পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bᏉ Ꮌ o মানুষকে পুথিবীতে জন্মিয় অনেকগুলি ঋণে ঋণী হইতে হয়। ঐ সকল ঋণের মধ্যে দেশঋণ একটি প্রধান ঋণ । অন্য সকল ঋণ নিজের এবং নিজ পরিবারের উন্নতিকল্পেই পর্যবসিত, কিন্তু দেশঋণেই একমাত্র নিঃস্বার্থ ও নিষ্কাম কম্মের উপায় নিহিত আছে । দেশের প্রত্যেক লোকের উন্নতিলাভের সহায়ত করিয়াই এ ঋণ শোধ করিতে হয়, এইজন্যই আমাদের সকল ঋণের মধ্যেই এই দেশঋণই সৰ্ব্বাপেক্ষা কঠিনতম ঋণ ও কৃচ্ছসাধ্য ব্রত। এপণ যে পরিশোধ করিতে পারিয়াছে, ইহ-পরলোকে তার আর কোন কঠিন ব্রত পালনের আগবশু)কত নাই । এমন কঠোর ব্রত আমার চিরকল্যাণ স্বদেশবাসিনীরা কায়মনে পালন করিবেন কি ? এ ব্রত গ্রহণে ও পালনে দুঃখ আছে বই কি, নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু অমঙ্গল মঙ্গলের পথ নির্দেশ করিয়া দেয়। আমাদের মধ্যের গুiদশ স্তী-সাবিত্রী । সেই সাবিত্রী শুধুই আমাদের কাছে সত্ৰ , ই আদর্শনারী নহেন, পরস্তু সকল বিষয়েই তার স্বাদশ আমাদের নিকট পূর্ণ। তিনি র্তার পতিগ্রহণের পূর্বব হইতেই জানিতেন তাহার সেই প্রিয়তম পতি অন্নজীবী । এই এত-বড় বিপদের নিশ্চিত বাৰ্ত্ত| পাইয়া ৪ তিনি বিন্দুমাত্র ভীত হন নাই । তিনি বিপদকে বরণ করিয়াই পতিবরণ করিলেন । এইখানেই সাধারণ নারীর সহিত র্তাহার একা স্তভাবে প্রভেদ দেখা দিল । তার পর প্রতীক্ষিত কাল আসিল, ধৈয্যশীল সতী র্তার অষ্টি ধৈৰ্য্যসহকারে সকল কত্তব্য সম্পাদন করিয়া ধাইতে লাগিলেন। কোথাও কোন ত্রুটিবিচ্যতি নাই । পতির সহকারিণীরূপে দুৰ্গম অরণ্যপথে গমনকালে ও একবার তার মুণে আমরা পতিকায্যের ব্যাঘাতক উদ্বেগক দুৰ্ব্বলতা দেখিতে পাই না । প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড ইংরেজীতে একট প্রবাদ অাছে—* There are remcdics for all things but death”—fFğ Rziকালও এই অসমসাহসিকা মহাপ্রাণ। মহীয়সী মহিলার অনতিক্রম পুণ্যপ্রভাবকে অতিক্রম করিতে সমর্থ হইলেন না। দৃঢ়ব্ৰতা অনন্তচিত্ত সাধিকার একাস্থ সাধনায় কালচক্রের অভিভব হইয় গেল, সাবিত্রী জয়যুক্ত হইলেন । হে নবীন ভারতের সর্তী সাবিত্ৰীগণ ! আপনারাও আজ। আপনাদের অপরাজেয় পুণ্যবলযুক্ত দৃঢ়চিত্ততার বলে অন্ধ শ্বশুরকে চক্ষুষ্মান করিতে থাকুন, অপঙ্গত সাম্রাজ্যের পুনরুদ্ধার করিয়া লউন, কুপুত্ৰক অ-পুত্ৰক পিতৃগণকে স্বপুত্র গঠনে পুত্রযুক্ত কবিয়া তুলুন, মুতপতিকে জীবন্ত করুন। বিশুদ্ধচরিত্রতার দীপ্তিতে দীপ্তিমতী দেবী সাবিত্রী মূখন কাল-সাক্ষাতেও নিভীক অটল থাকিয় আপনার প্রত্যেক কৰ্ত্তবটি পালন করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, আপনারাই বা পারবেন না কেন ? আমাদের দেশের মেয়েদের মধ্যে সাবিত্রী ব্রতই সবচেয়ে প্রধান এবং সৰ্ব্বাপেক্ষ কঠোর ব্রত। আমাদের এ দিনের সাবিত্রীরতের বিধি পরিবণ্ডিত হইয়াছে, আজ ঘরে বসিয়াই শুধু সাবিত্রী ব্রত পালন চলিবে না, সত্যবানের সহিত সাবিত্রীকে আজ পথে পথে, গ্রামে গ্রামে ভ্ৰমণ করিতে হইবে। তবেই আবার ভারতে অন্ধ দৃষ্টি লাভ করিবে, অপুত্রক পুত্র লাভে ধন্য হইবে, মৃত জড় পুনরুজ্জীবিত হইয় উঠিয়া ভ্ৰষ্ট রাজ্যের রাজদণ্ড ধারণ করিতে সমর্থ হইবে। শত শত সন্তানের উচ্চারিত “জয় মা !” রবে গগন পবন মুখরিত হইয়| উঠিবে। ইহাই এ যুগের সাবিত্রী ব্রতের মূল তত্ত্ব । * কোন এক নারী সমিতিতে পঠিত ।