পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] বাহির করিয়া দিল, তবে আশ্বিন মাসে তাহারা দেশে যাইবে, তাহার পূৰ্ব্বে টাকাট। দেওয়| চাই । ফিরিবার পথে অপু ভাবিল—বছর পায়ের ধূলে। নিতে ইচ্ছে করে, মায়ের মত দ্যাখে, আহা, কি ভাল লোক ! পরদিন সকালে সে ছুটিল অমৃতবাজার পত্রিক অপিসে । সেখানে কাগজবিক্রেতাদের মারামারি, সবাই আগে কাগজ চায় । অপু ভিড়ের মধ্যে ঢুকিতে পারিল না।--কাগজ পাইতে বেল হইয় গেল । তাহার পর আর এক নূতন বিপদ- অন্য কাগজগুয়ালাদের মত কাগজ হাকিতে পারা ত দূরের কথা, লোকে তাহার দিকে চাহিলে সে সঞ্চচিত হইয় পড়ে, গল। দিয়া কোনে কথা বহির হয় না । সকলেই তাহার দিকে চায়, স্বত্র সুন্দর ভদ্রলোকের ছেলে কাগজ বিক্রয় করিতেছে, এ দৃশ্ব তপনকার সময়ে কেহ দেখে মাই– অপু ভাবে-ব রে, আমি কি চড়কের নতুন সg নাকি ? খানিক দূরে আর একটা জায়গায় চলিয়া ধায় । কাহাকেও বিনীতভাবে মুখের দিকে ন চাহিয়| বলে—একপাল খবরের কাগজ নেবেন ? অমৃত বাজার ? কলেজে যাইবার পূৰ্ব্বে মাত্র আঠারোপানি বিক্রয় বাকী গুল। এক খবরের কাগজের ফেরিওয়াল তিন পয়স দরে কিনিয়ু লইল । পরদিন আবার তাই । এবার লজ্জাট। অনেকট কমিল, কিন্তু হাকিতে পারিল মা, সেটা একেবারেই অসম্ভব তাহার দ্বারা ; ট্রামে অনেকগুল কাগজ কাটিল, বোধ হয় বাঙ্গালী ও ভদ্রলোকের ছেলে বলিয়া হউক বা যেজন্যই হউক তাহার নিকট হইতেই সকলে কাগজ লইল । দুজন হিন্দুস্থানী কাগজ-বিক্রেতা ছোকুর তাহার সহিত ঝগড় বাধাইল-নামিবার সময় ট্রামের প{-দানিতে একজন ছোকুরা ইচ্ছা করিয়া তাহার পা মাড়াইয়৷ দিল । অপু ও কাগজের বাণ্ডিল নামাইয়। রাগিয়া ধাই করিয়৷ ছোক্রাটির নাকে মারিল এক ঘুষি । খুব গোলমাল বাধিত, হিন্দুস্থানী ফিরিওয়ালার একযোগে রুথিয়। দাড়াইয়াছিলও, পথযাত্রীদের অনেকে কিন্তু অপুর পক্ষে হইয়া বিবাদ মিটাইয়া দিল । br"ー3 হইল । অপরাজিত \9brన, একদিন কলেজ লাইব্রেরীতে সে বসিয়া আছে, হঠাৎ হলে খুব হৈ চৈ উঠিল। সে গিয়া দেখে কোথাকার একজন ছেলে লাইব্রেরীর একখানা বই নাকি চুরি করিয়৷ পলাইতেছিল, ধরা পড়িয়াছে—তাহারই গোলমাল । অপু তহিকে চিনিল—একদিন আর বছর সে ঠাকুরবাড়ীতে গাইতে ঘাইতেছিল, ওই ছেলেটিও বারাণসী ঘোষ ষ্ট্রীটের দত্তবাড়ী দরিদ্র ছাত্র হিসাবে থাইতে সাইতেছিল। শীতের রাত্রি, খুব বৃষ্টি আসাতে দুজনে এক গাড়ী-বারান্দার নীচে ঝাড় দুঘণ্টা দাড়াইয় থাকে । ছেলেটি তখন অনেকদূর হইতে ভাটিয় অতদূরে থাইতে সায় শুনিয়া অপুর মনে বড় দয়া হয় । সে নামও জানিত, মেট্রোপলিটান কলেজে থার্ড ইয়ারের ছেলে তাহাও জানিত, কিন্তু কোনে কথা প্রকাশ করিল না । কলেজ সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট পুলিসের হাতে দিবার ব্যবস্থা করিতেছিলেন, দর্শনের অধ্যাপক বুদ্ধ প্রসাদদাস মিত্র মধ্যস্থতা করিয়ু ছাড়িয় দিলেন । অপুর মনে বড় আঘাত লাগিল—সে পিছু পিছু গিয়া অখিল মিস্ত্রি লেনের মোড়ে ছেলেটিকে ধরিল । ছেলেটির নাম হরেন । সে দিশহারার মত পথ হঁটিতেছিল, অপুকে চিনিতে পারিয়া ঝর ঝর করিয়া কাদিয়া ফেলিল । অত্যন্ত অচল হইয়াছে, ছেড়া কাপড়, চারিদিকে দেন, দত্তবাড়ী আজকাল আর গাইতে দেয় না--বদ্ধমান জেলায় দেশ, এখানে কোনে আত্মীয়স্বজন নাই। অপু মিজাপুর পার্কে একথাম বেঞ্চিতে তাহাকে টানিয়া লইয়া গিয়৷ বসাইল, ছেলেটার মুখে বসস্তের দাগ, রং কালে, চুল রুক্ষ, গায়ের সার্ট কঞ্জির অনেকটা উপর পর্য্যস্ত ছেড়া । তাহার নিজের চোখে জল আসিতেছিল, বলিল—তোমাকে একটা পরামর্শ দি শোনো—পবরের কাগজ বিক্রি করবে ? বাদামভাজ খাওয়া যাক এস-এই বাদাম ভাজএদিকে এস, দাও চার পয়স-বেশ ভালো কাজ, আমি একট। টাকা দিচ্ছি। কাল আমার সঙ্গে ঘেও কিনি:ে QWዝርቑ | ! পূজা পৰ্য্যস্ত দুজনের বেশ চলিল। পূজার পরই পুনমূমিক—তেওয়ারী বৌয়ের দেন শোধ করিয়া যাই মাসের ...) অপু মাকে কিছু টাকা পাঠাইয়া দিল।