পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wootb প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩৭ | ૭૦% પછી , ગ્રંથ પણ উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে সড সরব হয়ে উঠল । “আজ আর নয়।” কেউ বললে, “লিখিত দরখাস্ত পেশ করুক।” “যদি শীগগির শেষ করতে পারে—তবে ” “আর সময় পেলে না !” সভাপতি কৰ্ত্তব্য স্থির করে ফেললেন, মাথা নেড়ে জানালেন, “তাদের আসতে বল ।” পরে দরোয়ানকে ডেকে বললেন, “আমায় একগ্লাস সরবং–ঠাগুl.” দরজার বাইরে দরোয়ান ডাকল, “আপনার ভিতরে যান, হুকুম হয়েছে।” অদ্ভুতদেহ বিচিত্ৰবেশ এক অপূৰ্ব্ব অপ্রত্যাশিত মিছিল দরজায় দেখা দিল । দলের প্রথম ব্যক্তিটি দীর্ঘকায়, সবল ও স্ববেশ। মুখ চোখের ভঙ্গী বেশ আত্মস্থ। প্যাসনে চশমা, জামায় রক্তগোলাপ, হাতে রূপা-বাধান আবলুসের ছড়ি ও নীল সিস্কের রুমাল। পরের ছয়জনকে দেখলে মন অসোয়াস্তিতে ভরে যায়। এমন বিরূপ অসঙ্গতি একসঙ্গে চোখে হঠাৎ পড়ে না। যেমন তেমন করে সংগ্ৰহ-করা জাম-কাপড় নয়, মনে হয় তাদের হাত পা, শরীরের অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই তাদের নিজেদের নয় - যেমন তেমন করে সংগৃহীত, বিপৰ্য্যয় জোড়াতালির বৈষম্যের একটি স্ত প। বয়স কারও খুব বেশী নয় অথচ প্রত্যেককে দেখলে বোঝা যায় যে, সংসার-সমুদ্রের অনেক বন্দরেই তার ভিড়েছে। তাদের ব্যবহার অকুণ্ঠ, ভাবভঙ্গী বেশ সহজ, অথচ তারই তলে তলে যেন গোপন দুষ্ট মির ছাপ রয়েছে। দলপতি নমস্কার জানিয়ে ধীর শাস্ত কণ্ঠে বললে— “সভাপতি মহাশয় ?” পরিচয় দিয়ে সভাপতি প্রশ্ন করলেন,—“আপনাদের আরজী ?” - রক্তগোলাপধারী ধীরোদাত্ত কণ্ঠে বললে, “আমরা— আপনাদের সামনে উপস্থিত এই ব্যক্তিবর্গ (এই বলে সে তার বন্ধুদের পানে হাত বাড়াল)—আমরা সকলে সম্মিলিত রষ্টভ-কীরকভ-ওডেশ নিকোলেইভ তস্করসমিতির নির্বাচিত প্রতিনিধিরূপে আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি।” তরুণ আইনজীবীর দল যে যার আসনে নড়ে বসল। সভাপতি নিজের চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ দুটে ভাল করে মেললেন । বিস্মিতকণ্ঠে তিনি প্রশ্ন করলেন, “সমিতুি ? কিসের সমিতি ?” - দলপতির শাস্ত কণ্ঠে উচ্চারিত হ’ল, “তস্কর-সমিতি । আমার এই বন্ধুগণ আমায় তাদের মুখপাত্র নির্বাচন করে বিশেষ সম্মানিত করেছেন ।” “বেশ..বেশ—” সভাপতি ভেবে ঠিক করতে পারলেন না, এ ক্ষেত্রে তার কি বলা উচিত । “ধন্যবাদ ! আমাদের দলের এই সাতজনই সাধারণ চোর, অবশ্য প্রত্যেকের কাজের ধারা ভিন্ন ৷” পরে আবার সশ্রদ্ধ অভিবাদন করে দলপতি বললে, “আমাদের সমিতি আপনার এই মহামান্য সভার কাছে সাহায্য ভিক্ষার জন্য আমাদের পাঠিয়েছেন।” “আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না.বাস্তবিক. ব্যাপার যে কি ..” সভাপতি নিতান্ত নিরুপায় ও অসহায়ভাবে হাত নাড়তে লাগলেন, পরে বললেন, “আচ্ছা, আপনার বক্তব্য শেষ করুন।” “যে ব্যাপারে, সাহসে ও শ্রদ্ধায় আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি, তা যেমন স্পষ্ট, তেমনি সহঙ্ক, আর তেমনি ংক্ষিপ্ত। আমি পাচ সাত মিনিটের বেশী আপনাদের বহুমূল্য সময় নষ্ট হতে দেব না। সে কথা আগে থেকেই আপনাদের নিবেদন করছি, কারণ বেলাও পড়ে এসেছে আর গরম ১১৫ ডিগ্রির মাত্রা বুঝি বা ছাড়িয়ে যায়।” বক্তা এই কথার পর পকেট থেকে সোনার স্বন্দর দামী ঘড়িটা বার করে তার উপর একবার চোখ বুলিয়ে নিল । “আপনারা বোধ করি লক্ষ্য করেছেন যে, ইহুদীদের উপর অকথ্য অত্যাচারের শেষদিকের বীভৎস দিনগুলির সম্বন্ধে খবরের কাগজে যে বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে, তার মধ্যে বহুবার এ ইঙ্গিত আছে যে, পুলিসের পয়সার লোভে অত্যাচারীদলের মধ্যে সমাজের নিম্নস্তরের বহু জীবের সঙ্গে সহরের চোরেরাও যোগ দুয়েছিল। সে দলে ছিল সহরের যত গুও, মাতাল, বেকার, ভবঘুরে, ভিখিরী, ও বস্তির বাসিন্দা—কাগজের বিবরণে যথেষ্ট আভাস আছে যে, এ দলে না কি চোরেরও অভাব ছিল না। প্রথমে আমরা চুপ করে ছিলুম। কিন্তু