পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐযতীন্দ্রমোহন বাগচী একটি করে’ তুণ একটি মাস বহি? চষ্ণুপুটে সযতনে, ছোট পার্থীদুটি বেঁধেছে নীড়খানি নিভূত ভাণ্ডীরবনে । ফুলের বুকে স্বখে দুজনে মধু খায়, ফুলেরই বাসে পাশে দুজনে ঘুম যায়, ভুলা’তে দুজনারে দুজনে গান গায়— দুজনে বসে’ তাই শোনে । ছোট্ট পাখীদুটি, কত-না আশা বুকে, বেঁধেছে ছোট বাসাখানি, বিরাট ধরণীর অজানা কোন, কোণে— কতই ছোট সে না জানি ! যতই ছোট হোক, ভাবনা-ভয়ে ভরা, ব্যথার কাটাঘরে নিয়ত বাস করা, কখন কোন দিকে কবে যে পড়ে ধরা— কে কোথা নিয়ে যায় টানি’ ! ভাটের থোকা ভরি’ বিকশে মঞ্জরী ফাগুনী হাওয়া গায়ে লেগে, পার্থীর বুকে ঠোটে দ্বিগুণ রং ফোটে কণ্ঠে সুর ওঠে জেগে ; তিনটি ছোট ডিমে ভরেছে বাসাখানি, শিয়রে জাগে তারি ছোট্ট দুটি প্রাণী, পাখাতে ঢাকি তারে আদরে লয় টানি’ অজানা ব্যাকুলত বেগে ! ক্ষুদ্র জীবনের মুগ্ধ খেলা হেরি’ রুদ্রদেব বুঝি হাসে ; দীপ্ত জ্যোতি তারি রৌদ্র-রূপধারী উৰ্দ্ধে ফুটে নীলাকাশে ! সংখ্যাতীত জীব পঙ্কে মাথা কুটে, উপরে নাকি তারি শূন্তে ফুল ফুটে ! নমিছে লীলা হেরি ভক্ত করপুটে, চক্ষু ধারাজলে ভাসে ! ভাটের ভাঙা বুকে এসেছে ভাটা পড়ে', ফুলের মেলা হ’ল কাণ ; কালোর পাল তুলে কালের বৈশাখী কাননে দিল আসি হান ; মোহের বন্ধনে দণ্ড যেন দিতে মাতিল সমীরণ গরজি’ ধরণীতে, কোথায় দুখস্থখ দুঃখস্থখাতীতে, কে করে কারে আজি মানা ! কোথায় গেল উঠে’ ভাটের খোলাভাটি, কোথায় গেল উড়ে পার্থী,— কোথায় গেল ভেঙে সাধের বাসাখানি, কোথায় শাখা, কোথা শার্থী ? বিধবা ডানাভাঙা লুটায় ভুয়ে পড়ি', শূন্তে উঠে হাসি 'হ-হায় হাওয়া ভরি’ ! বৈতরণীতীরে তরণী পার করি’ মরণে দিবি কে রে ফাকি !