পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\UNశి প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ১ম খণ্ড ‘মালের কাছে থাকে কি ? কত কি-অন্য কিছু না থাকে তো ঘড়ি চেন। আচ্ছ তা রাখে কোথা ? টাকার ব্যাগ— সেই বা থাকে কোন পকেটে ? কারও বা আবার সিগারেট কেস—সোনার, রূপার-আচ্ছা পকেট কটা ?-- এখানে, এখানে এই একট, আর.এমনি করে হিসাব করে কাজে লাগতে হয়...” ইয়াস। সপ্রতিভভাবে কথা বলছিল, জলজলে চোখদুটো ছিল ব্যারিষ্টারের চোখের উপর । শেযের কথাগুলো বলার সঙ্গে সঙ্গে সে অত্যন্ত দ্রুত ভদ্রলোকের শরীরের স্থানগুলো নির্দেশ করছিল—কি কৌশলপূর্ণ তার ভঙ্গী । “তা ছাড়া বুকে একট। পিন থাকে-টাইপিন— আমরা অবশ্ব সে সব ছুই না—আজকালকার যে সব । ভদ্রলোক—আসল পাথর তো কেউই পরে না ! যাক— আমি তখন তার কাছে এগিয়ে ধাই—ভদ্রলোকের মত তার সঙ্গে কথা জুড়ে দিই—পায়ে পা ঠেকিয়ে আলাপ আর কি ! বলি, মশাই দয়া করে দেশলাইট। একবার. এমনি কিছু তারপর.তার মুখের দিকে সোজা চেয়ে থাকি. এই এমনি করে.আর দুটি আঙুল-ব্যস্—এই দুটি আঙ ল—এই আর এই...” ইয়াস এই বলে ব্যারিষ্টারের মুখের কাছে মাঝের দুটাে আঙল নানা ভঙ্গীতে নাড়তে লাগল। - “দেখলেন তো? খালি দুটাে আঙুলে যা কিছু—এতে অদ্ভুত কিছু নেই—রাম, দুই, তিন—ব্যস.একেবারে বোকা না হ’লে এ শিখতে আর ক'দিন । যা-কিছু কায়দা এইমাত্র-এর আর অদ্ভুত কি ! আচ্ছা, নমস্কার ।” ইয়াসা অভিবাদন জানিয়ে একটু টাল খেয়ে গেল, যেন কাজ শেষ করে নিজের জায়গায় গিয়ে বসবে । “ইয়াস৷ ” দলপতি বেশ জোর করে ডাকলে । তার ডাকের যেন একটা অর্থ ছিল । সাড়া নেই। আবার দলপতি ডাক দিল, এবার স্বর যেন একটু কঠোর । ইয়াসা থামল । সে ব্যারিষ্টারের দিকে পিছন ফিরে ছিল--দলপতিকে যেন আমুনয়ে কি জানাল, কিন্তু দলপতি কঠোর দৃষ্টিতে মাথা নাড়ল । - “ইয়াসা !”—দলপতির কণ্ঠে রাগের ঝাজ । “ধ্যৎ !”—ইয়াসার মুখে ঈষৎ বিরক্তি। সে এবার ব গরিষ্টারের দিকে চেয়ে বললে, “আপনার ছোট ঘড়িটা দেখুন তো, মশাই ?” কণ্ঠ তার তীক্ষু । ব্যারিষ্টারের যেন হঠাৎ চেতনা এল—“তাই তো !" “এই তো এখন বলছেন “তাই তো”—ইয়াসা যেন ব্যারিষ্টারের বোকামিতে বিশেয রেগেছে—“আপনি যখন আমার ডান হাতের আঙুলের তারিফ করছেন, ততক্ষণে বা হাতে , সে দুটো আঙলেই এই রুমালের তলায় । এইজন্যেই রুমালটা ঝোলান। অামি অবশ্য আপনার চেনে হাত দিই নি-ওটি কোনো মক্কেলের দান—বাজে মাল—ঘড়িটি সোনার, তাই নিজে রেখেছি —আর হারানে। ঘড়ির স্মৃতির জন্তে চেনটি আপনার পকেটে—” একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে ইয়াসা ঘড়িট। ফিরিয়ে দিল । ব্যারিষ্টার হতভম্ব । অপ্রতিভভাবে বললে, বাহাদুরী.ই্যা..আমি একটুও জানতে পারিনি।” ইয়াস সদপে বললে, “এই তো আমাদের কায়দা ।” হেলে দুলে সে সঙ্গীদের মাঝখানে ফিরে গেল । এই অবসরে বাকি সরবংটুকু • একনিঃশ্বাসে শেষ করে দলপতি সভাকে সম্বোধন করলে, “এবার একটু নতুন থেলা দেখুন—তিনটি তাসের—টেক্কা, ছক্কা, বিবি—তে-তাসের কেরামতি — রেলে ষ্টীমারে মেলায় যা চলে মাত্র তিনখানি তাসে সহজে—কিন্তু আপনার বোধ হয় ক্লাস্ত হয়ে পড়ছেন...” “ন না, সে কি ! খুব চমৎকার!”—সভাপতি সস্মিতভাবে সভার মনোভাব প্রকাশ করলেন । “তবে অামার একট। প্রশ্ন আছে—অবখ্য যদি কিছু মনে না করেন— আপনার বিশেষত্ব কি ?” “বিলক্ষণ------আমার বিশেষত্ব—ন, এর আর ম:ন করবার কি আছে-আমি এই হীরে মুক্তোর দোকান, আর ব্যাঙ্ক-ট্যাঙ্ক....” বক্তার কথাগুলো মুছ হাসিতে মিলিয়ে গেল। “অষ্ঠ কাজের চেয়ে এট যে সোজা তা যেন ভাববেন না । তা মন্দ কি, গোটাচারেক ভাষা শিখেছি—জাৰ্ম্মান, ফরাসী, ইংরেজী ও ইটালিয়ান, তাছাড়া অপভ্রংশ দু’চারটে ভাষার সঙ্গেও পরিচয় রাখতে “খুব