পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] নিষ্কলঙ্ক ᏬᏬ Ꮼ হয়। যাক, সভাপতি মশায়, আরও দুএকটা খেলা গাড়োয়ানদের আর্জি লিখে দিয়েছেন—এটা ঠিক যে দেখবেন কি ?” আপনাদের আত্মীয়-স্বজন বন্ধু বান্ধব কেউই সে কথা সভাপতি একবার ঘড়িটি খুলে দেখলেন । “দুঃখের বিষয়, সময় বড় সংক্ষেপ । তার চেয়ে আপনাদের বক্তব্যটা কি, সেইটে আলোচনা করলে ভাল হয় না ? কারণ, আপনার যে-সব খেলা দেখালেন তাতে আপনাদের গুণের তো যথেষ্ট পরিচয় পেলুম কি বলেন ?”—সভাপতি এই বলে ঘড়ি-হারান ব্যারিষ্টারের দিকে চাইলেন। ভদ্রলোক তাড়াতাড়ি সায় দিলেন, “সে আর বলতে . . .” দলপতি যেন দয়া করে এদের কথাট। মেনে নিলেন--- "বহুৎ আচ্ছা, বড়বাবু, আপনার যন্ত্রপাতি রেখে দিন, ওগুলোর আর কোনো দরকার নেই ।” শেষের কথাগুলো তিনি যাকে বললেন তার মাথা-ভরা কোকড় চুল, হাসি হাসি মুখ..আদুরে ছেলের ভঙ্গীতে হেলেছুলে সে নিজের জায়গায় চলে গেল । দলপতি এবার সভাকে সম্বোধন করে বললে, “আর গোটা-দুই কথা বঙ্গে নিতে চাই। আশা করি এতক্ষণে আপনার বেশ বুঝেছেন, সমাজের শীর্ষস্থানীয়দের মনঃপূত না হলেও আমাদের এই কৰ্ম্মকৌশলে আর্টের অভাব নেই, এবং আমার বিশ্বাস এ বিষয়ে আমার সঙ্গে আপনার একমত যে, এই কল৷ আয়ত্ত করতে বহুবিধ গুণের সবিশেষ প্রয়োজন। এ ছাড়া, দারুণ পরিশ্রম আছে, বিপদ-আপদ আছে,ভূল বোঝবার সম্ভাবনা আছে। শেষ কথা হচ্ছে যে, আপনাদের বোধ হয় এবার বিশ্বাস হয়েছে যে, বাইরে থকে দেখলে বা হঠাৎ শুনলে যতই অদ্ভূত মনে হোক, এ কৰ্ম্মকৌশলে লোকের প্রতি থাকা সম্ভব—একাজে কৰ্ম্মীর একটা শ্রদ্ধা থাকা সম্ভব । মনে করুন দেখি যে, বিখ্যাত মাসিকের পাতা ছাড়া র্যার কাব্য সাহিত্য প্রকাশিত হয় না, দেশের এমন কোনো শক্তিমান নামী কবিকে যদি লাইন-পিছু এক আনা দাম ধরে কবিতা লিখতে বলা হয়—তাও আবার মাধুরী’ বিড়ির বিজ্ঞাপন ; কিংব। যদি এই কথা রটনা হয় যে, আপনাদের মত নামী ব্যারিষ্টারদের কেউ বিবাহচ্ছেদ মামলার জাল সাক্ষী তৈরী করেছেন কিংবা তাড়িখানার মালিকের কাছে বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু কুংসা একবার রটলে তার বিয ত ছড়িয়ে যায়, আর আপনাকে সেই বিষাক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেবার সব কষ্টটুকুই পেতে হয়। এইবার ভাবুন দেখি—এই রকম একটা জঘন্য ও বিরক্তিকর কুৎসা আপনাদের স্বনামের বুক চেপে বসেছে—শুধু তাই নয়, আপনাদের স্বাস্থ্য, স্বাধীনতা, এমন কি জীবন পৰ্য্যস্ত বিপন্ন করে তুলেছে... “আমাদের–চোরদের–আজ এই দশাই হয়েছে— খবরের কাগজে আমাদের নামে এমনই কুৎসা রটনা হচ্ছে। কথাটা খুলে বলছি—সমাজের নিম্নস্তরে একদল নিতান্ত নচ্ছার লোক অাছে—আমরা তাদের বলি গণ্ডটির চন্দর’—দুঃখের বিষয়, সাধারণ লোকে তাদের সঙ্গে আমাদের তফাৎ ধরতে পারে না। এই ‘গঙ্গাচর চন্দর’ দলের না আছে লজ্জা, 'ন আছে বিবেক-চরিত্রহীন আঘাটার জঞ্জাল, অশিক্ষিত, অভব্য অকৰ্ম্মার দল—চুরি করবার না জানে কৌশল, না আছে তার শিক্ষা, না তার সাধন । বেখ্যার ঘাড়ে চেপে তাদের পয়সায় খেতে এদের কোনোদিনই ঘূণ বাধও হয় না । দুটো পয়সার লোভে অন্ধকার গলিতে ছোটছেলের গলা টিপতে এরাই পারে—ঘুমস্ত লোককে খুন করে বুড়ীর ওপর অত্যাচারে প্রবৃত্তি শুধু এদেরই—আমাদের পেশাভুক্ত লোকের এরাই হ’ল লজ্জা—চৌর্য্যকলার অপূৰ্ব্ব সৌন্দৰ্য্য ও প্রাচীন ঐতিহ্যের কোনো ধারই এর ধারে না । সিংহের পিছনে দূরে দূরে যেমন শেয়ালের পাল ফেউ লাগে এর ঠিক আমাদের পিছনে সেই রকম করে ঘুরে বেড়ায়। মনে করুন, বেশ একটা জবর কাজ উদ্ধার হ’ল—বলা বাহুল্য, চোরাই মাল যারা বিক্রী করেন তাদের তো প্রায় অৰ্দ্ধেকের ওপর দিতে হ’ল—তারপর, ঘুষবিমুখ অকলঙ্ক পুলিশ আছেন—এদের ভাগ-বাটোয়ারা করে যা রইল তা থেকে আবার এই জঞ্জালদের ভাগ দিতে হলে— • কেউ হয়ত লোকমুখে শুনেছেন—কেউ হয়ত একচোখে দেখেছেন—কারও বা হঠাৎ সামনে পড়ে গেছি। এই নচ্ছারগুলোকে দিতেই হয়, না হলে হয়ত পুলিশে লাগাবে—