পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা l ૨ কিউলে গাড়ী থামিলে হঠাৎ একটু বড়মান্তর্ষী করিয়া কেলনারের হোটেল হইতে “খান” সারিয়া আসিবার ইচ্ছাটা বলবতী হইয়া উঠিল । কেন, তাহা ঠিক বলিতে পারি না। তবে নিজেকে যেন আজ রাত্রে ইতরসাধারণের অপেক্ষ বিশিষ্ট বলিয়া মনে হইতে লাগিল । নীচেকার রাস্ত দিয়া ওপ্ল্যাটফরমে গিয়া উঠিলাম, সদৰ্পে হোটেলের সামনে পর্য্যন্তও গেলাম, তাহার পর ভিতরে ভোজনরত লালমুখের ভিড় দেখিয় আস্তে আস্তে, শিস দিতে দিতে ফিরিয়া আসিলাম । প্ল্যাটফরমের ভেণ্ডরের নিকট একপেয়ালা চা পান করিয়া কেলনারের সখ মেটান গেল। তাহার পর ইতরসাধারণের মত কিঞ্চিং পুরি ও মিষ্টান্ন সংগ্ৰহ করিয়া গাড়ীতে আসিয়া উঠিলাম। সব মিলিয়। একট বিলম্ব হইয়। গিয়াছিল । আসিয়া দেখি ব্যাপার গুরুতর । আমার সঙ্গিনী গাড়ীর" কোণে বঙ্গের একটি পুটলি বিশেষ হইয়া ক্ৰন্দনরতা। সামনে দুইজন পুরুষ এবং একটি স্ত্রীলোক টিকিট কালেক্টার । মেম বলিতেছে—“জলদি বোলো, নেহিতে উতার দেঙ্গি, আভি গাড়ী খুলতি হ্যায় ; টিকিট অপানে পাস কেঁউ নহি রথি ?” একজন টিকিট কালেক্টার ফিরিঙ্গি । হাত ঘুরাইয়া রিষ্টওয়াচটা দেখিয়া ইংরাজিতে বলিল—“আচ্ছা ফেসাদে পড়া গেল তো,—সময় যে হয়ে এল. ” অপরটি হিন্দুস্থানী, বলিল—“আপনি কি বাঙ্গালীন আছে ? কোন ভাখায় কোথা বলতে পারেন ? আমাদের তিনজোনারহি বোলি সোমঝাতে পারছেন নf ? আমায় উহার কেহ দেখিতে পায় নাই, এদিকে পিছন ফিরিয়া ছিল। বুঝিলাম সঙ্গিনী টিকিটহীনাও ! যাহোক, ভাবিবার সময় ছিল না, যেন এইমাত্র চুকিয়াছি, এইভাবে বলিলাম—“একি! কি ব্যাপার মেমসাহেব ?” আমার দিকে চাহিয়া একসঙ্গে ফিরিঙ্গি ইংরাজিতে, اه لإكسد و ه لا একরাত্রি b-84 মেমসাহেব হিন্দীতে ব্যাপারটা বুঝাইতে মুরু করিয়া দিল । বেহারীটি তাড়াতাড়ি বারণস্বরূপ হাতদুখান৷ তাহাদের মুখের কাছে ধরিয়া বলিল “সব বাঙ্গালী মাসা হিন্দী, ইংলিশ নেহি জানত। I am understanding hin in Bengali:::::: এই অা ওরাৎ লোকটির সাথমে’ আমি তাহার বাংলার স্রোতে বাধা দিয়া শুদ্ধ হিন্দিতে বলিলাম—“বুঝেছি , তা মেয়েছেলেদের টিকিট প্রায়ই তাদের অভিভাবকদের কাছে থাকে, এটা বুঝে আপনারা একটু অপেক্ষা করতে পারতেন। এই নি, তবে ব্যাপার এই ষে আর একখানা, অর্থাৎ এক হিসেবে আমার টিকিটখানা আপনাদের দেখাতে পারলাম না। দুইতিন জায়গায় দাম চুকাইবার জন্য ব্যাগ খুলিতে একখানা কোথায় পড়ে গেছে—সেই খোজেই এতটা দেরিও হয়ে গেল ।..... মোতিহারি থেকে বৰ্দ্ধমান—এই টিকিট দেখলেই বুঝতে পারবেন, —কত দিতে হবে ?" আমার নূতন ওয়ার্ডের পানে একবার চাহিলাম। so ঘোমটাটান। মুখটা এদিকে ফিরান রহিয়াছে। ঘোমটার পাশের কাপড়টা ঘুরাইয়া মুখের নিম্নভাগটা চাপিয়া আছেন ; ঠিক চক্ষু দুইটির পরিমাণে সামান্য একটু অবকাশ। চক্ষু দেখা যায় ন,- বোধ হয় কাল চোখের দীর্ঘ পল্লবে ঘোমটার ছায়াটা আরও নিবিড় করিয়া দিয়া থাকিবে । কিন্তু নাই দেখি, বেশ অনুভব করিতেছিলাম-ছুটি ডাগর চোখের স্নিগ্ধদৃষ্টি আমার সমস্ত শরীরে প্রসন্নতা বর্ষণ করিতেছে। সারা দেহে রোমাঞ্চ দিয়া ऎछठेिल । ভাবিলাম, কৃপণের মত এই অতিসংযত দান, কিন্তু এটুকুরই জন্য কি-ই না দেওয়া যায়—কি-ই না করা যায়—এই প্রসাদ-কণিকার জন্য নিজের সমস্ত দেওয়াকরাকে কতই না তুচ্ছ বলিয়া মনে হয়... . আমি শুদ্ধ হিন্দী বলিতে পারি, বোধ হয় সেই অপরাধে বেহারী টিকেট কালেক্টারটি জরিমানার জন্য জিদ করিলেও, ফিরিঙ্গি মোতিহারি হইতে বৰ্দ্ধমান পত্তি, নিছক ভাড়া লইয়াই ছাড়িয়া দিল। দলটা নামিয়া গেলে