পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ov, করা হইয়াছে। ত্রিশ বংসরের মধ্যে জাৰ্ম্মেণি গমের ফসল দ্বিগুণ করিয়াছে। বাংলা দেশে ১৯২০ হইতে ১৯২৫ সাল, অর্থাং পাচ বংসরে প্রায় দুই কোটি দশ লক্ষ একর ধানের জমিতে বছরে গড়ে আশী লক্ষ টনের কিছু অধিক চাল জন্মিয়াছে। জাপানে পচাত্তর লক্ষ একর জমিতে চাল পাওয়া গিয়াছে এক কোটা টনের অধিক। অর্থাং জাপান পচাত্তর লক্ষ একর জমিতে যে পরিমাণ ধান জন্মায়, আমরা দুই কোটি দশ লক্ষ একরে তাহ পাই না । এইবার বাংলা দেশের কৃষি সম্বন্ধে কিছু বলিব । মোট চাষের জমি দুই কোটি আশী লক্ষ একরের কিছু বেশী, কিন্তু ইহার মধ্যে প্রায় পয়তাল্লিশ লক্ষ একর জমিতে দুইবার বোনা হয় মাত্র। অতএব প্রতিবছর প্রায় দুই কোটি চল্লিশ লক্ষ একর জমিতে চাষ হয়—ইহার মধ্যে দুই কোট দশ লক্ষ একর জমিতে ধান জন্মে। ধানের ফসল পূর্বেই উল্লেখ করিয়াছি ; ইহার দ্বারা বাংলার প্রতি ঘরে আবশ্যকীয় অন্নের সংস্থান হয় কিনা আপনার হিসাব করিয়া দেখিবেন। তারপর ধান-চাষের হিসাব খাতাইয়া দেখা প্রযোজন যে, চাষের সর্বপ্রকার খরচ বাদ দিয়া কৃষিজীবীর কিছু লাভ থাকে কি না । আমি যতদূর জানি, বিঘাপ্রতি পাচ কি ছয়;টাকার অধিক লাভ (net profit) থাকে না। লাভের পরিমাণ দশ টাকা ধরিলেও ইহা যথেষ্ট বলিয়া বিবেচিত হইবে না । অন্যান্য ফসলের ফসলও সন্তোষজনক নহে । বাংলা দেশে ইক্ষুর চাষের তেমন বিস্তার নাই, কিন্তু যেখানে জন্মে ইহার ফসল মোটের উপর প্রতি একরে এক টনের কিছু অধিক ; আর জাভা দ্বীপের ফসল চারি টন। এই কারণেই জাভা চিনি আমাদের ঘরে স্থান পাইতেছে । e ফসলের কথা ছাড়িয়া গো-পালনের সমস্যা ভাবি– ভারতবর্ষের আর কোনো প্রদেশে বাংলার গরুবাছুরের মতন নিকৃষ্ট গোধন দেখা যায় না । মোটামুটি গুণতি করিয়া দেখা গিয়াছে, বাংলা দেশে তিন কোটি কুড়ি লক্ষের উপর গরুবাছুর আছে, কিন্তু ইহাদের খাদ্যোপযোগী ফসল -- প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড


سی۔سی۔سی۔سی۔سی۔سمہ ۔سی۔سمہ سی۔سی

জন্মায় মাত্র প্রায় নব্বুই হাজার একর জমিতে। ইহা যথেষ্ট নহে, বল বাহুল্য। গো-পালনের স্বব্যবস্থা নাই, ইহাদের আহাৰ্য্যের অভাব ঘটিয়াছে, সংক্রামক ব্যাধির কবল হইতে ইহাদের রক্ষা করিবার তেমন ব্যবস্থা নাই,— এই কারণে বাংলার ঘরে দুধের অভাব । কিন্তু আমি যে-সকল কৃষিসমস্ত উল্লেখ করিতেছি, বিজ্ঞানের সাহায্যে ইহার প্রত্যেকটির মীমাংসা হইতে পারে। উপযুক্ত সার প্রয়োগে জমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করা, বীজনিৰ্ব্বাচন দ্বারা ফসলের উন্নতি-সাধন করা, গো-পালনের বৈজ্ঞানিক প্রণালী অবলম্বন করা, অতুৰ্ব্বর জমিতে চাষের বিস্তার করা, যতই দুরূহ সমস্যা হউক না কেন, ইহা কৃষি-বিজ্ঞানের আয়ত্তাধীন। প্রশ্ন এই—কৃষিবিজ্ঞানের নানাপ্রণালী প্রয়োগ করিবার পথ খুলিয়া দিবে কাহারা ? ইহা মনে রাখা ভাল যে, যে-দেশে এই পথ খুলিয়া দিবার জন্য ঐকান্তিক চেষ্টা নাই, সেখানে দুৰ্গতি আনিবাৰ্য্য। সকল কৃষিপ্রধান দেশ আজ জানে ধে, বৈজ্ঞানিক কৃষিশিক্ষা প্রচলন না করিলে বৰ্ত্তমান যুগের ব্যাবহারিক জীবনের প্রয়োজন ও পৃথিবীজোড় বাণিজ্য-যজ্ঞের ইন্ধন জোগান হইবে না। বাংলা দেশের মূল সমস্তার মীমাংসাও এইখানে । কিন্তু, বাংলা দেশে কৃষিশিক্ষার প্রয়োজন যতই হউক না কেন, ইহার আয়োজন কি আছে ও কিছু হইবার সম্ভাবনা আছে কি না, আমি আপনাদের চিন্ত৷ করিতে অনুরোধ করি । বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা, আসাম, উত্তর-পশ্চিম—-এই চারিটি প্রদেশ ব্যতীত ভারতবর্যের প্রত্যেক প্রদেশে কৃষিশিক্ষা দিবার ও কৃষি-বিজ্ঞান চর্চা করিবার স্থব্যবস্থা আছে । আসাম ও উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ আয়তনে ছোট এবং ইহার রাজস্ব প্রচুর নহে। 'পঞ্জাবের কৃষি শিক্ষা ব্যবস্থার সহিত মিলিত হইয়৷ উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ তাহাদের এই প্রয়োজন মিটাইয়াছে। পঞ্জাব, বোম্বাই, যুক্ত-প্রদেশ, মধ্য-প্রদেশ, মাদ্রাজ, বৰ্ম্ম, এই ছয়টি প্রদেশে উচ্চ কৃষিশিক্ষার নিমিত্ত কলেজ আছে এবং ইহা প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তভূর্ত। কৃষি শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরমহলে