পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ৬১৮ সহানুভূতি নাই, তবু সেখানেই যাইতে ইচ্ছা করে। তবুও মনে হয় হয়ত জেঠাইমা মায়ের সম্বন্ধে দু পাচটা কথা বলিবেন এখন, দুটা সহানুভূতির কথা হয়ত বলিবেন -- ( ১৯ ) Ö মাস-তিনেক এভাবে কাটিল। এ তিন মাসের কাহিনী তাহার জীবনের ইতিহাসে একটা একটানা নিরবচ্ছিন্ন দুঃখের কাহিনী। ভবিষ্যৎ জীবনে অপু এ গলিটার নিকট দিয়া যাইতে যাইতে নিজের অজ্ঞাতসারে একবার বড় রাস্ত হইতে গলির মোড়ে চাহিয়া দেখিত, আর কখনও সে ইহায় মধ্যে ঢোকে নাই । জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে সে একদিন খবরের • কাগজে দেখিল যুদ্ধের জন্য লোক লওয়া হইতেছে, পার্ক ষ্ট্রীটে তাহার আপিস । দুপুরে ঘুরিতে ঘুরিতে সে গেল পার্ক ষ্ট্রীটে। অনেক লোকের ভিড়, অপু একজন আধাবয়সী লোককে জিজ্ঞাসা করিল—রিকুটাং অফিসারের ঘর কোনটা জানেন ? লোকটা বলিল—সামনের ঘরে সাহেব আছে, যান ন৷— একজন থাকী পোষাক পরা ছোকৃর সাহেব চেয়ারে বসিয়া কি লিখিতেছিল। সে ইংরেজিতে জিজ্ঞাসা করিল--আমি যুদ্ধে যেতে চাই – সাহেব মুখ না তুলিয়াই বলিল—ফৰ্ম্মে দরখাস্ত কর— টেবিলে একরাশি ছাপানো ফৰ্ম্ম পড়িয়াছিল, অপু একখান তুলিয়া পড়িয়া বলিল—কোথাকার জন্যে লোক নেওয়া হবে ? —মেসোপোটেমিয়া, রেলওয়ে ও ট্রান্সপোর্ট বিভাগের জন্য । তুমি কি টেলিগ্রাফ জানো-না মোটর-মিস্ত্রী ? অপু বলিল, সে কিছুই নহে। ও সব কাজ জানে না, তবে অন্য যে-কোন কাজ কি কেরাণীগিরি...সাহেব বলিল—ন, দুঃখিত। আমরা শুধু কাজ-জান লোক নিচ্ছি—বেশীর ভাগ মোটর ড্রাইভার, সিগন্যালার, ষ্টেশন মাষ্টার এই সব । এই অবস্থায় একদিন লীলার সঙ্গে দেখা। ইতস্ততঃ লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরিতে ঘুরিতে একদিন ড্যালহাউন্সি স্কোয়ারের মোড়ে সে রাস্তা পার হইবার অপেক্ষা প্রবাসী-ভান্দ্র, ১৩৩৭ (৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড করিতেছে, সামনে একখান হলদে রঙের বড় মিনার্ভ গাড়ী ট্রাফিক পুলিসে দাড় করাইয়া রাখিয়াছিল—হঠাৎ গাড়ীখানার দিক হইতে তাহার নাম ধরিয়া কে ডাকিল । সে গাড়ীর কাছে গিয়া দেখিল, লীলা আর ৪ জুই তিনটি অপরিচিত মেয়ে । লীলার ছোট ভাই ড্রাইভারের পাশে বসিল । লীলা আগ্রহের সুরে বলিল-আপনি আচ্ছা ত অপূৰ্ব্ববাবু ? তিন চার মাসের মধ্যে আর দেখা করলেন না কেন বলুন ত ? ম| সেদিনও আপনার কথা।– অপুর আরুতিতে একটা কিছু লক্ষ্য করিয়া সে বিস্ময়ের স্বরে বলিল—আপনার কি হয়েচে ? অস্থখ থেকে উঠেচেন নাকি ? শরীর-মাথার চুল অমন ছোট ছোট, কি হয়েচে বলুন ত ? अशू शमिब्र दलिल-कझे ना कि श्द-किछू उ श्ब्र নি ? —ম কেমন আছেন ? —ম ? তা মা—ম তো নেই ?. ফাগুন মাসে মারা গিয়েচে । কথ। শেষ করিয়। অপু আর একদফা পাগলের মত হাসিল । হয়ত বাল্যের সে প্রীতি নানা ঘটনায়, বহু বৎসরের চাপে লীলার মনে নিম্প্রভ হইয়া গিয়াছিল, হয়ত ঐশ্বৰ্য্যের আঁচ লাগিয়া সে মধুর বাল্যমন অন্যভাবে পরিবর্তিত হইয়াছিল ধীরে ধীরে, অপুর মুখের এই অর্থহীন হাসিটা . যেন একখান তীক্ষু ছুরির মত গিয়া তাহার মনের কোন গোপন মণিমঞ্জুষার রুদ্ধ ঢাকনির ফাকটাতে হঠাৎ একট। সজোর চাড়া দিল, একমুহূৰ্ত্তে অপুর সমস্ত ছবিট। তাহার মনের চোখে ভাসিয়া উঠিল—সহায়হীন, মাতৃহীন, আশ্রয়হীন, পথে পথে বেড়াইতেছে—কে মুখের দিকে চাহিবার আছে ? লীলার গলা আড়ষ্ট হইয়া গেল, একটু পরে সামলাইয়া লইয়া বলিল, আপনি আমাদের ওখানে কবে আসবেন বলুন- না, ওরকম বললে হবে না । একথা আমাদের জানানো আপনার উচিত ছিল না ? অন্ততঃ মাকেও বলা ত—কাল সকালে আস্থন.ঠিক বলুন আসবেন ?