পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q28 বিশেষ করিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। কণ্ঠদারু—নির্গন্ধ, লঘুতর এবং রুক্ষ । ইহা যেখানে-সেখানে জন্মায় । ৪১ । প্রাক্ষা :-বিনয়ন্তে স্ম তদ্যোধ মধুভিবিজয়শ্রমম্। আস্তীর্ণজিনরত্নাস্ব দ্রাক্ষাবলয়-ভূমিস্ব ॥ র ৪৬৫ প্রাক্ষা চার প্রকারের ; যথা –(১) "দ্রাক্ষা স্বাদুফলা প্রোক্ত তথা মধুরসাপি চ ।” ইহাই grapes, আঙ্গুর বা অঙ্গুর। (২) মুম্বীকা হারহুরা চ গোস্তনী চাপি কীৰ্ত্তিতা । ইহাই ফারসিতে মুনক্কা, raising (Munakha) । (৩) ক্ষুদ্র দ্রাক্ষী বা নিবীজ, ইহাই কীস্মীস inuscatalos । (৪) কপিল দ্রাক্ষা, ইহার উৎপত্তিবোধিক নাম উত্তরপথিক । ইহার হিন্দী নাম কালীদাগ, Black largo grape.” অতি প্রাচীন কাল হইতেই কাশ্মীর দ্রাক্ষার জষ্ঠ প্রসিদ্ধ ; এই জন্ত দ্রাক্ষাকে ‘কাশ্মীরিকা" বলে । এখন কাবুল হইতেই এদেশে প্রচুর আঙ্গুর আসে। দ্রাক্ষ লতাগাছ। দ্রাক্ষার ভাল আসব হয় । প্রাচীন কালেও হইত। চরকসংহিতায় মুম্বীকা, অর্থাৎ মনান্ধীজাতীয় আঙ্গুর হইতে আসব করা হইতে । ৪৩। নবমল্লিক। —কুসুম-সস্থতয়া নবমল্লিক স্মিতরুচা তরুচারুবিলাসিনী ॥ র ৯৪২ অন্ত নাম —ভদ্রবৰ্মা, দেবলতা, গন্ধনিলয়া, গ্রীষ্মভব, সুকুমারী, সুরভি, শুচিমল্লিক, শিখরিণী, নবালী এবং গ্রীষ্মী । এই নবমল্লিকা গ্রীষ্মকালে জন্মায়। কালিদাস ইহাকে বসন্তবর্ণনার মধ্যে ধরিয়াছেন । বসন্তের পরেই গ্রীষ্ম। তার চৈত্র মাসে গ্রীষ্ম বেশ অনুভূত হয় । সুতরাং বসন্তকালে ইহা ফোটা অসম্ভব নয় । শকুন্তলাতে মহাকবি ইহাকে গ্রীষ্মপুষ্প বলিয়াছেন । ৪৪ ৷ নমের ঃ-—গণা নমের-প্রসলাবতংস —কু ১॥৫৫ কালিদাস হিমালয়বর্ণনা-প্রসঙ্গে রঘু ও কুমারে এই লমেরুর উল্লেখ করিয়াছেন। সুতরাং ইহা হিমালয় প্রদেশের গাছ । যদি ইহা রুদ্রাক্ষ বৃক্ষ হয়, তাহা হইলে বৃন্দাবনাদি অন্ত স্থানেও রুদ্রাক্ষ সুক্ষ জন্মায় এবং ফলও হয় । ৪৫ । নারিকেল ;–নারিকেলাসবং যোধা: শাস্ত্রবঞ্চ পপুৰ্যশ ॥৪।৪২ নারিকেল গাছ নোনা মাটিতে জন্মে। খুব মিটেন মাটিতে এ গাছ বাচে না। পশ্চিমদেশে নারিকেল গাছ হয় না এবং এইজম্বাই নারিকেল গাছের গোড়ায় মুন দিতে হয়। খনার বচনে আছে “নারিকেল গাছে মুণ মাটি, শীঘ্র শাস্ত্ৰ বাধে গুটি ।” ৪৬। নবার ঃ-নীবার-পাকদি-কড়ঙ্গরীয়ৈরামৃষ্ঠতে জানপদৈন কচ্চিৎ। র ৫৯ ইহার চাষ হয় না বা কেহ রোপণ করে না। অবস্তে এক প্রকার তৃণ জন্মে, তাহা হইতে স্বতঃই এই ধান জন্মিয় থাকে। পুরাকালে বনবাসী