পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سراہ سb উষালোককে আমাদের মঙ্গল আরতি করিয়া বরণ করিয়া লইতে হইবে । দীর্ঘ রজনীর গভীর ও তন্দ্রামগ্নতাযু নিমগ্ন থাকিয় যে নিবিড় অলিস্তে আমরা আমাদের অভিভূত করিয়া রাখিয়াছি, সেই সৰ্ব্বনাশী বিলাসশয্যা আজও যদি আমরা ন ছাড়ি, তদস্থথে এ সময়ে ও যদি বিহ্বল হইয়া থাকিয় এত বড় সুযোগকেও আমাদের সম্মুখ হইতে প্রত্যাখ্যাত হইতে দিই, দুর্য্যোগ সম্পূর্ণরূপেই আমাদের আশ। সূৰ্য্যকে গ্রাস করিবে, উদয়ের উদ্দীপ্ত ভাস্কর চিররাহু গ্রস্ত হইয়া যাইবে । সকল দেশে, সকল যুগে, সকল সময়েই যে-কোন মহৎ কাৰ্য্য মহং ত্যাগ ব্যতীত সম্পন্ন হয় নাই। উদ্দেশু যত বড় হয়, উদ্যোগ ততই বৃহৎ হওয়া আবশ্বক, ত্যাগ ততই কঠিন হওয়া প্রয়োজন। নর এবং নারী লইয়া সমগ্র সমাজ, সমস্ত জগৎ । এখানে নরের সহিত নারীশক্তি না মিলিলে সৃষ্টি হইতে পারে না। যেমন জীবন্তজনে তেমনি জাতি সৃষ্টিতে সৰ্ব্বত্রেই নারীশক্তির মরশক্তির সহিত সংমিশ্রণ একান্তরূপে প্রয়োজনীয়। ব্ৰহ্ম যপন এক অদ্বিতীয়, কষ্টি তখন লয়প্রাপ্ত। প্রকৃতির সহায়তা ব্যতীত পরমেশ্বরও শক্তিহীন, শিব শবে পরিণত । অস্থরজয় কখন সম্ভব হইয়াছিল ? যেদিনে মুররাজের কঠোর তপস্যায় প্রসন্ন৷ মহাশক্তি র্তাহার সহায়তায় স্বীকৃত হইয়া সমরাঙ্গণে অবর্তীর্ণ হইয়াছিলেন। সেই অমুরনাশিনী মহাশক্তি নারীশক্তি । স্বিয়ঃ সমস্ত সকল জগৎসু । জগতের সমস্ত নারীর মধ্যেই সেই সুরবর-বন্দিত মহাশক্তির অংশ নিহিত আছে । এই শক্তিসমষ্টি কেন্দ্রীভত হইলে ইহা হইতে আজও অসাধ্য সাধন কেন না হইতে পারিবে ? “কোমল কুসুমে বিধি গড়েছে রমণী হৃদি, তাতেও নিহিত আছে কঠোর পাষাণ, সহে ন সতীর প্রাণে পতি অপমান ।” আজ ঘরে ঘরে পতিপুত্রের অবমাননার সীমা পরিসীম। নাই, ধিক্কারে সমস্ত সভ্য জগৎ পরিপূর্ণ, এতেও কি আমাদের দেশের সতীচিত্ত বিচলিত হইবে না ? নারীর আজ সহধৰ্ম্মিণী, সহকষ্মিণী, সহযাত্ৰিণী হইয়া প্রবাসী—অশ্বিন, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১মখণ্ড পুরুষের অবমাননার প্রতিকার প্রচেষ্টাকে, সফলতায় পরিণত করিয়া তুলিতে হইবে, তবেই তিনি যথার্থ সহধৰ্ম্মিণী নামের যোগ্যতা অর্জন করিতে পারিবেন, সতী বলিয়া সম্পূজিত হইবেন । যেদিন ভারতীয় পুরুষের শৌর্য্যবীৰ্য্য জগতের শীর্ষস্থানীয় ছিল, সেদিন ভারতীয়া নারী বীরনারী নামে পরিচিত ছিলেন । অৰ্জ্জুনের পাশ্বেই স্বভদ্রার সম্ভব হইয়াছিল, পৃথ্বীরাজের সহিত সংযুক্তার সংযোগ ঘটিয়াছিল । আবার ভারতীয় পুরুষের কৰ্ম্মোদ্যম দেখা দিয়াছে, ভারতীয় নারী আজ কায়ুমনোবাক্যে র্তার পাশ্বচারিণী ন হইলে ভারত-সতীর মর্য্যাদাহানি হইবে । আমাদের বিবাহমস্ত্রে আমরা যে তাদের সহিত একমন, একপ্রাণ, একচিত্ত হইতে চির আচপল ধ্রুবতার। সাক্ষ্যে কঠোর শপথ লইয়াছি । আজ সে প্রতিজ্ঞ ভুলিলে ত চলিবে না। ভারতনারীর এই এক প্রাণত যুগে যুগেই রক্ষিত হইয়াছিল। তার দীর্ঘ অবনতির যুগেও এই নীতি গ্ৰতিপালিত হইয়া আসিয়াছে । আজ জীবন-যুদ্ধে তার যদি নেতৃত্ব করিতে আসিয়া থাকেন আমরা ও কারমনে র্তাদের পাশ্বচারিণী ন হইব কেন ? “ছায়। যেমন স্বর্যাকে অনুসরণ করেন, তোমরাও তেমনই পতির অল্পসারিণী হইবে,” শাস্ত্রের এই উপদেশ । আর দুহিত, ভগিনী, জননিগণ ! আপনাদের কৰ্ত্তব্য আপনাদের পিত ভ্ৰাত সন্তানের কৰ্ত্তব্যের সহিত সংযুক্ত । একবার সেই জাপানী মায়ের কথা আপনার স্মরণ করুন। অক্ষম বৃদ্ধ মাতার প্রতিপালক বলিয়া পুত্ৰ স্বদেশরক্ষাকল্পে যোদ্ধা রূপে গৃহীত ন হইলে যে, ম; নিজে আত্মঘাতিনী হইয় পুত্রকে সমরাঙ্গণে যাত্রার পথ মুক্ত করিয়া দিয়াছিলেন । তারপর আর এক কথা, এবং এই কথাই আজিকার প্রধান কথা, আমাদের এ যুদ্ধ হাতে হাতিয়ারে নয়। এই জীবন-মরণের প্রবল সংগ্রাম বিপুল। এই অভিযান নিরস্ত্র জাতির নিরস্ত্র সংগ্রাম জগতের কোন দেশের কোন ইতিহাসেই এত বং অসমসাহসিকতার যুদ্ধযাত্রা আর কখনও দেখা যাঃ নাই ! এ প্রচেষ্টা সম্পূর্ণই অভিনব, এবং অদ্ভুত। সমৰ্থ