পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] কষ্টিপাথর—পঞ্চাশোৰ্দ্ধম Qふ) SAAAAAA AAAAMAMMMAMMMAAAA شیخ محمام عمیم یحیی تعر معی-سی সাধন করা যায় সেখানে কোনো হিসাবের কথা চলে না। যেখানে কালের প্রয়োজন সাধন করি সেখানে হিসাব-নিকাশের দায়িত্ব আপনি এসে পড়ে। সেখানে বৈতরণীর পারে চিত্রগুপ্ত থাত নিয়ে বসে আছেন। ভাষায় ছন্দে নুতন শক্তি এবং ভাবে চিত্তের নূতন প্রসার সাহিত্যে নুতন যুগের অবতারণা করে। কী পরিমাণে তারি আয়োজন করা গেছে তার একটা জবাবদিহী আছে । কখন কালের পরিবর্তন ঘটে, সব সময়ে ঠিক বুঝতে পারিনি । নুতন ঋতুতে হঠাৎ নুতন ফুল ফল ফসলের দাবী এসে পড়ে। যদি তাতে সাড়া দিতে না পারা যায়—তবে সেই স্থাবরতাই স্থবিরত্ব প্রমাণ করে, তখন কালের কাছ থেকে পারিতোধিকের আশা করা চলে না, তখনই কালের আসন ত্যাগ করবার সময় । যাকে বলুচি কালের আসন, সে চিরকালের আসন নয়। স্থায়ী প্রতিষ্ঠা স্থির থাকা সত্ত্বেও উপস্থিত কালের মহলে ঠাইবদলের হুকুম যদি আসে, তবে সেটাকে মানতে হবে। প্রথমটা গোলমাল ঠেকে। নতুন অভ্যাগতের মতুন আকার-প্রকার দেপে তাকে অভ্যর্থনা করতে বাধা লাগে, সহসা বুঝতে পারিনে—সেও এসেছে বৰ্ত্তমানের শিখর অধিকার ক’রে চিরকালের আসন জয় ক’রে নিতে। একদা সেপানে তারও স্বত্ব স্বীকৃত হবে গোড়ায় তা মনে করা কঠিন হয় ব’লে এই সন্ধিক্ষণে একটা সংঘাত ঘটতেও পারে । মানুষের ইতিহাসে কাল সব সময়ে নুতন করে বাস বদল করে না । বতক্ষণ স্বারে একটা প্রবল বিপ্লবের ধাক্কা না লাগে, ততক্ষণ সে খরচ বাঁচাবার চেষ্টায় থাকে, আপন পুৰ্ব্বদিনের অনুবৃত্তি করে চলে, দীর্ঘকালের অভ্যস্ত রীতিকেই মাল্যচন্দন দিয়ে পূজা করে, অলসভাবে মনে করে সেটা সনাতন । তথন সাহিত্য পুরাতন পথেই পণ্য বহন করে চলে, পথ নিৰ্ম্মাণের জন্য তার ভাবনা থাকে না । হঠাৎ একদিন পুরাতন বাসায় তার আর সঙ্কুলীন হয় না । অতীতের উত্তর দিক্‌ থেকে হাওয়া বওয়া বন্ধ হয়, ভবিষ্যতের দিক্‌ থেকে দক্ষিণ হাওয়া চ'তে সুরু করে । কিন্তু বদলের হাওয়া বইল ব’লেই যে নিন্দার গুণওয়া তুলতে হবে, তার কোন কারণ নেই। পুরাতন আশ্রয়ের মধ্যে সৌন্দর্য্যের অভাব আছে, যে অকৃতজ্ঞ অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে সেই কথা বল্বার উপলক্ষ খোজে, তার মন সংকীর্ণ—তার স্বভাব রূঢ়। আকবরের সভায় যে দরবারী আসর জমেছিল, নবদ্বীপের কীৰ্ত্তনে তাকে খাটানো গেল না । তাই ব’লে দরবার তোড়কে গ্রাম্যভাষায় গাল পাড়তে বসা বর্বরত। নুতন কালকে বিশেয আসন ছেড়ে দিলেও দরবারী তোড়ীর নিত্য আসন আপন ময্যাদায় অক্ষুণ্ণ থাকে । গোড়া বেঞ্চব তাকে তাচ্ছিল্য ক"রে বদি পাটো করতে চায়, তবে নিজেকেই থাটো করে। বস্তুতঃ নুতন আগন্তুককেই প্রমাণ করতে হবে, দে নুতন কালের জন্য নুতন অর্থ সাজিয়ে এনেছে কি না । কিন্তু নুতন কালের প্রয়োজনটি ঠিক বে কি, সে তার নিজের মুখের আবেদন গুনে বিচার করা চলে না ; কারণ, প্রয়োজনটি অস্তনিহিত হয় ত কোনো আশু উত্তেজনা, বাইরের কোন আকস্মিক মোহ তার অস্তগুঢ় নীরব আবেদনের উণ্টো কথাই বলে ; হয় তো হঠাৎ একটা আগাছার দুৰ্দ্দমত। তার ফসলের ক্ষেতের প্রবল প্রতিবাদ করে, হয়. তো একটা মুদ্রাদোষে তাকে পেয়ে বসে, সেইটেকেই সে মনে করে শোভন ও স্বাভাবিক। আত্মীয়সভায় সেটাতে হয় ত বাহবা মেলে, কিন্তু সৰ্ব্বকালের সভায় সেটাতে তার অসন্মান ঘটে । কালের