মুনি, তপস্বী প্রভৃতি ইহা দ্বারা প্রাণধারণ করিতেন। এখন ইহা বাংলার উড়ি ধান’ নামে পরিচিত। এখনও ইহার ব্যবহার আছে কি না জানি না। প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড ৪৭। পাটল ৪—মনোজগন্ধং সহকারভঙ্গং পুরাণশীধুং নব-পাটলঞ্চ । র ১৬৫২ বৰ্ত্তমানে সাধারণে ইহাকে “পারুল" বলে। কিন্তু কেহ কেহ ইহাকে দু-পাপড়ির গোলাপও বলিয়া থাকেন। সম্ভবতঃ এই পাটল পুষ্প হইতেই পাটলীপুত্র নাম হইয়া থাকিবে । কালিদাস বসন্তে ও গ্রীষ্মে পাটলের ব্যবহার করিয়াছেন । বসন্তবর্ণনায় নবপাটল বলায় ইহা বসন্তেই প্রথম ফোটে, তাহ জানাইয়।ছেন । ইহা সুগন্ধি ফুল। আর রক্তপাটল বলায় যে পাটলের রং লাল, তাহারই আদর করিয়াছেন, জানা গেল । ৪৮। পারিজাত –তাং পুলোমতনয়ালকোচিতৈ: পারিজাত-কুহমৈ: প্রসাধয়ন। কু ৮২৭ ইহা দেবতর। কালিদাস এই কল্পবৃক্ষেরই বর্ণনা করিয়াছেন । আমরা যাহাকে পারিজাত নাম দিয়াছি, তাহ পালুতে মাদার । হিন্দিতে ইহাকে ফরহদ বা পনুগ্র বলে । ইহাই Coral troo । ৪৯। পুগ –ততে বেলাতটেনৈব ফলবৎ পূৰ্গমালিন । র ৪৪৪ দেশভেদে নাম ঃ—বা —সুপারী । কুপারির গাছ বাংলায় অতি প্রসিদ্ধ । ৫• । পুস্লাগ –গৰ্জুরী-স্কন্ধনৰ্দ্ধানাং মাদাগার-মুগন্ধিযু। কটেযু করিণাং পেতুঃ পুন্নাগেভঃ শিলীমুখাঃ । - র ৪}৫৭ পুন্নাগ বাংলার গাছ নহে। উড়িয়ায় ইহা প্রচুর জন্মে। দক্ষিণ প্রদেশেই ইহার ফুল ভাল হয় এবং বড় বড় হয়। কালিদাস কেরলে পুন্নাগ দেখিয়া বর্ণনা করিয়াছেন । ৫১। প্রিয়স্কু —ষ্ঠামালতাঃ কুসুমস্তারনতপ্রবালাঃ---ঋ ৩১৮ প্রিয়ে প্রিয়সুঃ পিয়বিপ্রযুক্ত—ঞ্চ ৪।১০ দেশভেদে নাম। বা :-প্রিয়ঙ্গু, গন্ধপ্রিয়ঙ্গু বা খাম । এই খামালতী লইয়া বড় গোল আছে। রমণীগণ প্রিয়সু অনুলেপনার্থ ব্যবহার করিতেন । মহাকবি এই প্রিয়ঙ্গু, ফলিনী বা স্যামলতাকে কি কি ভাবে ব্যবহার করিয়াছেন দেখিলে অনেকটা উপলব্ধি হইবে । তিনি ইহার লতাকে হাতের সঙ্গে তুলনা করিয়াছেন। স্ত্রীলোকের হাতের ললিত ভঙ্গীর সহিত ইহার লতানে ভাবের সাদৃষ্ঠ দেখাইয়াছেন । শীতকালে ইহা মলিন হইয়। যাইতেছে অর্থাৎ মরিয়া যাইতেছে । ইহা চন্দন প্রভৃতির সঙ্গে বাটিয়া স্তনে মাথা হইত। ৫২। প্রিয়াল :-মৃগাঃ প্রিয়াল-দম-মঞ্জরীণাং-কু ৩৩১ দেশভেদে নাম । বা ঃ–পিয়াল । কালিদাস হিমালয়ের এক প্রদেশের * বর্ণনায় এই বুক্ষের নাম করিয়াছেন। তার বসন্ত-বর্ণনার মধ্যে ইহার ফুলফোটার কথা বলিয়া ইহাকে বসন্তপুপ নির্দেশ করিয়াছেন । ( প্রকৃতি, হেমন্ত সংখ্যা ) , শ্ৰীগণপতি সরকার