পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭১০ حمیہ مھماکے مصمم سے تمام محمحم= প্রবাসী—ভান্দ্র, ১৩৩৭ হ’ল । মানধশাস্ত্রে, একটা বিশেষ কালে, অন্তত: স্থানবিশেষে, বেড়ালটাই ঢের আগে । যখন নেহাৎ আর কিছু করবার থাকে না, তখনই মানুষ কাজ করে।” মায়া বলিল, “আপনার মতানুসারে চললে পৃথিবী এতদিনে থেমে দাড়িয়ে যেত ।” দেবকুমার বাবুল, “মোটেই না। বরং আপনি য বলছেন সেইভাবে চললেই বিপদ হত বেশী । জগতের অধিকাংশ মাতুষই কৰ্ত্তব্য বলে কাজ করে না, হয় করে দায়ে পড়ে, নয় কাজের মধ্যেও "প্লেজার’ পায় বলে ।” মায়া বলিল, “থাক, আপনার সঙ্গে তর্কে পরিবার কোনোই সম্ভাবনা যখন আমার নেই, তখন তর্ক নাই করলাম। বাড়ীটাড়ি পছন্দমত পেলেন কিছু ?” দেবকুমার বলিল, “এখানে বাড়ী থাকলে ত বাড়ী পাব ? বাড়ী, মানেন্ত খাচার মত কতগুলি 'ফ্ল্যাট’ ? দেখলেই আমার হাড় জলে যায়। যাঙ বা দু-একট৷ ভাল আছে একটু, সেগুলোর ভাড় এত বেশী যে বাবা সে শুনলেই লাফিয়ে উঠেন। কি যে করি ভেবেই পাচ্ছি না। বেশীদিন এ ভাবে ভেসে বেড়ালে আমার মোটেই চলবে না, আমি শীগগির করে গুছিয়ে বসতে চাই।” মায়া বলিল, “সত্যি এখানে বাড়ীর ভয়ানক অসুবিধে । ভাগ্যে বাবা এই বাড়ীটা করেছিলেন, নইলে আমাকেও কোন এক খাচায় গিয়ে উঠতে হ’ত তার ঠিকানা নেই। আমার আর সব দিকের অভাব সহ হয়, কিন্তু থাকবার জায়গাটা বেশ বড় না হ’লে ভারি কষ্ট হয় ।” দেবকুমার হাসিয়া উঠিল, বলিল, “পাবার পরবার অভাব যে কি জিনিষ, তা যদি সত্যি জানতেন, তাহ’লে আর একথা বলতেন না।” মায়াও হাসিল, বলিল, “তা একেবারে একটুও যে জানি না তা নয়। চিরদিনই ত আমার এ রকম করে কাটেনি ? গ্রামে যখন থাকতাম তখন কিছু কিছু প্রাইভেশন সয়েছি বই কি ?” দেবকুমার বলিল, “সত্যি, আপনার জীবনের এই অংশটার হিষ্টি আমার ভারি অদ্ভূত লাগে। বাঙালীর মেয়ে "রিলিজাস্ কনভিকশন’-এর খাতিরে স্বামীও ছেড়ে দেয় এ আর আগে কখনও শুনিনি ।” মায়া একটু গর্বের সহিতই বলিল, “র্তার ভিতর যে জিনিষ ছিল, সব বাঙালীর মেয়ের মধ্যে তা কোথায় পাবেন ?” দেবকুমার একটু দীর্ঘক্ষণ মায়ার দিকে চাহিয়া রহিল, তাহার পর বলিল, “তিনি যা করেছিলেন, তাই কি আপনার ঠিক মনে হয় ? ধৰ্ম্মমত কি মেয়েদের কাছে স্নেহ, প্রেম, সব কিছুর চেয়ে বড় হওয়া উচিত ?” মায়া কিছু ন ভাবিয়াই তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিল, “নিশ্চয়ই , মতের জন্যে যে ত্যাগস্বীকার করতে ন৷ পারে, তার মত থাকা-না-থাকা সমান ।” দেবকুমার গম্ভীর হইয়া গেল। খানিকক্ষণ পরে বলিল, “আমার কিন্তু তা মনে হয় না । ভালবাসার চেয়ে মতের দাম স্ত্রীলোকের কাছে বেশী হওয়া উচিত নয় । তাহ’লে সংসার টিকতে পারে না।” মায়া যে কি বলিবে ভাবিয়া পাইল না। তাহার অন্তরও এই কথাই বলে, কিন্তু তাহার বুদ্ধি এখনও ইহা স্বীকার করিতে চায় না। দেষকুমার এ কথা পাড়িতেই বা গেল কেন ? সেও কি এই ভাবনায় পড়িয়াছে ? কোনও বিশেষ উদেশ্য লইয়াই কি সে আজ এই আলোচনা উত্থাপন করিয়াছে ? মায়ার মন সভয়ে পিছাইয়া গেল । না, না, এখনই এ মীমাংসার প্রয়োজন নাই । আরও কয়েকটা দিন অস্ততঃ অনিশ্চিতের আশ্রয়েই থাকিয় দেখা যাক । সে কথা ঘুরাইবার জন্য তাড়াতাড়ি বলিল, “তর্ক করে ত গলা শুকিয়ে ফেললেন, এইবার চা আনতে বলি ?” দেবকুমার হাসিয়া বলিল, “আচ্ছা তাতে আমার কিছুমাত্র আপত্তি নেই। কিন্তু গলাটা একবার ভিজিয়ে নিয়ে আবার যদি দ্বিগুণ উৎসাহে তর্ক করি, তখন আমায় দোষ দেবেন না। মায়া ইলেটিক বেল বাজাইয়া চাকরকে ডাকিয়া চা আনিতে বলিয়া দিল । দেবকুমার ঘরের চারিদিকে ভাল করিয়া তাকাইয়া লইয়া বলিল, “আপনি সব জিনিষেই দেশী ভাব বজায় রাখবার খুব পক্ষপাতী, না ?” মায়া বলিল, “ছবি আর ফারনিচার’ দেখে বলছেন? এগুলো আমারই আমদানী বটে, বাবা আগে সব কিছু