পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] বিশ্ববধু Sలసిసి কেমন ঠিক ত ?...সেবারকার মত করবেন না, কিন্তু—ভাল কথা, আপনার ঠিকানাট। বলুন ত কি ?... ভুলবেন না, কিন্তু-- গাড়ী চলিয়া গেল । বাসায় ফিরিয়া অপু মনের মধ্যে অনেক তোলাপাড়া করিল। লীলার মুখে আজ সে একটা আস্তরিকতার ছাপ দেখিয়াছে, বৰ্ত্তমান অবস্থায় মন তাহার এই আন্তরিকতার স্নেহস্পর্শটুকুরই কাঙ্গাল বটে—কিন্তু এই বেশে কোথাও যাইতে ইচ্ছা হয় না, এই জামায় এই কাপড়ে, এ ভাবে । থাকু বরং । তিনদিন পরে তার নিজের নামের একখানা পত্র আসিতে দেখিয়া সে বিস্মিত হইল—ম ছাড়া আর ত কাহারও পত্র সে কখনও পায় নাই, কে পত্র দিল ? পত্র খুলিয়া পড়িল :– অপূৰ্ব্ববাবু, আপনার এথানে আসবার কথা ছিল সোমবারে, কিন্তু আজ শুক্রবার হয়ে গেল, আপনি এলেন না । আপনাকে মা একবার অবিশ্যি অবিশুি আসতে বলেচেন, ন! এলে তিনি খুব দুঃখিত হবেন । আজ বিকেল পাচটার সময় আপনার আসা চাই-ই ! নমস্কার নেবেন । লীলা কথাট। মনের মধ্যে সে অনেক তোলপাড়া করিল। কি লাভ গিয়া ? ওরা বড়মানুষ, কোন বিষয়ে. সে ওদের সঙ্গে সমান যে ওদের বাড়ী যখন-তখন যাওয়া ? মেজবৌরাণী যে তাহার কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছেন, সেই কথাটা তাহার মনে অনেকবার যাওয়া-আসা করিল—সেইটা, আর লীলার আস্তরিকতা । কিন্তু মেজবৌরাণী কি আর তার মায়ের অভাব দূর করিতে পারিবেন । তিনি বড়লোকের মেয়ে, বড়লোকের বধু। তাহার মায়ের আসন হৃদয়ের যে স্থানটিতে, সে শুধু তাহার দুঃখিনী মা অর্জন করিয়াছে তাহার বেদনা, ব্যর্থতা, দৈন্যদুঃখ, শত অপমান দ্বারা—ছয় সিলিণ্ডারের মিনার্ভ গাড়ীতে চড়িয়া কোনো ধনীবধু—হউন তিনি স্নেহময়ী, হউন্‌ তিনি মহিমময়ী— তাহার সেখানে প্রবেশাধিকার নাই । জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষে পরীক্ষার ফল বাহির হইল । প্রথম বিভাগের প্রথম সুতের জনের মধ্যে তাহার নাম বাংলাতে ইউনিভার্সিটিতে প্রথম হইয়াছে, এজন্য একটা সোনার মেডেল পাইবে । এমন কেহ লোক নাই যাহার কাছে খবরটা বলিয়৷ বাহাদুরী করা যাইতে পারে। কোনো পরিচিত বন্ধুবান্ধব এখানে নাই— ছুটিতে সব দেশে গিয়াছে। জেঠাইমার কাছে যাইবে ? --গিয়া জানাইবে জেঠাইমাকে ? --কি লাভ, হয়ত তিনি বিরক্ত হইবেন, দরকার নাই যাওয়ায় । ( ক্রমশ: ) বিশ্ববন্ধু শ্ৰীনীলিম দাস তুমি শুধু আছ বসি একাস্তে আপন মনে বিশ্ব-অন্তঃপুরে আপনার সৌন্দর্য্য-ঐশ্বৰ্য্য মাঝে মগ্নচিত্ত আপনি বিলীন ! ঘেরি তব চারিধার রূপ-রস-গন্ধ-ভরা বসন্ত নবীন ঢালিছে স্বরডি-ধার ; যেন কোন দূরশ্রত বঁাশরীর স্বরে . সমীরণ মৃদুবহু—চুম্বন-চঞ্চল , ওই মধুর মধুরে নিত্য শোভাময় হাসি হাসে বন-কুসুম-কলিকা ; নিশিদিন গগন-অঙ্গনে জলে দীপ্ত তারকার দীপ ; বিরাম-বিহীন ধ্বনিছে জলদ-শঙ্খ,—ডাকি যেন আনে কাছে হুদূর মৃত্যুরে ! যুগ যুগান্তর ধরি ধরণীর মুগ্ধমত্ত যত কবিকুল হেরি সেই অপরূপ নীরব আরতি-লীলা রাতুল চরণে আপনারে রিক্ত করি সর্বস্ব সপিয়া দেয় সজল নয়নে । অবশেষে চিত্ত করি মধুসিক্ত কহি ওঠে আনন্দে আকুল, - “চিরপ্রিয় ওগো বধু ! এবার হেরিস্থ সব, আজি শেষক্ষণে গুণ্ঠনের যবনিক অপসারি দেখাও ও মুখানি অতুল-”