পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] --~~مچ~~ আছে জানলে এগুলো পৰ্বতামই না। আচ্ছা, এরকম ভুল আর হবে না।” মায়া চম্‌কাইয়া গেল। তাহার মতামতের মূল্য কিছুও কি দেবকুমারের কাছে আছে ? না, ইহাও খেলারই অংশমাত্র ? কি করিয়া বুঝিবে সে ? ব্যস্ত হইয়া বলিল, “না, না, তা কেন ? ও সব বিষয়ে আমার কাটছাট কোনো মতামত নেই। যার যাতে স্থবিধে হয়।” দুইজনে ডেকের উপর গিয়া বসিল । দেবকুমার চেয়ার দুখানার উপর রাজ্যের মাসিক ও দৈনিক কাগজ বোঝাই করিয়া রাখিয়াছিল, যাহাতে তাহার অনুপস্থিতিতে আর কেহ আসিয়া সেগুলি দখল না করিয়া বসে। এখন ঝুপ ঝাপ, করিয়া সেগুলী পায়ের কাছে ফেলিয়া দিয়া সে বলিল, “এগুলো শুধু শুধু নিয়ে এসেছিলাম একখানাও খুলে দেখিনি।” মায়া ভালমান্তমের মত বলিল, “কেন ?” দেবকুমার বলিল, “চোখ ছিল সিড়ির দিকে এবং মন ছিল অন্য কোথাও । ও দুটোর একটাও ‘স্পেয়ার’ করতে না পারলে বই খুলে রেখে লাভ কি ?” মায়া হাসিয়া বলিল, “ইংরিজিতে এ ধরণের কথাগুলো চলে যায়, বাংলায় কিন্তু বড় বাড়াবাড়ি মনে হয়, না ?” দেবকুমারও একটুখানি হাসিয়া বলিল, “তা কোনো মানুষের মনোভাবে যদি বাড়াবাড়ি থাকে, ভাষায় সেট। খানিকট প্রকাশ পেতে বাধ্য ।” মায়া বলিল, “মনোভাবে যদি সেটা থাকে, তাহ’লে ত প্রকাশ পাবেই । তবে বিলাত থেকে এলে কোনটা মুখের কথা, আর কোনটা মনের কথা, তা বুঝবার কোনো উপায় থাকে না।” কথাটা বলিয়াই সে লজ্জিত হইয় পড়িল ; মনে হইল, এত খোলাখুলিভাবে না বলিলেও চলিত । দেবকুমার একটু যেন গম্ভীর হইয়া গেল। মিনিটখানেক চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, “আমি যে কেবল মুখের কথাই বলি না সেগুলো মিন'ও করি, তা আশা করি একদিন আপনাকে বিশ্বাস করাতে পারব।” মহামায়া ዓeግ মায়ার বুকটা কাপিয়া উঠিল। এও কি মুখের কথা ? তাহাই যদি হয়, জীবনে আর কোনো মানুষের কথাকে, মুখের ভাবকে, ব্যবহারকে সে বিশ্বাস করিবে না। কিন্তু এ ভাবে কথা চালাইতে তাহার আর সাহস হইল না। অস্তত আরও কয়েকটা দিন কাটিয়া যাকৃ। তিন চারটা দিনের মধ্যে চিরজীবনের ব্যবস্থা ন হয় নাই হইল ? যাত্রীদের ব্যস্তত ক্রমে বাড়িয়াই চলিয়াছিল। মায়! সেইদিকে চাহিয়া বলিল, “আমরা ত এসে পড়লাম ব’লে । বাবা, মাহুষের যে কেন ‘সি ভয়েজ' পছন্দ হয় জানি না, আমি ত কেবল দিন গুণি কখন ডাঙায় মামতে পারব ।” দেবকুমার বলিল, “আমি কিন্তু এই সি ভুয়েজট শেষ হওয়ায় একটুও খুশী হইনি।” ' ' মায়া ব্যাপারটাকে লঘু করিয়া লইবার জন্য হাসিয়া বলিল, বি-আই-এস্ এন্‌ কোম্পানীকে এতবড় কমপ্লিমেন্ট কেউ কখনও দেয়নি।” দেবকুমার বলিল, “কমপ্লিমেণ্ট-ও নয়, এবং ‘বি-আই-এস্ এন্‌’কেও নয়। কিন্তু আপনি আবার ভাববেন আমি বাজে কথা বকুছি, কাজেই আর কিছু ব্যাখ্যা করবার চেষ্টা করব না ।” কথাট। অন্যদিকে চলিয়া গেল। দেবকুমারের বাবা অগসিয়া পড়িয়া কে আকুযোগ করিতে লাগিলেন, যে, তাহাদের জিনিযসূত্র ঠিকভাবে একটাও বাধাছাদ হয় নাই । দেবকুমারকে অগত্যা উঠিয়া যাইতে হইল । মায়৷ ভদ্রতার খাতিরে উঠিতে পারিল না। বসিয়৷ শিবচরণবাবুর সঙ্গে গল্প করিতে লাগিল। ( ৩২ ) শনিবারের বিকালবেলা । মায়ার কলেজ সকাল সকাল ছুটি হওয়ায় সে বাড়ী ফিরিয়া আসিয়াছে। নিরঞ্জন এখনও ফেরেন নাই, তবে শনিবারে মাঝে মাঝে তিনিও বেলা থাকিতে থাকিতে বাড়ী চলিয়া আসেন । প্রায় এক সপ্তাহ হইল মায়া রেজুনে ফিরিয়া আসিয়াছে । তাহার অনুপস্থিতিতে সংসারে অনেক বিশৃঙ্খলা ঘটিয়াছিল, তাহা গুছাইয়া লইতে তাহার