পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

AMAeeAMAMMAMAMAAAA আমাদের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালও নয়। আমাদের মত অজ্ঞ ও অসমর্থ জাতির মাথায় এইরূপ সভ্যতার প্রচণ্ড বোঝা চাপাইয় দেওয়া হইয়াছে । তাই ভাবি ইহার শেষ কোথায় ? যদি বলা যায়, আমাদের নান৷ কুসংস্কার দূর করা হইতেছে। হইতে পারে, একথ আংশিক সত্য, কিন্তু গাছের আগাছা কাটিতে গিয়া, যে মালী গাছেরই মূলচ্ছেদ করে, আজ আমাদের শিক্ষকেরাও সেইরূপ করিতেছেন না কি ? কুকির মনে করিত, চুরি করিলে দেবতা রাগ করেন, আর দেবত রাগ করিলে শস্য হইবে না, এবং আরও নানা অমঙ্গল হুইবে । এই বিশ্বাসে কেহ কখনও চুরি করিত না । ইহা একটি কুসংস্কার । আর আজ যিনি খ্ৰীষ্টকে বিশ্বাস করেন— তিনি চুরি করুন, নানা অসৎ কাজ করুন, তাহাতে কোন আপত্তি নাই, তার জন্য যে খ্ৰীষ্টই দায়ী। তিনি ত তার আসন স্বর্গে রিজা করিয়া রাপিয়াছেন। সুতরাং যাহা প্রাণ চায় কর—কেবল খ্ৰীষ্টকেই বিশ্বাস করিলেই হইল । এই বিশ্বাসের নাম স্বসংস্কার। সভ্যতার উচ্চ সোপানে আমরা কিরূপ দ্রুত অগ্রসর হইতেছি, ইহ। তাহার একটি মাত্র নমুনা । দরকার হইলে এইরূপ উদাহরণ অসংখ্য দেওয়া যাইতে পারে । কুকিদের সত্যবাদিতা, সরলতা, সাধুতা, বিশ্বাসপরায়ণতা, আতিথেয়ত। প্রসিদ্ধ। কিন্তু এখন সভ্য হইয়া সত্যবাদী হইলে ব্যবসায়ই যে বন্ধ হইয় যায়। সরলতা, সাধুত ও বিশ্বাসপরায়ণতার কথা বলিবার দরকার নাই। এ সব ত বোকামি। নিজের আত্মীয়কুটুম্বও সব সময়ে গৃহে স্থান পান না, এই ত গেল আতিথেয়তা । সভ্যতা লাভ করিতে গিয়। আমাদের যা কিছু ছিল সবই হারাইলাম । গ্রামে গ্রামে স্কুল ও চার্চ আছে । লেখাপড়া শিথিবীর জন্য আমাদের জাতির কিরূপ উৎসাহ তাহা নিজে ন৷ দেখিলে বিশ্বাস করা যায় না । ৩০|৩৫ বৎসরের লোকেও ১০।১২ বৎসরের বালকের সঙ্গে লেখাপড়া করিতেছে, এরূপ দৃষ্টান্ত বিরল নহে। মিশনারী বিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোনও বিদ্যালয় পাহাড়ে নাই, মিশনারীদের বিদ্যালয়ে অখ্ৰীষ্টান কোন ছেলেমেয়ে পড়ে এরূপ কথা কখনও শুনি নাই । দেশীয় প্রচারককে পাস্তর বলে। গ্রামে গ্রামে পাস্তর আছে । এই পাস্তরগণ ও গ্রাম্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণই ধৰ্ম্ম প্রচার করেন, লোককে খৃষ্টান করিবার জন্য ও পাশ্চাত্য ভাব দিবার জন্য যে কিরূপ প্রোপ্যাগাণ্ড করা হয় তাহা বর্ণনা করা আমার সাধ্যাতীত। বলিতে গেলে সব সময় রুচি বা শ্লীলতা রক্ষ করা সম্ভব হইবে কিনা জানি না। আমরা অজ্ঞ, সাহিত্যহীন, নিরাশ্রয়, অরণ্যবাসী, নাবালক মাত্র। যে আমাদের সর্বস্ব হরণ করিতেছে তাহারই হাতে আত্মসমর্পণ করিতেছি । যে আমাকে, আমার পূর্বপুরুষকে, আমার দেশকে, শতমুখে নিন্দা করিতেছে—আমরা তাহারই সঙ্গে সহস্ৰমুখে আমাদেরই বাপান্ত করিতেছি ও মাথায় কুঠার মারিতেছি । এইভাবেই ধ্বংসের চরমসীমায় উপস্থিত হইয়া আমরা সভ্যতা পাইতেছি—অন্ধকার হইতে আলোকে যাইতেছি । (২) একটি ধৰ্ম্মহীন জাতিকে ধৰ্ম্মদান করা হইতেছে। আমরা কখনও ধৰ্ম্মহীন ছিলাম না। আমরা যদি ধৰ্ম্মহীন হই, তবে ভারতের ২০ কোটি হিন্দুর মধ্যে ১৫ কোটিই ধৰ্ম্মহীন । হইতে পারে, আমাদের কোন ধৰ্ম্মগ্রন্থ নাই, হইতে পারে, আমাদের মধ্যে ধৰ্ম্মের সম্যক বিকাশ হয় নাই, কিন্তু আমাদের যাহা আছে, তাহার উন্নতির চেষ্টা না করিয়া যে ধৰ্ম্মদান করা হইতেছে, তাহাতে মনে হয় গাছের মূলোচ্ছেদ করিয়া মাথায় জল দেওয়া হইতেছে, অথবা মেযের মাথা কাটিয়া বলদের স্কন্ধে যোগ করিয়া দেওয়া হইতেছে। আমাদের প্রকৃত অভাব ধৰ্ম্মের নয়। শিক্ষার কালচারের । ধৰ্ম্মদান ব্যাপারটা অনেকেই যত সোজা মনে করেন তত সোজা নয়, যে-সে লোক ধৰ্ম্ম দিতেও পারে না, লইতেও পারে না । কিন্তু আজ দেখিতেছি, যে-সে লোক ধৰ্ম্মদাতা সাজিয়া মোট বেতন (অবশ্য আমাদের তুলনায় ) পাইতেছেন এবং হাজার হাজার লোককে ধৰ্ম্মদান করিতেছেন । এই ধৰ্ম্মদান ব্যাপার একটি বাহ্যিক ভাণ নয় কি ? (৩) আমাদের কোন লিখিত গ্রন্থ ছিল না । আমাদের ভাষার কোনও বর্ণমালাও নাই। পাদ্রীদের কল্যাণে আমাদের ভাষায় রোমান বর্ণমালায় অমুদিত হইয়া