মান রক্ষণ ক'রে চললেই যে কালের যথার্থ প্রতিনিধিত্ব করা হয় এ কথা বলব না। এমন দেখা গেছে, যার। কালের জন্ত সত্য অৰ্ঘ্য এনে দেন, তারা সেই কালের হাত থেকে বিরুদ্ধ আঘাত পেয়েই সত্যকে সপ্রমাণ করেন । আধুনিক যুগে যুরোপের চিত্তাকাশে যে হাওয়ার মেজাজ বদল হয়, আমাদের দেশের হাওয়ায় তারই ঘুণি-আঘাত লাগে। ভিক্টোরিয়া যুগ জুড়ে সে-দিন পর্য্যন্ত ইংলণ্ডে এই মেজাজ প্রায় সমভাবেই ছিল । এই দীর্ঘকালের অধিক সময় সেখানকার সমাজনীতি ও সাহিত্যরীতি একটানা পথে এমনভাবে চ'লেছিল যে, মনে হয়েছিল যে, এ ছাড়া আর গতি নেই। উৎকর্ষের আদর্শ একই কেন্দ্রের চারিদিকে আবৰ্ত্তিত হ’য়ে প্রাগ্রসর উদ্যমকে যেন নিরস্ত ক’রে দিলে । এই কারণে কিছুকাল থেকে সেখানে সমাজে, সাহিত্যকলাহুষ্টিতে একটা অধৈয্যের লক্ষণ দেখা দিয়েছে। সেখানে বিদ্রোহী চিত্ত সব কিছু উলট-পালট করবার জন্য কোমর বঁধিল ; গানেতে ছবিতে দেখা দিল যুগাস্তের তাণ্ডবলীলা ! কী চাই সেটা স্থির হল না, কেবল হাওয়ায় একটা রব উঠল, আর ভাল লাগছে না। যা ক’রে হোক আর-কিছু-একটা ঘটা চাই। যেন সেখানকার ইতিহাসের একটা বিশেষ পৰ্ব্ব মমুর বিধান মানতে চায়নি, পঞ্চাশ পেরিয়ে গেল তবু ছুটি নিতে তার মন ছিল না । মহাকালের উন্মত্ত চরগুলো একটি একটি করে তার অঙ্গনে ক্রমে জুটতে লাগল, ভাবখান এই যে, উৎপাত ক’রে ছুটি নেওয়াবেই । সেদিন তার আর্থিক জমার খাতায় ঐশ্বর্যের অঙ্কপাত নিরবচ্ছিন্ন বেড়ে চলছিল। এই সমৃদ্ধির সঙ্গে শান্তি চিরকালের জন্যে বাধা ; এই ছিল তার বিশ্বাস। নোটা মোটা লোহার সিন্ধুকগুলোকে কোনে কিছুতে নড়চড় ক’রতে পারবে, এ কথা সে ভাবতেই পারেনি ।••• এমন সময় হাওয়ায় এ কী পাগলামি জাগল ! একদিন অকালে হঠাৎ জেগে উঠে সবাই দেখে, লোহার সিন্দুকে সিন্দুকে ভয়ঙ্কর মাথা ঠোকাঠুবি, বহুদিনের স্বরক্ষিত শাস্তি ও পুঞ্জীভূত সম্বল ধুলোয় ধুলোয় ছড়াছড়ি ! নম্পদের জয়তোরণ তলার উপর তলা গেঁথে ইন্দ্রলোকের দিকে চূড় তুলেছিল, সেই ঔদ্ধত্য ধরণীর ভারাকর্ষণ সইতে পারল না, এক মুহূৰ্ত্তে হ’ল ভূমিসাৎ ৷ পুষ্টদেহধারী তুষ্টচিত্ত পুরাতনের ময্যাদা আর রইল না। নুতন যুগ আলুথালুবেশে অত্যন্ত হঠাৎ এসে পড়ল, তাড়াহুড়ে বেঁধে গেল, গোলমাল চলচে ; সাবেক কালের কৰ্বাব্যক্তির ধমূকানি আর কানে পৌছায় না। இ. অস্থায়িত্বের এই ভয়ঙ্কর চেহারা অকস্মাৎ দেখতে পেয়ে কোন কিছুরই স্থায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধা লোকের একেবারে আলগা হ’য়ে গেছে। সমাজে সাহিত্যে কলারচনায় অবাধে নানা প্রকারের অনাস্বষ্টি সুরু হ’ল । কেউ বা ভয় পায়, কেউ বা উৎসাহ দেয়, কেউ বলে--"ভাল মানুষের মত থামে, কেউ বলে---’মরায় হয়ে চলে । এই যুগান্তরের ভাঙচুরের দিনে র্যার মুন্তন কালের নিগুঢ় সত্যটিকে দেখতে পেয়েছেন ও প্রকাশ কারচেন, তারা যে কোথায়, তা এই গোলমালের দিনে কে নিশ্চিত করে বলতে পারে ? কিন্তু এ কথা ঠিক যে, যে-যুগ পঞ্চাশ পেরিয়েও তক্ত আকৃড়ে গদিয়ান হয়ে বসেছিল, নুতনের তাড়া থেয়ে লোটা কম্বল হাতে বনের দিকে সে দৌড় দিয়েছে । সে ভালো কি এ ভালো, সে তর্ক তুলে ফল নেই, আপাততঃ এই কালের শক্তিকে সাধুক করবার উপলক্ষে নানা লোকে, নব নব প্রণালীর প্রবর্তন করতে বসল। সাবেক প্রণালীর সঙ্গে মিল হচ্চে না বলে যার। উদ্বেগ প্রকাশ ক’রচে, তারাও ঐ পঞ্চাশোর্ধের দল, বনের পথ ছাড় চাঁদেয় গতি নেই ।