পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা যে ধনমানের ভয়েও অন্তত মৌখিক সন্মতি জানিয়ে তাদের খুশী করবার চেষ্টা করে ! “আপনারা অবশ্ব জানেন, রুশ-সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকেরা পুলিশের সঙ্গে কি রকম ব্যবহার করে। যারা এই পুলিশের গোপন দুষ্কার্য্যের সাহায্য নেয় তারাও তাদের খাতির করে না । কিন্তু আমরা তাদের তিনগুণ— না দশগুণ ঘৃণা করি—গোয়েন্দা বিভাগের হাতে যন্ত্রণ পেয়েছি বলে নয়—অবশ্য সে যন্ত্রণ। শুধু নয়—সে বিভীষিক এ-চামড়ার চাবুক—দলের লোককে ধরিয়ে দেবার জন্যে বা স্বীকারোক্তি করাবার জন্তে অমাহুষিক প্রহার—সেজন্যেও ঘৃণা করি ; কিন্তু আমরা চোরেরা, যারা সবাই জেলে গেছি, আমরা, সবাই স্বাধীনতার উন্মত্ত উপাসক। তাই জেল-রক্ষীদের ওপর আমাদের অসীম ঘৃণা । আমার কথাই বলি । পুলিশ গোয়েন্দারা আমায় তিনবার যে যন্ত্রণ দিয়েছে আমি মরণাপন্ন হয়ে বেঁচেছি। আমার ফুসফুস লিভার একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। এখনও সকালে আমার মুখ দিয়ে রক্ত উঠে, আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে। কিন্তু আমায় যদি কেউ বলে যে, গোয়েন্দা পুলিশের বড়কৰ্ত্তার, সঙ্গে হাত মেলালে আমায় আর কোড়া লাগবে না, আমি তখনি তা অস্বীকার করব ! “আর খবরের কাগজে লেখে যে, এদের কাছ থেকে আমরা টাকা নিয়েছি—জুডাস—কেনা-টাকা রক্তমাখা টাকা ! না, কখনও নয়, এ অপবাদ কলঙ্ক আমাদের বুকে ছুরির মত বেঁধে—অসহ যন্ত্রণ দেয়। টাকা, শাসন, লোভ—কোন কিছুরই বদলে আমরা ভাড়াটে খুনে সাজতে পারি না—তাদের কাজে সাহায্য করতে পারি না--- “কখনও না...না ! ন--” দলপতির কথায় সায় দিয়ে অন্য সবাই গুনগুন করে উঠল । * "শুধু তাই নয়”, দলপতি বলতে লাগল, “আমাদের দলের অনেকেই এই দাঙ্গায় অত্যাচারিতের উপকার করেছে। আমাদের বন্ধু সিসোয়া—ইনি এক ইহুদীপরিবারে বাস করেন—লোহার ডাগু নিয়ে একদল ভাড়াটে গুণ্ডার সঙ্গে যুদ্ধ করে সে পরিবারকে রক্ষা করেছেন -একথা ঠিক সিসোয়া বাবুজীর “তাকুত واد-ایس-8 سb निझलक NeN9(t আছে—ওঁর গায়ের জোরের কথা ও-অঞ্চলের সবাই ভাল করেই জানে, কিন্তু সূে সময় বাবুজীকে মৃত্যুর সামনে মুখোমুখি দাড়াতে হয়েছিল। “এই যে দেখছেন মাণ্টিন—এই ভদ্রলোক—” দলপতি এই বলে একজনের দিকে আঙুল দেখালেন—পাতলা গড়ন দাড়ি-ওয়ালা একটি লোক—সুন্দর স্বপ্নালস চোখে সে সবার পিছনে দাড়িয়েছিল। “ইনি একটা ইহুদী বুড়ীকে ঐ কুত্তাদলের মুখ থেকে বঁচিয়েছেন—বুড়ীকে ইহজীবনে ইনি কোনদিন চোখেও দেখেননি। অথচ এই জন্যে খুনের দল এর মাথা ফাটিয়েছে, হাত ভেঙে দিয়েছে, পাজরের একটা হাড় চুরমার করেছে—ইনি হাসপাতাল থেকে সবে বেরিয়েছেন । আমাদের দলের উৎসাহী সভ্যেরা এমনই কৰ্ত্তব্য করে থাকেন—অক্ষম যারা তার কাদে—রুদ্ধ আক্ৰোশে ফুলে ফুলে ওঠে • . “সেই হত্য-উৎসবের রক্ত-মাখা দিনগুলো—মশালজালানো রাত্রিগুলো কিছুই আমরা ভুলিনি। পথে পথে মেয়েদের সেই বুক-ফাট কান্না, পথের ধুলায় ছড়ানো ছোট ছেলেমেয়ের খণ্ড বিখণ্ডিত দেহ–কিন্তু এ সবের জন্তে আমরা কোনদিন বিশ্বাস করি না যে, পুলিশ আর রাস্তার লোক এই পাপের মূল । এই সব বোকা ঘৃণ্য জীবগুলো আর এক হাতের অজ্ঞান যন্ত্ৰ—যার পিছনে আছে নীচ মন আর শয়তানী ইচ্ছাশক্তি । চালক সেই । “একথা সত্যি যে, চোরেরা আপনাদের আইন-গত ঘৃণার উপযুক্ত পাত্র। কিন্তু আপনাদের মত মহৎ লোকদের যেদিন লড়াই করবার জন্তে চতুর, সাহসী বাধ্য লোকদের প্রয়োজন হবে, বিশ্বের সব চেয়ে মহৎ যে । বাক্য—স্বাধীনতা–তার জন্তে যেদিন হাসিমুখে প্রাণ দেবার দরকার হবে, সে দিন কি ঘূণায় আমাদের দূরে সরিয়ে দেবেন ? “বেশী কথা কি ? ফরাসী বিদ্রোহে যে প্রথম প্রাণ আহুতি দিয়েছিল—সে তো এক বেশু ! আলগোছে তার পোষাকের প্রাস্ত ধরে সে পথে আগড়ের ওপর উঠে দাড়িয়ে বলেছিল সৈন্যদের মধ্যে মেয়েকে গুলি করতে কার সাহস আছে ? হায় ভগবান—” বক্তার গলার স্বর হঠাৎ চড়ে গেল—সামনের পাথরের টেবিলের ওপর দুম