পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سواډا\ژN\ متعتمہیصحسین* ج۔ রাজদণ্ড হস্তগত করেন। তাদের আমলের বিচার-ব্যবস্থা সেই আরবদের মতই ছিল, সেই সরকারী ও বেসরকারী বিচারালয়, সেই পঞ্চায়েং, সেই আমীর, সেই কাজী আর সেই যাজকসম্প্রদায় ; আমীর নিজের জমিদারীতে শাসনকারী, কাজীর অধীনে বিচারভার ন্যস্ত, আর যাজকসম্প্রদায়ের অসীম ক্ষমতা,—ঐতিহাসিক ঘটনার পুনরাবৰ্ত্তন! খালজীকুলতিলক আলাউদ্দীন কিন্তু মোল্লাদের ক্ষমতা খৰ্ব্ব করে স্বীয় শক্তির ও স্বাতন্ত্র্যপ্রিয়তার পরিচয় প্রদানে পশ্চাৎপদ হননি। তার মতে ‘আইন’ ও বাদশাহ একার্থবোধক শব্দ ; শাস্তিদান করাট রাজারই বিশেষ স্বত্ব বা অধিকার । সুতরাং সময়-বিশেষে তিনি মোল্লাদের বিরুদ্ধেও রায় প্রকাশ করতে কুষ্ঠিত হতেন না। পঞ্চদশ শতাব্দীর ‘ওয়ারস অফ দি রোজেস দেশের বীভৎস নগ্ন মূৰ্ত্তি প্রকাশ করলে পর, অত্যাচারপীড়িত ইংলণ্ডের জনসমূহ নিজেদের ধনজন রক্ষার্থ যেমন একজন ক্ষমতাশালী রাজার জন্য কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করে এবং সেই কারণবশতঃই টিউডর বংশীয়গণ নিজ ইচ্ছায়যায়ী রাজত্ব করলেও ষ্টুয়ার্টদিগের মত র্তাদের আমলে দেশে বিদ্রোহের তাণ্ডবলীল। পরিলক্ষিত হয়নি, সেইরূপ আলাউদ্দীন তার পূর্ববৰ্ত্তী বাদশাহদের তুলনায় স্বেচ্ছাচারী হলেও মোগল কর্তৃক উপযুপিরি আক্রাস্ত ও তজ্জন্ত ক্লিষ্টচিত্ত ও ব্যথিত প্রজাগণ আলাউদ্দীনের ন্যায় শক্তিমান রাজার বিরুদ্ধে তার অবৈধ স্বেচ্ছাচারিতা সত্বেও নিজেদের মাথা তুলতে সাহস পায় নি। সাধারণ জনসমাজে “ক্ষিপ্ত” আখ্যায় ভূষিত তুঘলকৃ ংশীয় মহম্মদ, তার আর যা-কিছু দোষ বা গুণ থাকু না কেন, আলাউদ্দীন বা ইংলণ্ডের প্ল্যাণ্টাজেনেট বংশীয় দ্বিতীয় হেনরির মত যাজকদের একচেটিয়া অধিকার নতমস্তকে মেনে নিতে মোটেই রাজি ছিলেন না। আর এর জন্য র্তাকে বেগ পেতে হয়েছেও যথেষ্ট । ক্ষুন্ধচিত্ত, অধিকারবিচ্যুত উলেমাগণ রাজার চরিত্রে অযথা দোষারোপ করতে কোন প্রকার ত্রুটি করেনি ; এবং বোধ হয় এই কারণেই মুসলমান ইতিহাসকাররা স্বকপোলকল্পিত ঘটনানিচয় নানাবর্ণে রঞ্জিত করে জগৎসমক্ষে বাদশাহকে অত্যাচারের পূর্ণাবতার বলে প্রচার করে গেছেন। কিন্তু ন্যায়প্রিয়তাই ছিল এই বাদশাহের একটি মহৎ গুণ । আদালতের খুটিনাটি যা-কিছু সবই তিনি নিজে দেখতেন এবং সময়-বিশেষে নিজের বিরুদ্ধেও আদালতের রায় মেনে নিয়েছেন এমন দেখা যায়। গোড়া মুসলমান ফিরোজের রাজত্বকালে পুরাতন ব্যবস্থা আবার নূতন করে ফিরে আসে। কোরাণামুযায়ী বিচার ত চলতেই লাগল, তার উপর আবার মোল্লারা তাদের লুপ্ত অধিকার ফিরে পেল। মুফতিরা আইন ব্যাখ! করত আর কাজী সাহেব দিতেন বিচারে রায়, এই ছিল তার সময়ের ব্যবস্থা । সে সময়কার আইন ছিল বড়ই কঠোর ও অমানুষিক ; পীড়ন করাই ছিল সত্যনিৰ্দ্ধারণের একমাত্র পন্থা ; সংশোধন করা ত দূরের কথা, অপরাধীকে প্রতিশোধ দেওয়াই ছিল শাস্তিদানের আসল উদেখা । মোটের উপর সে সময়ের দণ্ডনীতির ব্যবস্থা মধ্যযুগ বা ফরাসী বিপ্লবের আগে ইউরোপ বা ইংলণ্ডে যে প্রকার দোষীদের শাস্তিদান বা পীড়ন করার রীতি ছিল তাই মনে করিয়ে দেয় । ভারত-আক্রমণকারী দুৰ্দ্দমনীয় তৈমুর ও চেঙ্গিসের ংশধর, স্বচ্ছতোয় জাক্সারটেস্ নদীকূলস্থিত সমরকন্দ অধিবাসী বাবর লোদিদের পরাস্ত করে ভারতে মোগল রাজবংশ স্থাপন করেন । নিজেকে মোগলবংশজাত বলে প্রচার করতে তিনি মোটেই প্রস্তুত ছিলেন না, এবং স্বীয় ধমনীতে মোগল রক্ত প্রবাহিত ছিল ব’লে বিশেষ লজ্জিত হলেও তার দুর্ভাগ্যবশতঃ তিনি ও র্তার বংশধরগণ ঐতিহাসিকদের নিকট মোগল বলেই প্রচারিত হ’য়ে আসচেন । আড়াই শত বৎসর স্থায়ী মোগলদের শাসন সময়ে ভারতে কিরূপ বিচার-ব্যবস্থা কায়েম ছিল জানবার জন্য নজির পাওয়া যায় । মোগল আমলের বিচারপ্রণালীর মূলে শৃঙ্খলা বা পৰ্য্যায়ের খুবই অভাব দেখা যায়। স্থান বা জনসংখ্যা অনুযায়ী বিচারালয়ের সংখ্যা নিদিষ্ট হ’ত না । সেজন্য স্থান-বিশেষে জনাধিক্য হলেও হয়ত আদালতের সংখ্যা ছিল কম—হোক না কেন সেখানে বিচারের ক্রটি ! আজকালকার ইংরেজ রাজত্বে আদালতগুলোর যেমন পৰ্য্যায় আছে—মহকুমার আদালত হ’তে আরম্ভ করে হাইকোটে বা প্রিভি-কাউন্সিল পৰ্য্যন্ত আপিল যাবার যেমন বন্দোবস্ত আছে, তেমনটি কিন্তু সেকালে ছিল না, এটা