পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জৈনধৰ্ম্ম তার্য্যপট রাখালদ{স বন্দোপাধ্যায় অনেক দিন পুৰ্ব্বে ইংরেজ-রাজ্যের প্রারম্ভে যখন ইউরোপীয় পণ্ডিতের ভারতবর্মের সংস্কৃত, পলি বা প্রাকৃত সাহিত্য পড়িতে আরম্ভ করিলেন, তপন সৰ্ব্বপ্রথমে পালি ভাষায় লিখিত বৌদ্ধসাহিত্য র্তাহীদের নজরে পড়িল । তাহারা প্রথমে ধাহ! শুনিলেন তাহাই ধ্রুবসত্য বলিয়া মানিয়া লইলেন । সিংহলে ৪ খামদেশে বৌদ্ধের তাহাদের শুনাইলেন যে, বৌদ্ধধৰ্ম্ম সকল ধৰ্ম্মের মধ্যে প্রাচীন । গৌতম বুদ্ধ যখন জীবিত ছিলেন তখন নিগ্ৰস্থ জ্ঞাতপুত্ৰ নামক একজন শিক্ষক জৈনধৰ্ম্ম প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন । গৌতমের পূৰ্ব্বে আবার সাতজন বুদ্ধ ছিলেন । সুতরাং বৌদ্ধধৰ্ম্ম জৈন ধৰ্ম্মাপেক্ষ অনেক পুরাতন । বৌদ্ধমূৰ্ত্তি এবং জৈনমূৰ্ত্তিতে এতটা মিল আছে যে, প্রথম প্রথম পাশ্চাত্য পণ্ডিতের জৈনমূৰ্ত্তিকে বৌদ্ধমূৰ্বির একটা শাখ বলিয়াই মানিয়া লইতে বাধ্য হইতেন। গত দেড়শত দুইশত বৎসরের মধ্যে জৈনধৰ্ম্মের প্রকৃত ইতিহাস প্রকাশ পাইয়াছে । এখন আমরা জানিতে পারিতেছি, বৌদ্ধধৰ্ম্মের তুলনায় জৈনধৰ্ম্ম কত পুরাতন, অতি প্রাচীনকালে বৌদ্ধধৰ্ম্ম গড়িয়া উঠিবার সময় জৈনধৰ্ম্মের আকার কিরূপ ছিল, এবং গত আড়াই হাজার বংসর ধরিয়া তাহ! কি ভাবে গড়িয়া উঠিয়াছে । জৈনধৰ্ম্ম তথম অতীব রক্ষণশীল । ইহাতে পরিবর্তনের লক্ষণ অতি অল্প, সুতরাং বিদেশীয় জাতি অথবা নুতন জাতি ইহাতে অতি অল্পই আশ্রয় পাইয়া থাকে তথাপি জৈনধৰ্ম্ম ক্ষত্রিয়ের ধৰ্ম্ম এবং ব্রাহ্মণ-বিদ্বেষী । কেবল রক্ষণশীলতার জন্য ভারতবর্ণের ধম্মের সংগ্রামে জৈনধৰ্ম্ম আড়াই হাজার বৎসর রক্ষা পাইয়া আসিয়াছে । এই আড়াই হাজার বৎসরের মধ্যে পার্শী, গ্ৰীক্ বা যবন, শক, দশান, তৃণ, গুজ্জর, রাজপুত, আরব, তাজিক প্রভৃতি শত “ত বিদেশীয় জাতি ভারতবর্য আক্রমণ করিয়া এদেশে বসতি করিয়াছে, আপনাদের পুরাতন ধৰ্ম্ম পরিত্যাগ করিয়া হিন্দু অথবা বৌদ্ধধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়াছে এবং ভারতবর্ষের লোক হইয়। গিয়াছে । আজ তাহদের মধ্যে খুজিয়ী আদিম ভারতবাসী আস অথবা অনাৰ্য্য স্থির করা বড়ই কঠিন । কিন্তু এ বিষয়ে স্থির মীমাংস ক্রমশঃ ভারতবসের ইতিহাসের পক্ষে আবশ্ব ক হইয়া উঠিতেছে । দুই-একজন পণ্ডিত ক্ৰমশঃ বুঝিতেছেন যে, ভারতবর্ষে দত ধৰ্ম্ম জন্মগ্রহণ করিয়াছে, জৈনধৰ্ম্ম গ্ৰহর মধ্যে সৰ্ব্ব প্রাচীন না হইলেও, ভারতের একটি অতি প্রাচীন পৰ্ম্ম । আমাদের বৈদিক আৰ্য্যধৰ্ম্ম ইঙ্গর তুলনায় বয়সে অতি শিশু, পৰ্ম্মভাবে অতি নবীন এবং বৈদিক পৰ্ম্মের দর্শন নাই বলিলেই চলে। শঙ্কর প্রভূতি আয্যদর্শনবাদীর জৈন দর্শনবাদীদের তুলনায়ু নবীন। যীশুখৃষ্ট জখিাবার প্রায় হাজার বংসর পূৰ্ব্বে জৈনধৰ্ম্ম স্থ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল । জৈন দার্শনিকের তখনই বুঝিয়াছিলেন যে, কোন ও দুষ্ট জন মাতুমষ্ট জগতে সমান হইয়। জন্মে নাই, মানসিক শক্তির বৈষম্যে মানুষ মানুষকে জয় করে এবং মানসিক শক্তির বৈষম্যেই মানুষ দেবত্বের অধিকারা হয় । বিবেক-শক্তির অতি-বুদ্ধিলাভেই মাতুষে মাতৃয়ে প্রভেদ জন্মায় । জৈনধৰ্ম্মের মূল গুরু চব্বিশ জন, মাতুয় এবং কেহই ব্রাহ্মণবংশজাত গুরুপদ এতদিন তাহার। সকলেই নহেন । বেদ কৰ| ব্রাহ্মণ যে বংশজাত ভারতবলে দাবী করিয়া আসিয়াছেন এইরূপে জৈন গুরুগণ সৰ্ব্বপ্রথমে তাহার প্রকাশ্ন প্রতিবাদ করিয়াছিলেন । দেববংশজাত উপাস্ত দেবত সষ্টির বিরুদ্ধে জৈনগুরুরাই প্রথমে আপত্তি করিয়াছিলেন । পরবত্তী জৈনধৰ্ম্মে গন্ধৰ্ব্ব, অপার, যক্ষ, কিন্নর, রাক্ষস প্রভৃতি অৰ্দ্ধদেব ও কিম্পরুষ জাতীয় স্বত্বগণ প্রভূত পরিমাণে প্রবেশ করিয়াছিল, কিন্তু জৈনগণের প্রধান উপাস্য দেবতা মাতুষ। চব্বিশ জন তীর্থঙ্কর,