধনী ছিলেন না, পড়িবার জন্য বহি কিনিতেন । ডাকে প্রতিসপ্তাহে তাহার নিকট বহি আসিত। তাহার স্মৃতিশক্তি এরূপ ছিল, যে, আমরা র্তাহাকে তাহার জানা কোন বিষয়ে প্রশ্ন করিয়া চিঠি লিখিলে ফেরত ডাকেই, অনেক সময়ে ফুলস্কেপ কাগজের ৮১০ পৃষ্ঠাব্যাপী, উত্তর আসিত, এবং সেই উত্তরে বহু গ্রন্থ হইতে উদ্ধৃত প্রমাণ থাকিত । র্তাহার পরলোকগমনে প্রবাসী ও প্রবাসীর সম্পাদক একজন পরম হিতকারী ও অতি শ্রদ্ধাভাজন বন্ধু হারাইল । র্তাহার দানের মূল্য বুঝিতে শিক্ষিত সমাজের সময় লাগিবে। সরকারী দর কষাকষি বাংলা সরকারের প্রধান সেক্রেটারী হপকিন্স, সাহেব সম্প্রতি এই মৰ্ম্মের একটি সাকুলার জারী করিয়াছেন, যে, সরকারী কৰ্ম্মচারীদিগকে র্তাহীদের পোষ্য ও পরিবারবর্গের সকলের রাজনৈতিক মত ও কাজের জন্য দায়ী করা হইবে । এই সব গলগ্রহ’ লোকেরা ( 'dependants' ) নিরুপদ্রব আইন-লঙ্ঘন প্রচেষ্টায় যোগ দিলে, তৎসংশ্লিষ্ট সভাআদিতে উপস্থিত থাকিলে, কংগ্রেসের কোন কাজে চাদ দিলে, তাহীদের পালক চাকর্যেদের শাস্তি হইবে, ইহা ত স্বম্পষ্ট । অধিকন্তু সাকুলারটিতে আছে, যে, তাহারা নিরুপদ্রব আইনলঙ্ঘন প্রচেষ্টার সহিত সম্পর্কিত ( "allied” ) কোন প্রচেষ্টার সহিত সম্পর্ক রাখিলেও পালক সরকারী কৰ্ম্মচারীদের শাস্তি হইবে । হিন্দু সমাজে ও মুসলমান সমাজে এবং কোন কোন স্থলে দেশী খৃষ্টিয়ান সমাজেও বহু একান্নবৰ্ত্তী পরিবার আছে। একান্নবৰ্ত্তী পরিবারের কেবল কর্তা বা বয়োজ্যেষ্ঠ একজনই রোজগার করে এবং অন্যেরা তাহার আশ্রয়ে