পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যl ] রাঢ়ের কয়েকটি পল্লী ভ্রমণ &8ማት পথের একপাশ্বে দুইটি, অপর পার্শ্বে একটি অতি জীর্ণ শিবমন্দির গাছপালার মধ্যে অৰ্দ্ধ-আবৃত অবস্থায় রহিয়াছে। দুইটির মধ্যে এখনও লিঙ্গমূৰ্ত্তি বিরাজ করিতেছে, অন্যটির দ্বারসমীপে লতাগুল্মাচ্ছন্ন থাকায় নিকটে যাওয়া সম্ভবপর হইল না । মন্দিরগাত্রে ইটের কাজগুলি দেখিলে উহা যে এক সময় বিশেষ সৌষ্ঠবপূর্ণ ছিল তাহ বেশ বুঝা যায়। এখানে এখন আর কোনো লোকালয় দৃষ্ট হয় না। ইহা দেখিয়া আমরা আবার গাড়ীতে উঠিলাম। কিছু দূর যাইবার পর পথের পাশ্বে ঠিক বাম দিকে একটি প্রকাণ্ড র্তে তুলগাছের তলায় একখানি কারুকার্য্যময় মুচিকুণ কৃষ্ণবর্ণ বৃহদায়তনের প্রস্তরখণ্ড দেখিলাম । উহা দৈর্ঘ্যে প্রায় ৮ ফুট ও প্রস্থে দেড় ফুট। ইহার মধ্যভাগে | একটি দ্বিভূজ গণেশ-মূৰ্ত্তি আছে। অনেকেই অনুমান করেন ইহা ইন্দ্ৰেশ্বরের প্রবেশ-দ্বারের উদ্ধাংশ। ইহার গঠন এবং গণেশ-মূৰ্ত্তি দেখিয়। এ অহমানও সত্য বলিয়া মনে হয়। পূৰ্ব্বে যে হকুমানের লাঠির কথা উল্লেখ করিয়াছি, উহাকে কেহ কেহ রাজবাড়ীর থাম বলিলেও উহাও সুন্দরলাল তেওয়ারীর সমাধি-মন্দির-সংলগ্ন প্রস্তরলিপি মন্দিরের অংশ হওয়া বিচিত্র নহে। এই নিদর্শনগুলি যেন পূৰ্ব্ববৈভবের সাক্ষ্য দিবার জন্য আজিও বিলুপ্ত না হইয়া ধরাপৃষ্ঠে বিদ্যমান রহিয়াছে । এইগুলি হইতে ইন্দ্ৰেশ্বরের অতীত গৌরব, উহার প্রস্তরমন্দিরের স্ববৃহৎ আয়তন ও সৌন্দর্ঘ্যের কতকটা আভাস পাওয়া যায়। এখানে আরও কতকগুলি ছোট ছোট প্রস্তরখণ্ড প্রেথিত রহিয়াছে । এই গ্রামের নাম বেড়া বা বীরহাট । এখানে বৈদ্যনাথ সরকার নামক এক প্রবীণ গ্রামবাসীর সাক্ষাৎ পাইলাম । ইহার নিকটেই নিকারি পাড়ায় সাধক রামানন্দ রায়ের পঞ্চমুণ্ডী আসন ইন্দ্ৰেশ্বরের ঘাট ছিল, এইরূপ জনপ্রবাদ । পল্লীটি এ অঞ্চলে একটি পবিত্র স্থান। এককালে এথানে স্ববিখ্যাত সাধক রামানন্দ, পূর্ণানন্দ, সুন্দরলাল তেওয়ারী প্রভৃতির পাট ছিল । আমরা ভদ্রলোকটির সহিত এই সকল পবিত্র স্থান দেখিতে যাইলাম । স্থানীয় জমিদার মহাশয়ও আমাদের সঙ্গে ছিলেন। প্রথমেই সিদ্ধেশ্বরীতলায় রামানন্দের পাট দেখিতে গেলাম । স্নিগ্ধ পল্লীর তরুচ্ছায়াতলে একটি মন্দির পার্শ্বেইহা অবস্থিত। ইহা সিদ্ধেশ্বরী কালী-মন্দির। এখানে প্রতি বৎসর মৃন্ময়ী মূত্তি গঠিত হইয়া পূজা হইয়া থাকে। এই পূজার বৈশিষ্ট্য এই যে, একদিনের পরিবর্তে অমাবস্তা, প্রতিপদ ও দ্বিতীয় এই তিন দিবস এখানে পূজা হইয়া থাকে। কথিত আছে, সাধক রামানন্দ এই শু্যাম মায়েরই পুজা করিয়াছিলেন। সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের ঠিক উত্তরে রামানন্দ সিদ্ধিলাভ. করেন। তৃণশল্পসমাচ্ছন্ন তাহার পঞ্চমুণ্ডী আসন